সিঙ্গুর: তৃণমূল কংগ্রেসের দলের অন্দরে যে ভাঙন ক্রমশ বাড়ছে তা ফের একবার সামনে এল। দল ছাড়ার ইঙ্গিত দিলেন সিঙ্গুরের তৃণমূল কংগ্রেস বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য। যদিও এই প্রথম নয়। এর আগেও দল ত্যাগ করার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি। কিন্তু বিধানসভা ভোটের আগে তাঁর দল পরিবর্তনের হুঁশিয়ারি ও তিনি যে কারণে দল পরিবরর্তনের কথা বলেছেন তা বেশ তাৎপর্যপূর্ণ।
সম্প্রতি হুগলি জেলা তৃণমূলের নতুন জেলা কমিটির সদস্যদের নাম ঘোষণা করা হয়। সেখানে সিঙ্গুর ব্লকের সভাপতি মহাদেব ঘোষকে সরিয়ে গোবিন্দ ধারাকে নতুন ব্লক সভাপতি নিযুক্ত করা হয়েছে। এই নিয়েই বিক্ষুব্ধ রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য। সাংবাদিক বৈঠক করে সিঙ্গুরের বিধায়ক স্পষ্ট জানিয়ে দেন, “কমিটির সিদ্ধান্ত যদি কর্তৃপক্ষ পুনর্বিবেচনা না করে তবে অন্য দলে যেতে পারি কিনা সেটা চিন্তা করতে হবে।” এরপর বিধায়ককে ক্ষোভের কারণ জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন, “কেউ কেউ অন্যায় করেও দলের পরিচালক হতে পারে। অথচ আমরা যারা দুর্নীতির সঙ্গ যুক্ত নই, তাদের দল থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হল। দল আমার প্রতি সম্মান দেখালেও শেষ মুহূর্তে যেভাবে সমস্ত কিছু থেকে বঞ্চিত করে সরিয়ে দেওয়া হল তারপর প্রয়োজন হলে দল পরিবর্তন করা আমাদের চিন্তার মধ্যে রয়েছে।”
এরপর তিনি দুটি দলিল সাংবাদিকদের দেখান। সেগুলি নব নিযুক্ত সিঙ্গুর ব্লক সভাপতি গোবিন্দ ধারার। রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য বলেন, “এই দুটি দলিল গোবিন্দ ধারা, তাঁর স্ত্রী ও ছেলের নামে। ৬০ লক্ষ টাকার সম্পত্তি রয়েছে তাঁদের। যিনি দুধের ব্যবসা করেন, ভূ-সম্পত্তি নেই, তার ক্ষেত্রে ৬০ লক্ষ টাকার সম্পক্তি কেনা নিয়ে আমাদের প্রশ্ন রয়েছে।” রাজ্য রাজনীতিতে শুভেন্দু অধিকারীর বিজেপিতে যোগ দেওয়া নিয়ে তরজা চলছে। এরই মধ্যে আবার রবীন্দ্রনাথ ভট্টচার্য দল বদলের কথা বললেন। বিধানসভা ভোটের আগে যদি তৃণমূলে এমন ভাঙন অব্যাহত থাকে তবে মাঠ কিন্তু অনেকটাই চলে যাবে বিজেপির হাতে।
নন্দীগ্রামের মঞ্চে শুভেন্দু অধিকারীর বিস্ফোরক বন্তব্যের পরই বিজেপি শিবির থেকে সরাসরি আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে তাঁকে৷ নন্দীগ্রামের শুভেন্দু বলেন, তিনি প্যারাস্যুটে নামেননি বা লিফটেও ওঠেননি৷ সিঁড়ি ভেঙেই উঠেছেন৷ লড়াই করেছেন৷ কিন্তু কিছু কিছু মানুষ অতীত ভুলে যায়৷ তবে তৃণমূলের অন্দরে ফাটলের কথা বেশ কয়েকদিন ধরেই প্রকাশ্য আসছে৷ শুভেন্দু ‘আমরা দাদার অনুগামী’ ব্যানারে সভা করলেও সেখানে তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম নিচ্ছেন না৷ ফিরহাদ হাকিমও শুভেন্দুকে নিয়ে তীর্যক মন্তব্য করেছেন৷ নন্দীগ্রামের সভায় যেন বিস্ফোরণ হল৷ সভার পরের দিনই তাঁকে বিজেপিতে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানালেন বিজেপির রাজ্য যুব মোর্চার সভাপতি সৌমিত্র খাঁ৷