কতটা সফল মা-মাটি-মানুষের সরকার? রিপোর্ট কার্ড প্রকাশ তৃণমূলের

কতটা সফল মা-মাটি-মানুষের সরকার? রিপোর্ট কার্ড প্রকাশ তৃণমূলের

 

কলকাতা: বিধানসভা নির্বাচনের আগে রাজ্য সরকারের ১০ বছরের উন্নয়নের খতিয়ান তুলে ধরলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকারের মন্ত্রীরা। শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় থেকে শুরু করে পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ণ মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়, বিদ্যুৎমন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়, নগরোন্নয়নমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম, স্বাস্থ্যমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যরা নিজেদের দফতরের কাজের খতিয়ান তুলে ধরলেন। 

রিপোর্ট কার্ড প্রকাশ অনুষ্ঠানে হাজির ছিলেন লোকসভায় তৃণমূলের দলনেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ও। অনুষ্ঠানের শুরুতেই বক্তব্য রাখেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। কন্যাশ্রী, সবুজসাথীর মতো শিক্ষাব্যবস্থার মতো প্রকল্পগুলির কথা তুলে ধরেন তিনি। তাঁর কথায়, “বিগত ১০ বছরে ৩০টি বিশ্ববিদ্যালয়, ৫০টি কলেজ, ৭৮টি কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, ৩৬টি পলিটেকনিক কলেজ, ৯৫,৩৭৮টি বিদ্যালয় শ্রেণীকক্ষ তৈরি করা হয়েছে।” এছাড়াও স্বামী বিবেকানন্দ স্কলারশিপের মতো বিভিন্ন স্কলারশিপ ও বৃত্তি প্রদানও চালু করা হয়েছে গরীব ও মেধাবী পড়ুয়াদের জন্য। শিক্ষামন্ত্রী জানান, অনলাইন শিক্ষা ব্যবস্থা চালু করা হয়েছে রাজ্য সরকারের তরপে, বিশেষ করে অতিমারীর সময়ে রাজ্য সরকার টেলিভিশন চ্যানেল ও রেডিও এবং অনলাইনের মাধ্যমে পঠনপাঠনের ব্যবস্থা করতে পরেছে। স্বাস্থ্যমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য রাজ্যের স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় সরকারের উন্নয়নের খতিয়ান তুলে ধরেন। তিনি বলেন, “২০১১ সালে সরকারি হাসপাতেলে শয্যা সংখ্যা ছিল ৫৮,৬৪৭টি, বিগত ১০ বছরে আমাদের সরকারে তা বেড়ে হয়েছে ৮৫,৬২৭, অর্থাৎ ৪৬ শতাংশ বৃদ্ধি হয়েছে। চিকিৎসকের সংখ্যা ৪,৮০০জন, ১০ বছরে তা ২১৯ শতাংশ বেড়ে হয়েছে ১৫,৩৩৮জন চিকিৎসক রয়েছে সরকারি হাসপাতালগুলিতে। নার্সের সংখ্যা ৩৭,৩৬৬জন, ৫১ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে তা হয়েছে ৫৬,৫৭৯জন।’’

রাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানান, স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের মাধ্যমে রাজ্যবাসীকে প্রতিটি পরিবারে ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত বেসরকারি হাসপাতালগুলিতেও চিকিৎসা পরিষেবা পাওয়া সুনিশ্চিত করেছে এই সরকার। ১০ কোটি মানুষ এই পরিষেবায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছে বলে জানান তিনি। এছাড়াও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকারের আমলে ১০ বছরে শিশুমৃত্যু ও গর্ভবতী মহিলাদের বা প্রসূতির মৃত্যুর হারেও রাশ টানা গিয়েছে বলে এদিন দাবি করেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী।

পশ্চিমবঙ্গের মতো গ্রাম নির্ভর রাজ্যগুলিতে পঞ্চায়েত দপতর খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এই দফতরের দায়িত্বে ২০১১ থেকেই রয়েছে সুব্রত মুখোপাধ্যায়। এদিন নিজের দফতরের রিপোর্ট কার্ড পেশ করেন তিনি। তবে তার আগে বলেন, ”  আমার মনে পড়ে না ১৯৭১ সাল থেকে, প্রতক্ষভাবে আমি সরকার দেখছি, এবং কোনও সময়ে সেই সরকারগুলির তাদের মধ্যে কেউ ৫ বছর, কেউ ১০ বছর বা কেউ ২০ বছর সরকার চালিয়েছেন। পরবর্তী সময়ে কী কী কাজ করেছে তার বিস্তারিত মানুষকে হিসেব দিয়ে আবার আশীর্বাদ চাইতে যায়নি, শুধুমাত্র মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ছাড়া।” 

রাজ্যের মানুষের কাছএ তিনি আবেদন করেন, “আমরা যে খতিয়ান তুলে ধরছি, তা মানুষকে জানাবেন এবং বলবেন মিলিয়ে নিয়ে তারপর আমাদের আশীর্বাদ করতে। তাঁর কথায়, “চিরকাল সরকার বলেছে আমরা উন্নয়ন করেছি, আমাদের আবার ভোট দিন। কিন্তু কী কী উন্নয়ন করেছেন, কোথায় উন্নয়ন করেছেন, তার বিস্তারিত দিয়ে মিলিয়ে নেবেন বা নিতে পারবেন এরকম তথ্য কেউ দেয়নি একমাত্র ব্যতিক্রম মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। “একইসঙ্গে তিনি বলেন, “আমি যেমন কংগ্রেসের সঙ্গে যুক্ত ছিলাম, আমি নিজে মন্ত্রীও ছিলাম, আমায় কোনওকালে এভাবে প্রেসের সামনে হিসেব দিতে হয়নি।” এই মন্তব্যের মধ্য দিয়ে কী তৃণমূলকে খোঁচা দিলেন নাকি প্রশংসা করলেন তা অবশ্য বোঝা যায়নি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

4 × one =