কলকাতা: নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর ১২৫ তম জন্মজয়ন্তী উদযাপনে এদিন নবান্ন থেকে নতুন কমিটি গঠনের কথা ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। একই সঙ্গে সাংবাদিকদের সামনে বক্তব্য রাখতে গিয়ে পরোক্ষভাবে বিজেপিকে কটাক্ষ করলেন তিনি। অভিযোগ তুললেন, এখন দেশের আসল ইতিহাস বদলের প্রবণতা বেড়েছে। নতুন করে ইতিহাস লেখা হচ্ছে। একইসঙ্গে কেন্দ্রীয় সরকারের দ্বিচারিতার কথা তুলে ধরে আক্রমণ করেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী।
এদিন মমতা বলেন, “এখন তো আবার দেখছি ইতিহাস পরিবর্তন করার প্রবণতা। নিজের ইচ্ছামত ইতিহাস তৈরি করছে। যারা স্বাধীনতা আন্দোলনে ছিলেন তাদের বাদ দিয়ে, যারা মূলত স্বাধীনতা আন্দোলনের বিরোধিতা করেছেন তাদের কাউকে কাউকে ভক্তির জায়গায় নিয়ে এসে, অগ্রগামী করে রাজনৈতিক রঙ দিয়ে আসল সত্যকে ভুলিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে।” একইসঙ্গে মমতার বক্তব্য, মহাত্মা গান্ধীর ১৫০ তম জন্মজয়ন্তী পালনে অনেক কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছিল, কিন্তু আদতে কিছুই করা হয়নি। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গের তৃণমূল সরকার যা যা বলেছিল সব করেছে। নেতাজির জন্ম জয়ন্তী পালনে প্রথম সরকার হিসেবে কমিটি গঠন করল তৃণমূল সরকার। মুখ্যমন্ত্রীর আশা, বাংলাকে দেখে দেশের অন্যান্য রাজ্য সরকার নেতাজির সম্মানে কমিটি গঠন করে কাজ শুরু করবে।
উল্লেখ্য, নবান্ন থেকে সাংবাদিক বৈঠক করে এই কমিটি সম্পর্কে বিস্তারিত জানালেন মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়।তিনি জানান, নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর ১২৫ তম জন্মজয়ন্তী উদযাপনে এবং তার সূচনা লগ্নে রাজ্যের সকল জ্ঞানীগুণী ব্যক্তিত্বদের সঙ্গে কথা বলে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই কমিটির চেয়ারপার্সন। কমিটির সদস্য হিসেবে থাকবেন নোবেলজয়ী বাঙালি অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন, নোবেলজয়ী অন্য এক বাঙালি অর্থনীতিবিদ অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায়। এই কমিটিতে রয়েছেন, অধ্যাপক সুগত বসু, রাজ্যের অর্থমন্ত্রী ড: অমিত মিত্র, কবি শঙ্খ ঘোষ, জয় গোস্বামী, নাট্যকার ব্রাত্য বসু, নৃসিংহপ্রসাদ ভাদুড়ী, শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়, রুদ্রপ্রসাদ সেনগুপ্ত, শুভাপ্রসন্ন ভট্টাচার্য, সুবোধ সরকার, সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায় সহ প্রমুখ। এছাড়াও থাকছে কলকাতা এবং যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্যরা। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, এই সমস্ত ব্যক্তিদের পাশাপাশি আরো কয়েকজন এই কমিটিতে যোগ দেবেন। তাদের মধ্যে অন্যতম হলেন আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়, শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়, মেয়র ফিরহাদ হাকিম, সুব্রত মুখোপাধ্যায় থাকবেন। খুব শীঘ্রই এই কমিটি নিজেদের কাজ শুরু করবে, কারণ ২০২১ সালের ২৩ জানুয়ারি থেকেই বর্ষব্যাপী কর্মসূচি শুরু করবে তৃণমূল সরকার, যা চলবে ২০২২ সালের ২৩ জানুয়ারি পর্যন্ত।