ব্রিটেন: ইউরোপে পরিস্থিতি ভয়াবহ হয়ে উঠেছিল করোনায়। আমেরিকার পর ইউরোপের দেশগুলোতে করোনায় আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা সব থেকে বেশি। সপ্তাহের পর সপ্তাহ ইউরোপের বেশিরভাগ দেশে লকডাউন চলেছিল। এতে করোনা সংক্রমণ কিছুটা রোধ করা গেলেও অর্থনীতিতে প্রবল ক্ষতি হয়েছে। তাই করোনা সংক্রমণের চোখ রাঙানি থাকার পরেও ইউরোপের বেশ কিছু দেশে লকডাউন শিথিল করে দেওয়া হয়েছে। ইউরোপের সব থেকে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলো হল স্পেন, ব্রিটেন, ফ্রান্স ও ইতালি। এই চারটি দেশে সোমবার থেকে ধীরে ধীরে শিথিল করে দেওয়া হয়েছে।
ব্রিটেনে জারি স্টে অ্যালার্ট
এতদিন ব্রিটেনের অবস্থা খুব খারাপ হচ্ছিল। তাই ব্রিটেনে জারি ছিল স্টে হোম স্টে সেভ। ক্রমেই আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা বাড়ছিল। পরিস্থিতি সামাল দিতে করোনা সংক্রমণ রোধ করতে ঘর থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
কিন্তু অর্থনীতির কথা চিন্তা করে ব্রিটেনে বেশ কিছু ছাড় দেওয়া হয়েছে। রবিবার বিকেলে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ধীরে ধীরে লকডাউন তুলে নেওয়ার জন্য পরিকল্পনা পেশ করেন। সেখানে জানানো হয়েছে, এখন লকডাউন কিছুটা শিথিল করে দিলেও সতর্ক থাকতে হবে। জানা গিয়েছে, যাদের বাড়ি থেকে কাজ করা সম্ভব, তাদের বাড়ি থেকে কাজ করতে হবে। কিন্তু যাদের বাইরে বের হওয়া একান্ত প্রয়োজন তারা বাইরে বের হতে পারবেন। তবে সামাজিক দুরত্ব বজায় রেখে। জুন থেকে স্কুলগুলো খুলে দেওয়া হলেও সময় কমিয়ে আনা হচ্ছে। সেলুন, পার্লার এখনই খোলা হবে না। শপিংসেন্টারগুলো জুন মাসের পর থেকে খোলা হতে পারে। জুন মাসের পর থেকে খোলা হতে পারে রেস্তোরাঁ, বার পাবগুলো।
বাইরে বের হওয়ার অনুমতি
ফ্রান্সে এখন বাইরে বের হওয়ার অনুমতি পাওয়া যাচ্ছে। ফ্রান্সে করোনায় ২৬ হাজারের বেশি মানুষ মারা গিয়েছেন। আক্রান্ত হয়েছেন পৌনে দুই লক্ষ। এই পরিস্থিতিতে ফ্রান্সে ধীরে ধীরে বাইরে বের হওয়ার অনুমতি দিয়েছে ফ্রান্স সরকার। আগে বাইরে বের হওয়ার আগে অনলাইনে অনুমতি নিতে হতো। অনুমোদন দিলে তা প্রিন্ট কপি নিয়ে তবেই ফরাসিরা বাইরে বের হতে পারতেন। তবে এখন ঘর থেকে বাইরে বের হওয়ার জন্য ট্রাভেল সার্টিফিকেট লাগছে না। নিজের গাড়ি নিয়ে বাড়ি থেকে ৬২ মাইলের মধ্যে ঘুরে আসতে পারবেন এখন ফরাসিরা।
আংশিকভাবে খুলছে স্পেন
করোনার জেরে স্পেন ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে ধীরে ধীরে লকডাউন শিথিল করার বিষয়ে স্পেন এখন দুভাগে ভাগ হয়ে গিয়েছে। একটা অংশ এখনই লকডাউন শিথিল হোক তা চাইছে না। আর একটা অংশ স্পেনে ধীরে ধীরে লকডাউন শিথিলের পক্ষে রায় দিয়েছে। যার ফলে স্পেনের বেশিরভাগ অংশে লকডাউন শিথিল হলেও বার্সেলোনা, গ্রানাডা, মালাগাতে কঠোরভাবে লকডাউন পালন করা হচ্ছে বলে জানা গিয়েছে। আংশিকভাবে স্পেনের স্কুলগুলো খুলেছে। রেস্তোরাঁ, পাব না খোলা হলেও সামাজিক দুরত্ব বজায় রেখে বিয়ার কিনে খাওয়া যাচ্ছে। চার্চগুলো খুললেও তা প্রার্থনার সময় আগের মতো জমায়েতে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।
শবযাত্রায় অনুমতি ইতালিতে
ইতালিতে করোনার জেরে ত্রিশ হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। সেই সময় প্রিয়জনকে কেউ শ্রদ্ধা পর্যন্ত জানাতে পারেনি। ইতালিতে এখন পরিস্থিতি কিছুটা নিয়ন্ত্রণে। শবযাত্রায় অনুমতি দেওয়ী হয়েছে ইতালিতে। তবে এক সঙ্গে ১৫ জনের বেশি জমায়েত করতে পারবে না বলে জানানো হয়েছে।
জানা গিয়েছে, বার, রেস্তোরাঁগুলি ১ জুন থেকে খোলা হবে। সেলুন সেই সময়ই খোলা হবে। তবে জাদুঘর, লাইব্রেরি ১৮ এপ্রিলের পর খোলা হবে বলে জানা গিয়েছে। তবে স্কুলগুলো সেপ্টেম্বরের আগে খোলার সম্ভাবনা নেই বলে জানা গিয়েছে।