‘দিদি’র উদ্যোগে ৭ লক্ষের যন্ত্র বিনামূল্যে, শ্রবণশক্তি ফিরে পাওয়ার অপেক্ষায় একরত্তি

‘দিদি’র উদ্যোগে ৭ লক্ষের যন্ত্র বিনামূল্যে, শ্রবণশক্তি ফিরে পাওয়ার অপেক্ষায় একরত্তি

কলকাতা: জন্ম থেকেই মূক ও বধির ছিল তাঁদের সন্তান৷ ছেলে ফের কানে শুনতে পাবে সেই আশা নিয়ে ছুটে গিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রীর দরবারে৷ তাঁদের নিরাশ করেননি তিনি৷ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্যোগে সাত লক্ষ টাকার কৃত্রিম অন্তঃকর্ণ বা ককলিয়া প্রতিস্থাপন করা হল  ২ বছর ১০ মাসের শিশু অত্রি রায়ের শরীরে৷ তাও সম্পূর্ণ বিনামূল্যে৷ পিজি হাসপালের ইএনটি বিভাগে এই অপারেশন করা হয়৷

গত ৯ নভেম্বর অত্রির অপারেশন হয়৷ চিকিৎসক দলের নেতৃত্বে ছিলেন ডাঃ অরুণাভ সেনগুপ্ত৷ বেসরকারি হাসপাতালে এই অপারেশনের খরচ হয় ১৫ লক্ষ টাকা৷ কিন্তু একটি টাকাও খরচ করতে হয়নি অত্রির বাবা-মাকে৷ ছেলে কানে শুনতে পাবে এটা ভেবেই আপ্লুত অত্রির মা প্রিয়া রায়৷ তিনি বলেন, ‘‘দিদিকে অসংখ্য ধন্যবাদ৷ আমরা কালীঘাটে গিয়ে দিদির কাছে আর্জি জানিয়েছিলাম৷ যাতে উনি নিখরচায় ছেলের শরীরে কৃত্রিম ককলিয়া প্রতিস্থাপন করার ব্যবস্থা করে দেন৷ উনি ওঁনার কথা রেখেছেন৷’’ জানা গিয়েছে ১০ দিন পর অত্রির কানের ব্যান্ডেজ খুলে যন্ত্রটি চালু করা হবে৷ অরুণাভ সেনগুপ্ত বলেন, এই যন্ত্র চালু করার পর অত্রি যেমন কানে শুনতে পাবে, তেমনই ফিরবে তার কণ্ঠস্বর৷  অত্রির পরিবার জানায়, জন্ম থেকেই সে কানে শুনতে পায় না৷ ফলে কণ্ঠস্বরও তৈরি হয়নি৷ আকারে ইঙ্গিতেই নিজের কথা বোঝায়৷ অনুভব করেই বাবা-মা বলে ঠোঁট নাড়ায় এক রত্তি ছেলেটা৷ তার ঠোঁট নাড়া ও আকার ইঙ্গিত দেখেই ছেলের কথা বোঝার চেষ্টা করে তার বাবা-মা৷

প্রিয়া জানান, ছ’মাস বয়সে প্রথম চিকিৎসকের কাছে ছেলেকে নিয়ে যান তিনি৷ ওই চিকিৎসকই পিজি-তে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন তাঁকে৷ সেখানে বেরা টেস্ট করানোর পর তাঁরা জানতে পারেন তাঁদেন সন্তান জন্ম থেকেই দু’টি কানে শুনতে পায় না। কথা বলারও ক্ষমতা নেই৷ তার পর থেকেই শুরু হয় তাঁদের যুদ্ধ৷ একবার পিজি আর একবার বনহুগলির এনআইওএইচ-এ৷ বনহুগলিতে প্রায় দেড় বছর থেরাপি চলে অত্রির৷ পাশাপাশি পিজিতেও থেরাপি চলতে থাকে৷ তার পরই মুখ্যমন্ত্রীর কাছে প্রার্থনা জানায় এই ছোট্ট শিশুর পরিবার৷ জানা গিয়েছে, আজ থেকে পাঁচ বছর আগে মূক ও বধির শিশুদের শ্রবণক্ষমতা ও কণ্ঠস্বর ফেরাতে বিনামূল্যে ককলিয়ার প্রতিস্থাপন কর্মসূচি শুরু হয় পিজিতে৷ রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে শিশুদের নিয়ে আসা হয় এখানে৷ এখনও পর্যন্ত ৩০টি শিশুর শরীরে ককলিয়া প্রতিস্থাপন করা  হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

20 + 10 =