একের পর এক উৎসবের চোটে বাড়ছে ভাইরাস সংক্রমণ! চিন্তায় বাংলার চিকিৎসকরা

উৎসব মরসুমে সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ার যে ভয় ছিল, এখন সেটাই আশঙ্কা করছেন বাংলার চিকিৎসক মহল।

শিলিগুড়ি: অর্থনৈতিক দিক সামাল দেওয়ার জন্য আনলক পর্বে খুলে গিয়েছে অধিকাংশ পরিষেবা। কিন্তু তার মানে এই নয়, বাংলার করোনাভাইরাস পরিস্থিতি একেবারে নিয়ন্ত্রণে চলে এসেছে। মূলত উৎসব মরসুমে সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ার যে ভয় ছিল, এখন সেটাই আশঙ্কা করছেন বাংলার চিকিৎসক মহল। আর এর জন্য একের পর এক উৎসবে অংশ নেওয়া অসচেতন মানুষের দিকে আঙুল তুলছেন তারা। 

বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসব দুর্গাপূজা সারা বাংলায় মণ্ডপে প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছিল আদালতের নির্দেশে। তাতে কিছুটা হলেও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এসেছে ঠিকই, কিন্তু পুরোপুরি আসেনি। সেই কারণেই রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় সংক্রমণের মাত্রা বেড়েছে বলে জানা গিয়েছে। তথ্য বলছে, উত্তরবঙ্গের কমপক্ষে তিনটি জেলায় গত এক সপ্তাহে ভাইরাস সংক্রমণের হার বেড়েছে। এটাকে দুর্গাপুজোর ‘আফটার এফেক্ট’ হিসেবে মনে করা হচ্ছে। এরপরে রয়েছে কালীপুজো, দীপাবলি, ছট পুজো। সুতরাং সংক্রমণের হার যে আরও বাড়বে তাতে কোনো সন্দেহ নেই। আর এর জন্য অসচেতন মানুষকেই কাঠগড়ায় তুলেছেন বাংলার চিকিৎসকরা। তাদের মতে, পরিস্থিতি খারাপ হবে জেনেও অনেক মানুষ সচেতনতা দেখাচ্ছেন না, তারা সবাই পুরোদমে উৎসবে অংশগ্রহণ করছেন, যার ফলে সংক্রমণ বৃদ্ধি হচ্ছে। দুর্গা পুজোর আগের এবং পরের তথ্য বিশ্লেষণ করেই এই সিদ্ধান্তে আসা গেছে যে, উৎসবের পরেই একাধিক জেলায় করোনা ভাইরাস সংক্রমণ বৃদ্ধি পেয়েছে। এই প্রেক্ষিতে চিন্তার ভাঁজ বাংলার চিকিৎসক মহলে কারণ সংক্রমণের হার যদি ফের আগের মত বাড়তে থাকে, তাহলে চিকিৎসা পরিষেবায় সমস্যা শুরু হয়ে যাবে। কারণ অনেক আগে থেকেই তথ্য পাওয়া গিয়েছিল যে, ব্রাজ্জের একাধিক হাসপাতলে পর্যাপ্ত বেড নেই, চিকিৎসা সরঞ্জাম এবং স্বাস্থ্যকর্মীর অভাব রয়েছে।

তথ্য বলছে, উত্তরবঙ্গের দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি এবং মালদা জেলায় দুর্গাপূজার পরবর্তী সময়ে করোনা ভাইরাস সংক্রমণের হার বৃদ্ধি হয়েছে। গত সাত দিনে কমপক্ষে ১০০০ জন আক্রান্ত হয়েছেন ভাইরাসে। দিনপ্রতি প্রায় ১০০ থেকে ১৫০ জন করে আক্রান্ত হয়েছেন। দুর্গা পুজোর পরে এখনো দুটি বড় বড় উৎসব বাকি। এখানেও যে মানুষ সার্বিক ভাবে অংশগ্রহণ করবেন তা বলাই বাহুল্য। তাই আগামী মাসে ভাইরাস সংক্রমণের মাত্রা যে আরও বাড়বে তাই এখন থেকেই অনুমান করা সম্ভব। যদিও রাজ্য সরকারের তরফে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, পশ্চিমবঙ্গের করোনাভাইরাস সুস্থতার হার আগের থেকে বেশি অনেকটাই। যদিও চিন্তা বাড়াচ্ছে দিনপ্রতি সংক্রমণ। চিকিৎসক মহলের দাবি, এই দিন প্রতি সংক্রমণের মাত্রা কমানো গেলেই, রাজ্যের করোনাভাইরাস পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হবে। তবে এই উৎসবের সময় ভাইরাস সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হচ্ছে না, যার ফলে পরবর্তী সময়ে আরো বড় সমস্যা তৈরি হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

three × 2 =