নিজস্ব প্রতিনিধি, অশোকনগর: দেবীর দুর্গার আসার আগে যখন রাজ্যজুড়ে পুজোর আবহ তখন এক অষ্টাদশীই হয়ে উঠলেন মা দুর্গা। অসুররূপী ইভটিজারকে হাতেনাতে ধরিয়ে দিলেন ভয় না পেয়ে নিজের সাহসের জোরে। নাটকের রিহার্সালের পর রাত পৌনে দশটা নাগাদ বাড়ি ফিরছিলেন এক মহিলা নাট্যকর্মী। বয়স আঠেরোর কাছাকাছি। অশোকনগর থানার চৌরঙ্গির কাছাকাছি ফাঁকা রাস্তায় একা থাকায় আক্রান্ত হন এক ইভটিজারের হাতে।
নাট্যকর্মীর শ্লীলতাহানির চেষ্টা করে ওই ইভটিজার। চিৎকার করে ওঠেন তিনি। পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে অভিযুক্ত। কিন্তু বাদ সাধেন ওই অষ্টাদশী। ছুটে গিয়ে অভিযুক্ত অমিয় দাসকে অশোকনগর রবীন্দ্রপল্লীর কাছে ধরে ফেলেন নিগৃহীতা ওই নাট্যকর্মী। তাঁর চিৎকারে স্থানীয় মানুষজন ছুটে আসেন। অভিযুক্তকে মারধর শুরু হয়। সহায়তা চেয়ে অশোকনগর থানায় ফোন করেন আক্রান্ত নাট্যকর্মী। ঘটনাস্থলে পৌঁছায় পুলিশ। আটক করা হয় অভিযুক্তকে।
প্রতিদিন দেশ ও রাজ্যে ভুরি ভুরি ধর্ষণের খবর মানসিকভাবে দুর্বল করে দিচ্ছে সমাজকে। মহিলাদের ওপর বাড়তে থাকা অপরাধ রোজ আসিফা, নির্ভয়ার মত নির্যাতিতৈর প্রশ্নের সামনে প্রশাসনকে দাঁড় করিয়ে দিচ্ছে। দিল্লি, হাথরস, কামদুনি সর্বত্র মহিলাদের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠে তা আবার মিলিয়েও যাচ্ছে। সেইসময় বিপন্নতায় ভুগতে থাকতে মহিলাদের সামনে দৃষ্টান্ত হয়ে দাঁড়ালেন অশোকনগরের এই নাট্যকর্মী।
ইভটিজারকে হাতেনাতে ধরে আইনের হাতে তুলে দেওয়ার এই সাহসিকতা যাতে আগামী দিনে সব মেয়েরাই করতে পারেন তাই চাইছেন নাট্যকর্মী। অভিযুক্তের বদমাইশির চেষ্টার বিরুদ্ধে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে এই মহিলা নাট্যকর্মী অন্য নারীদের শক্তি জোগাবেন বলে মনে করছেন পুলিশের একাংশ। তাঁর সাহসকে স্যালুট জানিয়েছেন অনেকেই। এদিন পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করে অভিযুক্তের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন নিগৃহীতা। তবে রাত গড়াতেই এধরণের অসামাজিক কাজ নিয়ে পুলিশের গাফিলতির অভিযোগ উঠছেই। বারবার নিরাপত্তার কথা বলার পর কেন এই ঢিলেঢালা বন্দোবস্ত তার উত্তর অবশ্য দিতে পারেনি পুলিশ কিংবা প্রশাসন।