হাথরাসে ‘ভারত কী বেটি’র সুবিচারের দাবিতে তুমুল প্রতিবাদ রাজধানীতে

হাথরাসে ‘ভারত কী বেটি’র সুবিচারের দাবিতে তুমুল প্রতিবাদ রাজধানীতে

নয়াদিল্লি: র্ভয়ার বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ প্রতিবাদের স্মৃতি উস্কে দিল রাজধানী দিল্লির প্রতিবাদ। হত্রাশে নির্যাতিতার ধর্ষণ এবং খুনের প্রতিবাদে উত্তাল হল রাজধানী দিল্লি। নাগরিক মঞ্চের বিক্ষোভে যোগ দিয়ে দোষীদের শাস্তির দাবি জানাল বিভিন্ন সংগঠন।

উত্তরপ্রদেশ দেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ রাজ্য। শ্রীকৃষ্ণের লীলাভূমি মথুরা থেকে মাত্র ৪৬ কিলোমিটার দূরে হত্রাশে গণধর্ষণ, খুন এবং সর্বপরি গোপনে মৃতদেহ পুড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগে উত্তাল গোটা দেশ। নির্ভয়া কাণ্ডের আসামীদের ফাঁসি হয়েছে এখনও একবছর হয়নি। এরই মধ্যে ৮ বছর আগের সেই দগদগে ঘা যেন আবার মাথা চাড়া দিয়ে উঠল। আবারও এক ‘ভারত কী বেটি’র ন্যায়বিচারের দাবিতে গর্জে উঠল দেশবাসী। 
 

শুরুটা হয়েছিল বৃহস্পতিবার বিকেলে। সেদিন রাহুল গান্ধিসহ কংগ্রেস প্রতিনিধি দলকে আটকে দেওয়া হয়। শনিবার সকালে নির্যাতিতার পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে যাওয়ার সময় মৃতার বাড়ি থেকে ১.৫ কিলোমিটার দূরে আটকে দেওয়া হয় ডেরেক ও ব্রায়েনের নেতৃত্বাধীন তৃণমূল প্রতিনিধি দলকে। শনিবার বিকেল নয়া দিল্লির ইন্ডিয়া গেটে নাগরিক প্রতিবাদ বিক্ষোভের আয়োজন করা হয়। পরে ইন্ডিয়া গেট চত্বরে জারি করা হয় ১৪৪ ধারা। ইন্ডিয়া গেট যাওয়ার সব রাস্তা বন্ধ করে দেওয়া হয়। তবে যন্তরমন্তরে বিক্ষোভের অনুমতি দেওয়া হয়। যন্তরমন্তর চত্বরে ছোট ছোট ভাগে ভাগ হয়ে বিক্ষোভ শুরু করে বিভিন্ন সংগঠন।

জনপ্লাবন আছড়ে পড়ে রাজধানীর অন্যতম এই জায়গায়। বিভিন্ন বাম সংঘটন এর তরফে ব্যাপক প্রতিবাদ বিক্ষোভ শুরু হয়। সবার দাবি একটাই, শাস্তি দিতে হবে অপরাধীদের। এদিনের বিক্ষোভে যোগদান করেন সিপিআইএম নেতা সীতারাম ইয়েচুরি, বৃন্দা করাত, সিপিআই নেতা ডি  রাজা। পরে ঘটনাস্থলে যান দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালও। এদিনের সমাবেশে হাজির হয়ে দোষীদের ফাঁসির দাবি করেন তিনি। ঘটনার তীব্র নিন্দা করে শাস্তির দাবি জানান সীতারাম ইয়েচুরি থেকে শুরু করে বৃন্দা করাত, ডি  রাজার মত বাম নেতারা।

বিক্ষোভে যোগদান করে ভিম সেনা। সংগঠনের প্রধান চন্দ্রশেখর আজাদ হত্রাশের ঘটনায় প্রধানমন্ত্রীর নীরবতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। পাশাপাশি তিনি সেখানে যাবেন বলেও ঘোষণা করেন। মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ পদত্যাগ না করা পর্যন্ত এবং অপরাধীদের শাস্তি না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা করেন। কোনরকম ভিড় যাতে না বাড়ে সেজন্য জনপথ মেট্রো বন্ধ করে দেওয়া হয়। রাস্তায় নামানো হয়েছে ব্যাপক পুলিশবাহিনী। একদিকে নিরাপত্তা এবং অন্যদিকে বিক্ষোভ, সব মিলিয়ে ক্ষোভের আগুনে ফুঁসছে রাজধানী দিল্লি।

দিল্লির বাল্মীকি মন্দিরে নির্যাতিতার বিচারের দাবিতে প্ৰার্থনা হয়।  সেখানে ছুটে যান, কংগ্রেস নেত্রী প্রিয়াঙ্কা গান্ধি। দিল্লির বিক্ষোভের আঁচ এসে পড়েছে বাংলাতেও। আসানসোলে গান্ধিমূর্তির পাদদেশ থেকে রবীন্দ্রভবন পর্যন্ত মশাল মিছিল করে পড়ুয়াদের একটি সংগঠন। তাতে যোগদান করেন সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষ। বিক্ষোভ শ্লোগানের মধ্যে দিয়ে হত্রাশে নির্যাতিতার সুবিচারের দাবি জানানো হয়। ধর্ষণ ও নির্যাতিতার দেহ পুড়িয়ে ফেলার ঘটনায় ইতিমধ্যেই পাঁচজন পুলিশ আধিকারিককে সাসপেন্ড করেছে উত্তরপ্রদেশ সরকার। তাদের মধ্যে রয়েছেন হত্রাশের পুলিশ সুপার,  ডেপুটি পুলিশ সুপার এবং থানার ওসি পর্যায়ের আধিকারিক।
 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

1 × one =