কলকাতা: চারদিকে হাততালি, টানেলের জন্য নির্ধারিত অ্রংশটুকু কাটতে কাটতে শিয়ালদহের ভূগর্ভস্থ মেট্রো পথে ঢুকে পড়ল উর্বী। ইস্ট ওয়েস্ট মেট্রোর টানেল বোরিং মেশিন। হাওড়া শিয়ালদহ সংযোগকারী টানেলের এই ব্রেক থ্রু এখন পরিচিত খবর। কিন্তু এর পিছনে টানা ২১ মাসের এক দীর্ঘ লড়াইয়ের গল্প রয়েছে। ২০১৯ সালের জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি মাসে এসপ্ল্যানেডের ভূগর্ভস্থ স্টেশন থেকে নীচে নামিয়ে দেওয়া হয় দুটি টানেল বোরিং মেশিন চণ্ডী এবং উর্বীকে। সেই থেকে কাজ শুরু করে তারা। সঙ্গে ছিলেন সুড়ঙ্গ নির্মাণের দায়িত্বে থাকা বহুজাতিক সংস্থা আইটিডি আইটিডি সেমের কর্মীরা। ২০১৯ সালেরই অগাস্ট মাসে ঘটে বিপত্তি। বউবাজার এলাকায় সুড়ঙ্গে নামে ধস।
ধসের কবলে পরে একের পর এক বাড়ি বসে যেতে থাকে বউবাজারে। মাটির তলায় চাপা পড়ে যায় টানেল বোরিং মেশিন চণ্ডী। ঘটনা আদালত পর্যন্ত গড়ায়। সাময়িক বন্ধ হয়ে যায় কাজ। দেশের বাইরে থেকে বিশেষজ্ঞ আনিয়ে বাকি টানেল বোরিং মেশিন উর্বীকে আরও মডিফাই করা হয়। এরপর ২০২০-র ফেব্রুয়ারি মাসে কেন্দ্রের সবুজ সঙ্কেতে ফের কাজ শুরু হয়। চালু হয় উর্বী। কিন্তু ফের বাদ সাধে করোনা ও তার সঙ্গে লকডাউন। কাজ বন্ধ হয়ে যায় মেট্রোর। চলতি বছরের অগাস্ট মাস থেকে আবার পুরোদমে কাজ শুরু করা হয়। টানা চলতে থাকে উর্বী।
শেষ পর্যন্ত শুক্রবার বিকেলে শিয়ালদহে ব্রেক থ্রু হল। অর্থাৎ হাওড়া থেকে শিয়ালদহ হয়ে সেক্টর ফাইভের একদিকের সুড়ঙ্গ তৈরীর কাজ পুরোপুরি শেষ। এরপরের গতিপথে বেশে জটিল। কারণ এবার চণ্ডীর বাকি থাকা কাজ শেষ করবে উর্বী। বউবাজারে ইতিমধ্যেই ব্যবস্থা সম্পন্ন হয়েছে। শীঘ্রই শিয়ালদহ থেকে বউবাজারের সুড়ঙ্গ তৈরীতে নামবে উর্বী। একই সঙ্গে মাটি থেকে তোলা হবে চাপা পড়ে যাওয়া টানেল বোরিং মেশিন চণ্ডীকে। সম্পূর্ণ এই কাজটির দিকে প্রতিনিয়ত যেমন নজর রেখেছেন রেল ও মেট্রো রেলের আধিকারিকরা, তেমনই আইটিডি আইটিডি সেমের আধিকারিক থেকে কর্মীদের হৃদকম্পও বড় কম ছিল না। ইলেকট্রিক্যাল হেড জয়দীপ রাউত, মেকানিক্যাল হেড জ্যোতির্ময় প্রামানিক এবং চিফ ইঞ্জিনিয়ার শুভজিৎ বিশাই, টানেল ইঞিজিনিয়ার আবির মিত্র সকলেই খুশি এতদিনের পরিশ্রম সফল হওয়ায়। বাধা বিপত্তি কাটিয়ে উর্বীর মাধ্যমে সফলতা আসায় এক নতুন মাইলস্টোন ছুঁয়ে ফেলল কলকাতার ইস্ট ওয়েস্ট মেট্রো।