খড়্গপুর: কডাউনের আগেই বিয়ে করে সংসার সাজানোর স্বপ্ন দেখেছিলেন ওরা দুজনে। ভিনরাজ্য থেকে এরাজ্যের খড়গপুরের নিমপুরায় কাজের যোগে এসে পৌঁছান। স্বামী আগে থেকেই কাজ করতেন খড়গপুরে, বিয়ের পর স্ত্রীও কাজ পান। সুন্দর এগোচ্ছিল জীবন। কিন্তু হঠাৎ করেই মূর্তিমান অভিশাপের মত করোনা এবং তার সঙ্গে সঙ্গে লকডাউন এসে সব স্বপ্ন ধূলিস্যাৎ করে দিল।
মুহূর্তে গুঁড়িয়ে গেল দুটি তাজা প্রাণের বেঁচে থাকার, সামান্য জীবনধারণের আশা আকাঙ্খা। কাজ করে সংসার গুছিয়ে সেই সংসারে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করার স্বপ্ন স্বপ্নই থেকে গেলো। ভিনরাজ্যে থেকে কাজ করার সঙ্গে সঙ্গে নিজেদের স্বচ্ছল জীবনের যেটুকু আশা ওরা করেছিলেন সেই আশার কোনও অবকাশ রইল না। কাজ হারালেন দুজনেই। কোনরকমে কায়ক্লেশে জমানো পুঁজি ভেঙে ভেঙে দিন যাওবা চলছিল। সব নিঃশেষ হওয়ার পর আর কোনও আশা না দেখে শেষ পর্যন্ত মৃত্যুকেই বেছে নিলেন ওরা।
পেটের ভাত জোগাতে না পেরে বিষ খেয়ে আত্মহত্যা করলেন দম্পতি। খড়্গপুর টাউন থানা এলাকার নিমাপুরায় আজ স্বামী স্ত্রীর দেহ পড়ে থাকতে দেখেন স্থানীয় বাসিন্দারা। এলাকাবাসী জানিয়েছেন লকডাউনের আগে অন্ধ্রপ্রদেশে গিয়ে বিয়ে করেন তারা। নিজের রাজ্য থেকে ফেরার পরপরই টতাদের দুজনের কাজ যায়। তারা আরও জানিয়েছেন দীর্ঘদিন কাজ না থাকায় চরম অনটনে আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছে ওই দম্পতি। করোনার জেরে টানা লকডাউনে এভাবেই বহু ভাগ্যবিড়ম্বিত মানুষ প্রাণ হারাচ্ছেন।
বিরোধীদের দাবি, সরকারের তরফে পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য বিভিন্ন রকমের প্রকল্প ও কর্মসূচির কথা বলা হলেও প্রয়োজনে যে সেসব কোনও কাজেই আসছে না তার জ্বলন্ত প্রমাণ এই ঘঠনা। স্থানীয়রা মনে করছে খিদের জ্বালা সেই সঙ্গে কর্মহীন হয়ে মানসিক যন্ত্রণায় দুজনে বিষ খেয়ে আত্মঘাতী হয়েছেন। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে দেহ দুটি উদ্ধার করে। তবে সেগুলি কীভাবে পরিজনদের হাতে তুলে দেওয়া হবে তা নিয়ে কিছুই জানানো হয়নি। ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।