কলকাতা: আগামী বুধবার থেকে গড়াবে রেলের চাকা৷ ফলে অনেকটা স্বস্তিতে নিত্যযাত্রীরা, বিশেষ করে শহরতলির মানুষজন। হাওড়া, শিয়ালদহ থেকে শুরু করে দক্ষিণ পূর্ব রেলের তরফেও আরও বেশি করে যাতে ট্রেন চালানো যায় সে বিষয়েও আলোচনা অব্যাহত৷ তবে, বুধবার থেকে ঠিক কত লোকাল ট্রেন চলবে, কী তার সময়সূচি, তা এখনও চূড়ান্ত হয়নি৷ সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া লোকাল ট্রেনের সময়সূচির তালিকার সত্যাতা এখনও পাওয়া যায়নি৷
দীর্ঘ ৭ মাস বন্ধ থাকার পর বুধবার চালু হচ্ছে হাওড়া, শিয়ালদহ সব সব শাখার ট্রেন চলাচল৷ আপাততভাবে ঠিক হয় ২৫ শতাংশ লোকাল ট্রেন চালানো হবে, পরে পরিস্থিতি বিবেচনা করে এবং যাত্রী সংখ্যা পর্যবেক্ষণ করে পরবর্তীতে সেই সংখ্যা বাড়ানো হবে৷ তবে শিয়ালদহ শাখায় যাত্রীসংখ্যা অতিরিক্ত হওয়ার কারণে ৪৬ শতাংশ লোকাল ট্রেন চালু করা হবে জানানো হয়েছে রেলের তরফে৷ কোভিড প্রটোকল মেনে কী পদক্ষেপ করে হবে, তা ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে যাত্রীদের ওপরেই। যদিও মাস্ক বাধ্যতামূলক করা হয়েছে৷ কোন শাখায় কত লোকাল ট্রেন চলবে, তার সময়সূচি কি? এখনও তা স্পষ্ট নয়৷ আপাতত জানা গিয়েছে, কোনও গ্যালপিং ট্রেন থাকছে না, সব ট্রেন সব জায়গায় দাঁড়াবে৷
মান্থলি টিকিট নিয়ে যাত্রীদের সুখবর দিয়ে পূর্ব রেলের তরফ থেকে বিজ্ঞপ্তি জারি করে জানানো হয়েছে, লকডাউনের শুরু থেকে লোকাল ট্রেন বন্ধ৷ ওই সময়ে যাঁদের মান্থলি টিকিটের মেয়াদে যতদিন দিন বাতি ছিল, পরবর্তী টিকিটে তা বাড়িয়ে দেবে হবে৷ তবে, আগের মেয়াদ উত্তীর্ণ পুরোনা টিকিট বৈধ নয়৷ বুধবার থেকে ট্রেন চালু হওয়ার পর মান্থলি টিকিটের মেয়াদ বাড়িয়ে দেওয়া হবে নতুন টিকিটের সঙ্গে৷ অর্থাৎ লোকাল ট্রেন বন্ধ হওয়ার সময় কোনও যাত্রীর মান্থলি টিকিটের মেয়াদ যতদিন বাকি ছিল ততদিনের মেয়াদ বাড়িয়ে দেওয়া হবে৷
এদিকে, লোকাল ট্রেনের সময়সূচি নিয়ে জল্পনা অব্যাহত৷ কয়েকদিন ধরেই সোশ্যাল মিডিয়ায় একাধিক সময়সূচি ছড়িয়ে পড়ায় যাত্রীদের মধ্যে বিভ্রান্তি ছড়িয়েছে৷ যদিও রেলের তরফে এখনও পর্যন্ত কোনও সময়সূচি ঘোষণা করা হয়নি৷ তবে সকাল এবং সন্ধ্যায় অফিস যাত্রীদের কথা মাথায় রেখে সেই সময় বেশি করে লোকাল ট্রেন চালানো হবে বলে জানানো হয়েছে রেলের তরফে৷
লকডাউনের পর, ২৩ মার্চ থেকে লোকাল ট্রেন পরিষেবা বন্ধ রাখা হয়৷ আনলক পর্বে ধীরে ধীরে অনেক ক্ষেত্র খুলে দেওয়ার পর লোকাল ট্রেন চালুর দাবি জোরালো হতে থাকে। দিন যতই বাড়তে থাকে ক্ষোভও পাল্লা দিয়ে বাড়ে। অবরোধও চলতে থাকে। রেলকর্মীদের জন্য চালানো বিশেষ ট্রেনে অন্যান্য যাত্রীদের ওঠা নিয়ে ঝামেসা সৃষ্টি হয়। এরপরেই লোকাল ট্রেন চালু করা নিয়ে বুধবার রেলের আধিকারিকতদের সঙ্গে বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানেই লোকাল ট্রেন চালু করার ইচ্ছেপ্রকাশ করেনম মুখ্যমন্ত্রী এবং তাতে সম্মতি জানান রেল কর্তারা। এদিকে,লোকাল ট্রেন চালু হলেই সামাজিকদূরত্ববিধি কার্যত শিকেয়। কারণ মাস্ক ছাড়া এখনও পর্যন্ত কোনও বিষয় নিয়েই আলোচনা হয়নি। সব যাত্রীর থার্মাল চেকিং না করে শুধুমাত্র সন্দেহভাজন বা ভিড়ের মধ্য থেকে বেছে নিয়ে তাঁদের থার্মাল পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হবে। বেশি সংখ্যায় ট্রেন না চললে করোনাকালে বাদুরঝোলা ভিড়ের আশঙ্কাও থেকেই যাচ্ছে৷