কলকাতা: শুভেন্দু অধিকারীর মন্ত্রিসভা খেকে ইস্তফা নিয়ে তোলপাড় বঙ্গ রাজনীতি৷ বিধানসভা ভোটের আগে তাঁর এই ইস্তফায় তৃণমূলের অন্দরে ফাটল দেখছে রাজনীতির কারবারিরা৷ শুভেন্দু আনুষ্ঠানিকভাবে দল না ছাড়লেও মন্ত্রিসভা থেকে তাঁর পদত্যাগে অন্য ইঙ্গিত দেখছে রাজনৈতিক মহল৷ রাজ্য দখলে বিজেপি যখন ক্রমশ শক্তি বাড়ানোর চেষ্টা চালাচ্ছে, তখন তৃণমূল জেরবার অন্তর্দ্বন্দ্বে৷ ফলত ঘর সামলানোই এখন তৃণমূলের সামনে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে৷ দলেরই এক বর্ষীয়ান নেতার কথায়, জঙ্গলমহল এবং পূর্ব মেদিনীপুরের একটা বড় অংশ জুড়ে রয়েছে শুভেন্দু অধিকারীর সমর্থক৷ শুভেন্দু অধিকারীর দলত্যাগের অর্থ ৪৫টি আসন তৃণমূলের হাতছাড়া হওয়া৷ তাই গড় বাঁচাতেই তাঁর মানভঞ্জনে উঠে পড়ে লেগেছে দল৷ এখনও শুভেন্দুকে নিয়ে আশায় রয়েছেন সৌগত রায়৷
আরও পড়ুন- শুভেন্দুর ইস্তফা, কালীঘাটে জরুরি বৈঠক! কে পাবে নতুন মন্ত্রিত্ব?
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক নেতার কথায়, শুভেন্দু অধিকারী সরাসরি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দিকে আঙুল তোলায় ভোটের আগে অস্বস্তিতে পড়েছে দল৷ তাই বারবার মমতা ব্রিগেডের মুখে শোনা গিয়েছে, তিনি (শুভেন্দু) এখনও দলেই রয়েছে৷ আসল কথাটা হল গণআন্দোলন থেকে উঠে আসা এই নেতার হাতে রয়েছে রাজ্যের ২৩ জেলার মধ্য ১৮টি জেলার ক্ষমতা৷ তাই শুভেন্দু অধিকারীকে ধরে রাখতে মরিয়া প্রয়াস চালাচ্ছে তৃণমূল৷ শিশির-পুত্র দলত্যাগ করলে তাঁদের উপর একটা খারাপ প্রভাব পড়বে বলেই মনে করছে শাসক শিবির৷ শুধু রাজনৈতিক প্রভাবই নয়, সামাজিকভাবেও একটা প্রভাব পড়বে৷ শুভেন্দু দল ছাড়লে দলত্যাগ করবেন তাঁর অনুগামীরাও৷ বর্ষীয়ান এই নেতার কথায়, দলের সঙ্গে শুভেন্দুর এই মান অভিমানের মাঝে ভোট কুশলী প্রশান্ত কিশোরের হস্তক্ষেপে একেবারেই মেনে নিতে পারেননি বিদ্রোহী মন্ত্রী। এর পর আজ মন্ত্রিসভা থেকে শুভেন্দুর ইস্তফা অনেক কিছুই বলে গেল৷
আরও পড়ুন- শুভেন্দুর ইস্তফায় তৃণমূলের ‘শেষের শুরু’ দেখছেন মুকুল! দিলেন বড় প্রস্তাব
তবে শুধু শুভেন্দু একা নন, দলের অন্দরে বিদ্রোহী ভূমিকা নিয়েছেন সিঙ্গুরের বিধায়ক ‘মাস্টারমশাই’ রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য৷ গোঁসা হয়েছে ব্যারাকপুরের বিধায়ক শিলভদ্র দত্ত, সিতাইয়ের দলীয় বিধায়কজগদীশ চন্দ্র বার্মা বসুনিয়ার মতো নেতাদেরও। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অপর এক তৃণমূল নেতার কথায়, দলের অন্দরে আই-প্যাক এবং প্রশান্ত কিশোরের এহেন ‘নাক গলানো’ ভালভাবে নিচ্ছেন না অনেক নেতাই।