লোকাল ট্রেনের আসন কমিয়ে পরিষেবা? ‘অবিবেচক’ সিদ্ধান্তে তোপ সুজনের

লোকাল ট্রেনের আসন কমিয়ে পরিষেবা? ‘অবিবেচক’ সিদ্ধান্তে তোপ সুজনের

কলকাতা: রাজ্যে লোকাল ট্রেন চালানোর দাবি দিন দিন জোড়াল হচ্ছে৷ ট্রেন চালানোর দাবি জানিয়ে এদিন মুখ্যমন্ত্রীর কাছে চিঠি পাঠান বাম নেতারা৷ এর পরই সাংবাদিক বৈঠক ডেকে সরকারের দোষ ত্রুটি তুলে ধরে তুলোধোনা করেন বাম পরিষদীয় নেতা সুজন চক্রবর্তী৷ 

আরও পড়ুন- রাতে এসে রাতেই ফিরবেন শাহ! পুজো দিয়ে বৈঠক, কর্মী আবাসে ভোজন!

এদিন তিনি বলেন, ‘‘ঠাণ্ডা ঘরে বসে ট্রেন চলা নিয়ে অঙ্ক কষা হচ্ছে৷ আমরা যত বারই পরামর্শ দিই না কেন, সরকার তা শুনতে নারাজ৷ আমরা যখন চিঠি পাঠিয়েছিলাম, তখন যদি গুরুত্ব দেওয়া হত, তাহলে রাস্তায় রাস্তায় আজ এই বিক্ষোভ অবরোধ হতো না৷ বিক্ষোভের পর অবশেষে সরকারের টনক নড়েছে৷’’  সুজনবাবুর কথায়, যত ইতিবাচক প্রস্তাবই দেওয়া হোক না কেন, সরকার বুঝতে রাজি নয়৷ গায়ের জোড়ে এই সরকার চলছে৷ এতে মানুষের বিপদ বাড়ছে৷ আমাদের দাবি, অবিলম্বে ট্রেন চালু করতে হবে৷ ট্রেনের সংখ্যা বাড়িয়ে ট্রেন পিছু যাত্রী সংখ্যা কমাতে হবে৷ এটাই হবে বিজ্ঞানসম্মত পদ্ধতি৷ 

তিনি বলেন, গণপরিবহণের দায়িত্ব রাষ্ট্রের৷ গরিব, নিম্নবিত্ত মানুষরা ট্রেন-বাসের উপরেই নির্ভরশীল৷ আনলক পর্ব শুরু হয়ে গেল৷ অফিস কাছারি খুলে গেল, অথচ বাসের বন্দোবস্ত করতে পারল না সরকার৷ বাদুর ঝোলা হয়ে মানুষ অফিস যাচ্ছে৷ নিয়ন্ত্রণের কোনও ব্যবস্থা নেই৷ যে ভাবে বাস চলছে তাতে সংক্রমণের সম্ভাবনা আরও বাড়ছে৷ মেট্রো যদি চলতে পারে তাহলে শহরতলীর মানুষ কেন ট্রেনের সুযোগ পাবে না? অন্যান্য রাজ্যে ট্রেন চললে, আমাদের রাজ্যে কেন ট্রেন চলবে না? প্রশ্ন তোলেন তিনি৷

আরও পড়ুন- বাংলায় ভোটের প্রস্তুতি, সোমবার গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক নির্বাচন কমিশনের

সুজনবাবু বলেন, ‘‘যে সরকার অফিস খুলে দিল, সেই সরকার বাস-ট্রেনের ব্যবস্থা করতে পারল না৷ যে সরকার ধর্মঘটের সময় বলে হাজার হাজার বাস চালু করে দেব, সেই সরকার বিশেষ প্রয়োজনে বাসের বন্দোবস্ত করতে পারছে না৷ এটা সাধারণ মানুষের উপর নির্যাতন৷’’ তাঁর অভিযোগ, সবশেষে সরকার যখন ট্রেন চালাতে বাধ্য হল, তখন আবার বলা হচ্ছে মাত্র ১৫ শতাংশ ট্রেন চালানো হবে এবং প্রতি ট্রেনে ৬০০ জনের বেশি যাত্রী তোলা হবে না৷ তিনি বলেন, সরকারের কোনও ধারনাই নেই যে কমবেশি একটি ট্রেনে তিন থেকে সাড়ে তিন হাজার লোক ওঠে৷ ৩ হাজারের জায়গায় ৬০০ লোক মানে ২০ শতাংশ যাত্রী৷ এই সিদ্ধান্ত ভুল এবং অবিবেচনামূলক বলেই মন্তব্য করেন তিনি৷ সুজনবাবু বলেন, রেলের বিশেষজ্ঞ, চিকিৎসক সকলেই বলছেন, ট্রেনের সংখ্যা কমাবেন না, বরং যা ট্রেন চলে তার চেয়ে বেশি ট্রেন চলুক৷ তাতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে ট্রেন চালানো সম্ভব হবে৷ কিন্তু সরকার বিপরীত সিদ্ধান্ত নিচ্ছে৷ তাঁদের আরও দাবি, স্টেশনে ভিড় নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা করতে হবে৷ গরিব, দিনমজুর, স্বল্প আয়ের মানুষরা যাতে ট্রেনে যাতাযাত করতে পারে, তা নিশ্চিত করতে হবে৷ 

রেল কতৃপক্ষের সঙ্গে নবান্নের বৈঠকে ঠিক হয়েছে, আপাতত ৫০ শতাংশ আসনে লোকাল ট্রেন চালানোর বিষয়ে ভাবা হচ্ছে৷ তবে, লোকাল ট্রেনে ৫০ শতাংশ আসনে কীভাবে যাত্রী পরীষেবা দেওয়া সম্ভব, তা নিয়ে চিন্তা ভাবনা চলছে৷ ই-পাসের কোনও ব্যবস্থা থাকছে না৷ ১০ থেকে ১৫ শতাংশ লোকাল ট্রেন চালুর পক্ষে মত প্রকাশ করেছে রাজ্য৷ তবে, ৫০ শতাংশ আসনে ১০-১৫ শতাংশ লোকাল ট্রেন চালিয়ে আদৌ পরিস্থিতি সামাল দেওয়া যাবে তো? যাত্রী ভিড় নিয়ন্ত্রণ করা যাবে তো? উঠছে নানান প্রশ্ন৷  

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

two × five =