কলকাতা: তথ্য গোপন এবং অসহযোগিতার অভিযোগে রাজ্যে গরু পাচারকার কাণ্ডে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল বিএসএফ কমান্ডো সতীশ কুমারকে। এদিন তাকে ১৪ দিনের সিবিআই হেফাজতের নির্দেশ দিল সিবিআই বিশেষ আদালত।
বিএসএফ কর্তাদের সঙ্গে বৈঠক হত গরু পাচারকারীদের, সিবিআই সূত্রে এমনটাই দাবি করা হয়েছে। কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সূত্রে খবর, বড় মাপের গরু পাচারের আগে মুর্শিদাবাদের বিভিন্ন জায়গায় এই ধরনের বৈঠক হত। সংকেতের মাধ্যমে বার্তা বুঝিয়ে দেওয়া হত পাচারকারীদের। সূত্রের খবর, এক একটি পাচারের জন্য ৩৫-৪০ লক্ষ টাকায় রফা হত। পাচারের আগে গরুর গায়ে কালি দিয়ে চিহ্ন দেওয়া হতো যাতে বোঝা যায় কত টাকায় পাচার হয়েছে। গরু পাচারের কাণ্ডে চাঞ্চল্যকর তথ্য হাতে এসেছে সিবিআইয়ের। আরও জানা গিয়েছে, শুধু মুর্শিদাবাদ নয়, মালদা, বসিরহাট সহ বিভিন্ন এলাকায় বিএসএফ কর্তাদের সঙ্গে গরু পাচারকারীদের বৈঠক হত। এমনকি কালি দেখে বোঝা যেত কোন গরু কোন সময় পাচার করা হবে। এই ধরনের একাধিক চাঞ্চল্যকর তথ্য পেয়েছে সিবিআই। এদিকে বিজেপি দাবি করেছে সিবিআইয়ের রেডারে রাজ্য পুলিশের একাংশ রয়েছে। অন্যদিকে সিপিএমের দাবি, এক্ষেত্রে বিজেপি এবং তৃণমূলের বোঝাপড়া রয়েছে। যদিও তৃণমূলের দাবি, বরাবর ভোট এলেই সক্রিয় হয়ে যায় কেন্দ্রীয় সংস্থা। এবার ঠিক তাই হয়েছে।
গরু পাচার নিয়ে বেশ কয়েক মাস ধরে সক্রিয় সিবিআই। কলকাতায় অভিযুক্ত বিএসএফ কর্তার সল্টলেকের বাড়িতে তল্লাশির সঙ্গে গত সেপ্টেম্বরে মালদহ ও মুর্শিদাবাদের ষোলো জায়গায় একযোগে তল্লাশি চালিয়ে বহু নথি সংগ্রহ করেছিল তদন্তকারী এই সংস্থাটি। নভেম্বরের প্রথমে কলকাতায় শুল্ক দপ্তরের আধিকারিক-সহ চারজনকে গ্রেপ্তার করে সিবিআই। সূত্রের খবর, ২০১৫-র শেষ দিক থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত মালদহের ৩৬ নম্বর ব্যাটালিয়নের কমান্ডান্ট ছিলেন এই সতীশ কুমার। তাঁর অধীনে ছিল চার কোম্পানি। যার মধ্যে মালদহ ও মুর্শিদাবাদ রয়েছে। তদন্তকারীরা দেখেছেন, ওই সময়ে ২০,০০০ বেশি গরু আটক করে ছিল বিএসএফ। এত গরু আটক হলেও একজন পাচারকারী বা কোনও গাড়ি গ্রেপ্তার ও আটক হয়নি। এই সন্দেহে তদন্তের একাধিক পথ খোলা রেখে তদন্ত চালায় কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা।