দেবময় ঘোষ: পণ্যের ব্র্যান্ড ভ্যালু সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু ব্যক্তিগত ব্রান্ড ভ্যালু …কী কিছুই নয়? রাজনীতিতেও ব্রান্ড ভ্যালু সর্বচ্চ রাখা প্রয়োজন তা পরতে পরতে বোঝা গিয়েছে। বেশিদিন আগের কথা নয়। ২০১৯ লোকসভা নির্বাচন। সঙ্গে সঙ্গেই দেশজুড়ে চলছে রাফায়েল বিতর্ক। তৎকালীন কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধী প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বিরুদ্ধে বলা শুরু করলেন – ‘চৌকিদার চোর হ্যায়’। দেখতে দেখতেই সারা দেশে রাহুল গান্ধীর কথা ভাইরাল।
মোদি বিরোধী নেতৃত্বের কাছে কিছুদিনের মধ্যেই ‘চৌকিদার চোর হ্যায়’ যেন অপ্তবাক্য হয়ে উঠল। চৌকিদার শব্দটির প্রয়োগের পিছনেও গল্প রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী নিজেই নিজেকে দেশের চৌকিদার বলেছিলেন। নরেন্দ্র মোদির সেই কথার রেশ ধরেই রাফায়েল বিতর্ককে সামনে রেখে কংগ্রেস তৈরি করে ফেলে – ‘চৌকিদার চোর হ্যায়’। তবে শুধু কংগ্রেস নয়, বিজেপি এবং নরেন্দ্র মোদির বিরুদ্ধে এই লাইনের সফল প্রয়োগ করতে শুরু করে তৃণমূল কংগ্রেস সহ অনেক দলই। এর পরেই শুরু হয় আইন-আদালত। বিজেপি বিষয়টি নিয়ে আদালতের দ্বারস্থ হয়। আদালতের রায়ে ‘চোর হ্যায়’ বলা বন্ধ হয়। কিন্তু মোদি বিরোধীরা নতুন পদ্ধতি আবিষ্কার করেন। যেমন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিশাল জনসভায় দাঁড়িয়ে বলতেন, ‘চৌকিদার …।’ জনতা সমস্বরে বলত ‘চোর হ্যায়।’
বিজেপি কেন আদালতে গিয়েছিল সেই প্রশ্নের উত্তর খুঁজে পেলেই বোঝা যাবে কেন তৃণমূল কংগ্রেস নেতৃত্ব ‘ভাইপো’ শব্দটি নিয়ে এত উত্তেজিত। রাজনীতিতে ব্রান্ড ভ্যালু তৈরি করতে কয়েক দশক লেগে যায়। নরেন্দ্র মোদিকে ঘুরিয়ে চোর বললে শুধু তাঁর নয়, বিজেপির উপরেও দাগ লাগে। তাও দেশের সব থেকে বড় নির্বাচনের ঠিক আগে। সেই কারণেই আদালতগামী হয়েছিল বিজেপি। সেই কারণেই, (হতে পারে প্রশান্তের পরামর্শে ) ‘ভাইপো’ শব্দটি এখন শুনতে পারছে না তৃণমূল। তেলে-বেগুনে জ্বলে উঠেছে নেতৃত্ব। কারণ, যার সম্পর্কে এই কথা বলা হচ্ছে, তিনি হলেন তৃণমূল কংগ্রেসের পরবর্তী প্রজন্ম। যুবক, সাংসদ এক নেতা শুধু তিনি নন, তিনি তৃণমূল কংগ্রেসের ভবিষ্যৎ! তাঁর ব্রান্ড ভ্যালু সর্বচ্চ স্তরে। হয়তো সেই কারণেই সাংবাদিক সম্মেলনে এসে কিছুদিন আগে তৃণমূল কংগ্রেস মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বিজেপি নেতা কৈলাস বিজয়বর্গীয়কে চ্যালেঞ্জ করে বলেছিলেন, যদি এক বাপের বেটা হয়ে থাকোন, তবে বাংলার বুঁকে নাম বলে দেখান৷ কিন্তু কৈলাস এখনও নাম বললেনি৷