কলকাতা: বিশ্বজুড়ে করোনা ভাইরাসের থাবায় টালমাটাল শিক্ষা থেকে স্বাস্থ্যব্যবস্থা৷ এই পরিস্থিতিতে চলতি শিক্ষাবর্ষে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা একইদিনে নেওয়ার সুপারিশ করল প্রধান শিক্ষক ও শিক্ষাকাদের সংগঠন৷
লকডাউনের পর থেকে করোনা সংক্রমণের শৃঙ্খল রুখতে জারি হয়েছিল দেশজুড়ে লকডাউন৷ বন্ধ রাখা হয়েছে স্কুল কলেজ সহ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান৷ আগামী ডিসেম্বর থেকে কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় ধাপে ধাপে বিভিন্ন প্রটোকল মেনে খুলতে চলেছে৷ স্কুল কবে খুবলে? আলোচান চলছে৷ আপাতত ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত স্কুল বন্ধ থাকছে৷ সেই সঙ্গে শেষের পথে চলতি শিক্ষাবর্ষ৷ এই অবস্থায় মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিকের পরীক্ষা কেমন হবে তা নিয়ে চলছে আলোচনা৷
এই পরিস্থিতিতে দুটি পরীক্ষাই যাতে একসঙ্গে নেওয়া যায়, সে ব্যাপারে সুপারিশ করল স্টেট ফোরাম অফ হেড মাস্টার্স এবং মিস্ট্রেস৷ স্কুলের প্রধান শিক্ষক ও শিক্ষিকাদের ওই সংগঠনের তরফে বলা হয়েছে, যাতে দুটি পরীক্ষাই একইসঙ্গে নেওয়া হোক৷ সেক্ষেত্রে একদিন অন্তর পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হতে পারে, প্রয়োজনে বাড়ানো হতে পারে পরীক্ষাকেন্দ্রের সংখ্যা৷ ইতিমধ্যেই প্রস্তাবটি খতিয়ে দেখার জন্য শিক্ষা দফতরে পাঠানো হয়েছে বলে খবর৷ সুপারিশে বলা হয়েছে, মোট সিলেবাসের ৭০ শতাংশ নিয়ে তা বিভাজন করে প্রকাশ করা যেতে পারে৷ প্রশ্নপত্রের ধরণ বদলে দিয়ে মাল্টিপল চয়েস আকারে করা যায় কিনা, তা নিয়েও ভাবনা চিন্তা করতে বলা হয়েছে শিক্ষা দফতরকে৷
নতুন শিক্ষাবর্ষ চালু হওয়ার পর সেভাবে ক্লাস করানো যায়নি করোনা এবং লকডাউনের কারণে৷ অনলাইন ক্লাসের মাধ্যমে পঠনপাঠন চলছে কোথাও কোথাও৷ সেক্ষেত্রে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে অধিকাংশ পড়ুয়াকে৷ বিশেষ করে গ্রামীণ ও নিম্নবিত্ত পরিবারের পড়ুয়াদের ক্ষেত্রে৷ ফলে স্কুল খোলা জরুরি বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা৷ এই পরিস্থিতিতে স্কুল খুললেও তা কতটা কার্যকর হবে তা নিয়ে চলছে চিন্তাভাবনা৷ পুরো বিষয়টি অভিভাবকদের হাতে ছেড়ে দেওয়া হতে পারে বলে খবর৷ সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে মার্চে হতে পারে পরীক্ষা৷ কেননা, আগামী বছরের প্রথমের দিকে হতে পারে বিধানসভা নির্বাচন৷ ফলে, ভোটের কথা মাথায় রেখে পরীক্ষার দিনক্ষণ নিয়েও শুরু হয়েছে চর্চা৷ যদিও, চলতি বছরে ফল প্রকাশ হলেও আগামী বছর কবে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা হবে, তার দিনক্ষণ এখনও প্রকাশ করতে পারেনি শিক্ষা দফতর৷ গতবছরও একই ঘটনা ঘটেছিল৷ যদিও ফলপ্রকাশের দিন পরবর্তী বছরের পরীক্ষার দিনক্ষণ প্রকাশ করার চল থাকলেও টানা দু’বছর তা হয়নি৷
সারা বিশ্বে করোনার দ্বিতীয় ঢেই শুরু হয়েছে৷ দ্বিতীয়বার লকডাউনের পথে হাঁটতে বাধ্য হয়েছে ব্রিটেনের মতো ইউরোপের বেশ কয়েকটি দেশ৷ এই পরিস্থিতিতে ভারতে করোনার সংক্রমণের হার কমছে৷ ফলে পুরো পরিস্থিতি খতিয়ে বিবেচনা করে তবেই সিদ্ধান্ত নেবে রাজ্য সরকার৷ কালীপুজোর পর রাজ্যে স্কুল খোলার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে আগেই জানিয়ে দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী৷