ওয়াশিংটন: করোনায় বেসামাল মার্কিন অর্থনীতি৷ শুধুমাত্র এপ্রিল মাসে মার্কিন তালুকে কাজ হারিয়েছেন ২ কোটি ৫০ লক্ষ কর্মী৷ প্রবল অনিশ্চয়তার মুখে অসংখ্য মানুষের জীবীকা৷ কোপ পড়েছে বেতনেও৷
করোনা পরিস্থিতিতে টানা লকডাউনের ধাক্কায় দেখা দিয়েছে অর্থনৈতিক মন্দা৷ যার প্রভাব পড়েছে মানুষের জীবনযাপনে৷ করোনা প্যানডেমিকের জেরে আমেরিকায় বিপুল হারে বাড়ছে বেকারত্বের সংখ্যা৷ মার্কিন শ্রম দফতরের পরিসংখ্যান বলছে, গত মাসে সে দেশে বেকারত্বের হার ১৪.৭ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে৷ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ১৯৮২ সালে আমেরিকায় বেকারত্বের হার পৌঁছেছিল ১০.৮ শতাংশে৷ এর পর ২০২০৷ কোভিড-১৯ সংক্রমণ রুখতে মার্চের মাঝামাঝি সময় থেকে আমেরিকাজুড়ে লকডাউনই অর্থনৈতিক মন্দার মূল কারণ৷ আমেরিকার ৫০টি স্টেটেই ‘বিপর্যয়’ ঘোষণা করা হয়েছে। আমেরিকার ইতিহাসে প্রথমবার কোনও প্রেসিডেন্ট একসঙ্গে ৫০টি স্টেটে বিপর্যয় ঘোষণা করেন। ডোনাল্ড ট্রাম্প নিজেও ট্যুইট করে জানিয়েছিলেন, আমেরিকার ইতিহাসে এহেন ঘটনা এই প্রথম। অর্থনীতির গতি ফেরাতে বৃহত্তর ক্ষেত্রে ফের কর্মকাণ্ড শুরু হলে কিছুটা হলেও ক্ষতিপূরণ সম্ভব হবে বলে মনে করা হচ্ছে৷
ভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে সামাজিক ও অর্থনৈতিক বিধিনিষেধের জেরেই আমেরিকায় বেকারত্বের হার বাড়ছে৷ বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যে লকডাউন তুলে নেওয়ার দাবিতে বিক্ষোভ হয়েছে। অনেক অঙ্গরাজ্যে বিধিনিষেধ কিছুটা তোলা হয়েছে যাতে অর্থনীতি পুনরায় সচল হতে পারে। অমেরিকায় কোভিড-১৯ এ প্রায় ৭৬ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছে৷ করোনা পজেটিভ প্রায় ১০ লক্ষ ৩০ হাজার মানুষ৷ নভেন্বরের আসন্ন নির্বাচনের আগে দেশের অর্থনীতি সচল করতে মরিয়া প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প৷ কিন্তু এতে যে সংক্রমণের ভয় আরও বাড়বে বৈ কমবে না, সে বিষয়ে আগাম সতর্ক করে দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা৷
রয়টার্স জানাচ্ছেন, মার্চ মাসে আমেরিকায় চাকরি হারিয়েছিলেন ৮৭০,০০০ জন৷ এপ্রিলে সেই সংখ্যা আড়াই কোটি৷ কাজ হারিয়েছেন বিভিন্ন ক্ষেত্রের সঙ্গে জড়িত মানুষ৷ এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত পর্যটন, হোটেল, বিনোদন এবং বিমান পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিরা৷ এখনও পর্যন্ত আমেরিকায় ৬ কোটি ৬০ লাখ মানুষ বেকার ভাতার আবেদন করেছেন।
বিশ্বের সবথেকে ক্ষমতাশালী দেশ হিসেবেই আমেরিকার নাম উল্লেখ করা হয়েছে বরাবর। আর সেই আমেরিকাই এবার বড়সড় বিপর্যয়ের মুখে। এর আগে জঙ্গি ৯/১১ জঙ্গি হামলায় আমেরিকাকে ভেঙে পড়তে দেখেছিল বিশ্ব। এবার সেই পরিস্থিতিও ছপিয়ে গিয়েছে৷