‘সাম্প্রদায়িক’! ভারতকে ‘কালো’ তালিকাভুক্ত করল মার্কিন কমিশন, কড়া প্রতিক্রিয়া ভারতের

‘সাম্প্রদায়িক’! ভারতকে ‘কালো’ তালিকাভুক্ত করল মার্কিন কমিশন, কড়া প্রতিক্রিয়া ভারতের

a2b3f7a7eb15d538fd7554fbd1cc85b1

নয়াদিল্লি: বিশ্বজুড়ে করোনা মহামারীর প্রাদুর্ভাবের মধ্যেও পশ্চিমবঙ্গ সরকারের মুসলিম তোষণ নিয়ে যখন এখনও রীতিমতো রাজনীতি করে চলেছে বিজেপি, ঠিক তখন ভারতের বিজেপি সরকারকে রীতিমতো অস্বস্তিতে ফেলে দিল মার্কিন সরকার নিযুক্ত আন্তর্জাতিক ধর্মীয় স্বাধীনতা বিষয়ক কমিশন (ইউএসসিআইআরএফ)-এর একটি রিপোর্ট৷ যেখানে ভারতকে ‘টায়ার-২ কান্ট্রি’ হিসেবে উল্লেখ করে বলা হয়েছে, ভারত সরকার সংখ্যালঘুদের উপরে ‘অত্যাচারে ইন্ধন’ দিয়েছে৷ শুধু তাই নয়, রিপোর্টে ধর্মীয় স্বাধীনতার নিরিখে ‘বিশেষ উদ্বেগজনক’ রাষ্ট্রগুলির তালিকায় পাকিস্তান, চিন, নাইজেরিয়া, সৌদি আরবের মতো ১৪টি দেশের তালিকায় স্থান পেয়েছে ভারত৷

২৮ এপ্রিল, ২০২০ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক ধর্মীয় স্বাধীনতা বিষয়ক কমিশন (ইউএসসিআইআরএফ) তার বার্ষিক রিপোর্ট পেশ করেছে, যেখানে ২৯ টি দেশে ধর্মের স্বাধীনতা বা বিশ্বাসের অধিকার লঙ্ঘনের বিবরণ দেওয়া হয়েছে। ইউএসসিআইআরএফ হ'ল একটি স্বতন্ত্র, দ্বিদলীয়, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ফেডারেল গভর্নমেন্ট কমিশন যা ১৯৯৮ সালের আন্তর্জাতিক ধর্মীয় স্বাধীনতা আইন (আইআরএফএ) দ্বারা তৈরি করা হয়েছিল। এর লক্ষ্য আন্তর্জাতিক আইন মান (মানবাধিকারের সর্বজনীন ঘোষণা এবং নাগরিক ও রাজনৈতিক অধিকার সম্পর্কিত আন্তর্জাতিক চুক্তি অনুসারে) বিশ্বব্যাপী ধর্মের স্বাধীনতা বা বিশ্বাসের অধিকারের প্রয়োগের উপর নজরদারি করা৷ ইউএসসিআইআরএফ রিপোর্ট দেখুন https://www.uscirf.gov/news-room/press-releases-statements/uscirf-releases-2020-annual-report-recommendations-us-policy এই লিঙ্কে৷

রিপোর্টে এ-ও অভিযোগ করা হয়েছে যে ২০১৯-এ বিজেপি সরকারের আরও বেশী শক্তি নিয়ে প্রত্যাবর্তনের পর ভারত সরকার এমন কিছু জাতীয় নীতি নির্ধারণ করেছে, যা গোটা দেশে ধর্মীয় স্বাধীনতাকে (বিশেষ করে মুসলিমদের) লঙ্ঘিত করেছে। কিছু রাষ্ট্র বাদে সারা বিশ্বে ধর্মীয় স্বাধীনতার লেখচিত্র যেখানে ঊর্ধ্বগামী, সেখানে ভারতে গত বছর থেকে তা দ্রুত নিম্নগামী হয়েছে। রিপোর্টে সরাসরি মোদী সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগের তালিকায় উঠে এসেছে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) এবং জাতীয় নাগরিক পঞ্জি (এনআরসি)-র নামে সারা ভারতে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে হিংসা ছড়ানো,ও জম্মু-কাশ্মীরের ৩৭০ ধারা বিলোপের মতো বিষয়গুলি।  পাশাপাশি বিগত একবছরে বিজেপি নেতা-নেত্রীদের সাম্প্রদায়িক বক্তব্যগুলিও তুলে ধরা হয়েছে সেখানে।

কমিশনের প্যানেলের মতে সিভিল প্রসিডিওর কোড (সিপিসি)র পদবিও সুপারিশ করা হয়েছিল কারণ “জাতীয় এবং বিভিন্ন রাজ্য সরকার দেশব্যাপী ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে হয়রানি ও সহিংসতার প্রচার চালানোর অনুমতি দেয় এবং তাদের বিরুদ্ধে ঘৃণামূলক বক্তব্য ও উস্কানিতে জড়িত এবং সহ্য করেছিল। যদিও এই রিপোর্টের প্রেক্ষিতে কড়া অবস্থান নিয়েছে ভারত। বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র অনুরাগ শ্রীবাস্তব বিবৃতি দিয়ে বলেন, ‘‘ইউএসসিআইআরএফ-এর বার্ষিক প্রতিবেদনে আমরা ভারতের বিষয়ে পর্যবেক্ষণগুলি অস্বীকার করছি, ভারতের বিরুদ্ধে এদের পক্ষপাতদুষ্ট এবং প্রবণতাপূর্ণ মন্তব্য নতুন নয়। কিন্তু এই বিষয়ে, রিপোর্টে মিথ্যে বর্ণনা নতুন মাত্রায় পৌঁছেছে। তারা নিজস্ব কমিশনারদের প্রকাশ্যে আনতে পারেনি। আমরা এটিকে বিশেষ উদ্বেগজনক সংস্থা হিসাবে বিবেচনা করছি এবং সে অনুযায়ী এর ব্যবস্থা গ্রহণ করব৷”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *