দেবময় ঘোষ: ২১ শের নির্বাচনে এবারের দুর্গাপুজো শাসক-বিরোধী উভয় পক্ষের জন্যই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ৷ বাঙালীদের এই পুজো আবেগকেই কাজে লাগিয়ে ভোট বৈতরণী পার করতে উঠে পড়ে লেগেছে শাসক দল ও রাজ্যের প্রধান বিরোধী দল বিজেপি৷ তাই শারদ উত্সেবে সামিল হওয়ার কোনও সুযোগই হাতছাড়া করতে চাইছে না গেরুয়া শিবির৷ এবার ‘ভার্চুয়ালি’ দুর্গাপুজোর উদ্বোধন করতে চলেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী৷ রাজ্য বিজেপি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে দিয়ে ‘ভার্চুয়ালি’ দুর্গাপুজো উদ্বোধন করাতে চায়৷ কলকাতার কোনও বড় পুজো কমিটির দুর্গাপুজো যাতে প্রধানমন্ত্রী উদ্বোধন করতে পারেন তার জন্য সবরকম ব্যবস্থা করছে রাজ্য বিজেপি৷ কলকাতার বিভিন্ন বড় পুজো কমিটিগুলির সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে৷
রাজ্য বিজেপির তরফ থেকে পরিকল্পনা করা হয়েছে যে প্রধানমন্ত্রী এক বা একাধিক পুজোর ভার্চুয়ালি উদ্বোধন করবেন দিল্লিতে তাঁর দফতরে বসে৷ সেই মর্মে প্রধানমন্ত্রীর অফিসের সঙ্গে ইতিমধ্যেই যোগাযোগ করা হয়েছে৷ যদিও এখনও পর্যন্ত পিএমও থেকে অফিসিয়াল কাগজ পত্র হাতে এসে পৌঁছয় নি৷ কিন্তু মনে করা হচ্ছে রাজ্য বিজেপির এই পদক্ষেপ সদর্থক হবে৷ দিল্লিতে কিছুদিন আগেই স্বরাষ্টমন্ত্রী অমিত শাহ ও বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নাড্ডার সঙ্গে রাজ্য বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্বের বৈঠক হয়৷ সেই বৈঠকেই বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয় এবং সেখান থেকেই একটি সদর্থক বার্তা পাওয়া গিয়েছে বলেই মনে করা হচ্ছে৷
এরপরেই রাজ্য বিজেপির শীর্ষ নেতারা কলকাতার বিভিন্ন পুজো কমিটিগুলির সঙ্গে পুজো শুরু করেছেন এবং সম্পূর্ণ একটি পরিকল্পনা করে তা প্রধানমন্ত্রীর দফতরে পাঠিয়ে দিয়ে অপেক্ষা করবেন সবুজ সংকেত পাওয়ার জন্য৷ কিন্তু এখানে মনে রাখা প্রযোজন, পুজো উদ্বোধন নিয়ে বিজেপির অভিজ্ঞতা খুব ভালো নয়৷ গতবারে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ পুজো উদ্বোধন করতে সল্টলেকের বি জে ব্লকে এসেছিলেন কিন্তু সেই পুজো উদ্বোধন করার প্রক্রিয়া খুব একটা সহজ সরল ছিল না৷ রাজ্য বিজেপির তরফ থেকে কলকাতার বিভিন্ন পুজো কমিটিতে যোগাযোগ করা হয়েছিল৷ কিন্তু যা খবর শেষমূহুর্তে যে অনেকেই পিছিয়ে আসে৷ দক্ষিণ কলকাতার কয়েকটি বড় পুজো কমিটি শেষ মূহুর্তে পিছিয়ে আসে৷ রাজ্য বিজেপির তরফ থেকে সরাসরি অভিযোগ করা হয় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরিবারের তরফ থেকে এই বাধা সৃষ্টি করা হয়েছে৷ এরপর অবশ্য অমিত শাহর পুজো উদ্বোধন থেমে থাকেনি৷ সল্টলেকের বি জে ব্লকের পুজো উদ্যোক্তা এক বিজেপি নেতা এই ব্যবস্থা সম্পূর্ণ করেন এবং ঝটিকা সফরে পুজো উদ্বোধন করে ও বিজেপি নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করে ফিরে যান অমিত শাহ৷
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর পুজো উদ্বোধন করাকে ঘিরে এই ধরণের কোনও অপার্থিব ঘটনা যাতে না ঘটে সেদিকে নজর রাখছে রাজ্য বিজেপির বিশেষ টিম৷ সিনিয়র বিজেপি নেতা তথা রাজ্য বিজেপির সহ সভাপতি প্রতাপ বন্দ্যোপাধ্যায়, বিশ্বপ্রিয় রায় চৌধুরী এরা বিষয়টির দিকে নজর রাখছেন৷ আজ বিকেলকে বিশ্বপ্রিয় রায় চৌধুরী বলেন, ‘ আমরা প্রধানমন্ত্রীর পুজো উদ্বোধন নিয়ে কাজকর্ম করছি, বিভিন্ন পুজো কমিটির সঙ্গে কথাবার্তা বলছি৷’ বিজেপি সূত্রে খবর, সেই ধরণের পুজো কমিটির সঙ্গেই কথাবার্তা বলা হচ্ছে যারা সাহস করে এই কাজটি করতে পারবেন৷ এক বিজেপি নেতা বলেন, ‘এই কাজটা করার জন্য বুকের পাটা দরকার৷ কারণ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকার যেভাবে শারীরিক ও মানসিক সন্ত্রাস চালাচ্ছে রাজ্যজুড়ে৷ সেখানে কোনও পুজো কমিটিকে সাহস নিয়ে এই কাজ করতে এগিয়ে আসতে হবে৷ আমরা দেখছি কোন কোন পুজো কমিটি সাহস নিয়ে এই কাজ করতে এগিয়ে আসবেন৷ প্রধানমন্ত্রী নিজের দফতরে বসে ভার্চুয়ালি একাধিক পুজোর উদ্বোধন করবেন আমরা সেইরকম পরিকল্পনাই করেছি৷’