হাতি তাড়ানোর চাকরিতে গবেষক, ইঞ্জিনিয়ারদের আবেদন! ফাঁপড়ে বাংলার বন দফতর

হাতি তাড়ানোর চাকরিতে গবেষক, ইঞ্জিনিয়ারদের আবেদন! ফাঁপড়ে বাংলার বন দফতর

মালদহ: পদে আবেদনের যোগ্যতা অষ্টম শ্রেণি পাশ, অথচ আবেদন জমা পড়েছে গবেষকদেরও। কাজ, হাতি তাড়ানো৷ কখনও কখনও বনভূমির পাহারা দেওয়া৷ তবে, তাও চুক্তিভিত্তিক৷ বেতন মেরেকেটে ১০ হাজার টাকা৷ রাজ্যে বনসহায়ক পদে আবেদন জমা নিয়ে এমন বিস্ফোরক তথ্য দিলেন বন বিভাগের আধিকারিক।

সম্প্রতি বন সহায়ক পদে নিয়োগের জন্য বিজ্ঞপ্তি বেরোয়। বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হয়েছে ইন্টারভিউ নেওয়ার প্রক্রিয়া। শুক্রবার ইন্টারভিউ দিতে আসা প্রার্থীদের দেখে অবাক বন দপ্তরে নিয়োগ প্রক্রিয়ায় যুক্ত থাকা কর্মীরা। অষ্টম শ্রেণী পাস বন দপ্তরে সহায়ক পদে নিয়োগের জন্য আবেদন করেছেন ডক্টরেট ইঞ্জিনিয়ার সহ উচ্চশিক্ষিতরা। আবেদনকারীদের বক্তব্য কেবলমাত্র সরকারি চাকরি পাওয়ার জন্য তারা উচ্চ শিক্ষিত হওয়ার পরও এই আবেদন করেছেন। উচ্চশিক্ষিতরা যে আবেদন করেছেন তা স্বীকার করে নিয়েছেন মালদা ফরেস্ট ডিভিশনের সদর রেঞ্জ অফিসার সুবীর কুমার গুহ নিয়োগী।
 

এই চুক্তিভিত্তিক কাজ চেয়ে হাতে হাতে আবেদন জমা ঘিরেও তৈরি হয়েছিল বিতর্ক৷ জীবিকা চেয়ে জীবনকে ঝুঁকি নিয়ে করোনা আবহে বন দফতরে গিয়ে আবেদন জমা দেন বহু চাকরিপ্রার্থী৷ লাটে ওঠে দূরত্ব বিধি৷ সরকারি তরফে কিংবা শাসকদল দাবি করে বাংলায় নাকি ১ কোটি ৩৬ লক্ষ কর্মসংস্থান হয়েছে৷ বাংলায় বেকারত্ব কমেছে ৪০ শতাংশ৷ কিন্তু, হাতি তাড়ানোর এই অস্থায়ী কাজের জন্য আবেদনের বহর সেই দাবিকে প্রশ্নের মুখে ফেলে দিয়েছে৷
 

অস্থায়ী এই পদের জন্য আবেদনও জমা পড়েছে প্রচুর৷ মাত্র দু’হাজার বন সহায়ক শূন্যপদের জন্য সূত্রের খবর অনুযায়ী জমা পড়েছে ২০ লক্ষের বেশি আবেদন৷ লিখিত পরীক্ষার পরিবর্তে এই নিয়োগ হবে ইন্টারভিউয়ের মাধ্যমে৷ করোনা আবহে সেই প্রক্রিয়া এখন কীভাবে হবে, তা ভেবে ঘুম ছুটেছে বন দফতরের আধিকারিকদের৷ শুধুমাত্র পুরুলিয়া জেলায় সমস্ত আবেদনকারীকে ইন্টারভিউ নিতে গেলে কম করে হলেও সময় লাগবে কম করে এক হাজার দিন! জানা গেছে জেলার চাকরিপ্রার্থীদের আবেদন ৪টি বড় ট্রাঙ্কেও ধরেনি৷ পরে তা ৪৫টি বস্তায় চেপেচুপে ধরানো হয়েছে!
 

যোগ্যতার বিচারে কাকে বাদ দেবেন, তা ভাবাচ্ছে বনকর্তাদের৷ অফিসারদের দাবি, প্রতিদিন ৬ ঘণ্টায় সর্বাধিক ১০০ জনের ইন্টারভিউ নেওয়া যেতে পারে৷ ঠিক এভাবে ২৩ জেলায় আবেদনকারীদের ইন্টারভিউ নিতে কয়েক হাজার দিন লাগার কথা৷ যদিও বনমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, আবেদনের সংখ্যা স্ক্রুটিনির পর জানা যাবে৷ প্রয়োজনে ইন্টারভিউ বোর্ডের সংখ্যা বাড়ানো হবে৷ দরকারে শনিবার ও রবিবার ইন্টারভিউ নেওয়া হবে৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

11 − two =