চটঘেরা জায়গায় আঙুল টিপলেই জবাব পাবেন তারা, আমায় আক্রমণ করছেন যারা: শুভেন্দু

কদিন বাদে জনগণ চটঘেরা জায়গায় গিয়ে বোতাম টিপবে, তখন সবাই বুঝে যাবে তাদের কি অবস্থা হয়।

হলদিয়া: মন্ত্রিত্ব পদ ছাড়ার অনেক আগে থেকেই রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসের অস্বস্তি বাড়িয়ে ছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। এখন মন্ত্রিত্ব পদ ছাড়ার পর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তাঁর দলের অস্বস্তি যেন দিন দিন আরও বাড়িয়ে দিচ্ছেন তিনি। কৌতূহল উদ্দীপক মন্তব্য করে জল্পনা জিইয়ে রাখছেন পশ্চিমবঙ্গের রাজনৈতিক মহলে। এদিনও তাম্রলিপ্ত জাতীয় সরকারের সর্বাধিনায়ক সতীশ সামন্তের স্মরণসভায় দাঁড়িয়ে পরোক্ষে তৃণমূল কংগ্রেসকে বার্তা দিলেন তিনি। স্পষ্ট ভাষায় বললেন, অনেকেই আমাকে ব্যক্তি আক্রমণ করছেন যারা বড় পদে রয়েছেন। কিন্তু যখন কদিন বাদে জনগণ চটঘেরা জায়গায় গিয়ে বোতাম টিপবে, তখন সবাই বুঝে যাবে তাদের কি অবস্থা হয়।

আজ হলদিয়ায় স্মরণসভার মঞ্চে দাঁড়িয়ে শুভেন্দু অধিকারী স্পষ্টভাবে জানিয়ে দেন, তাঁকে অনেকেই ব্যক্তিগত আক্রমণ করছেন, কিন্তু তিনি নিজে ব্যক্তি আক্রমণে বিশ্বাস করেন না। তবে তিনি বলেন, এমন অনেকেই রয়েছেন যারা তাঁকে ব্যক্তি আক্রমণ করছেন, তারা সব বড় বড় পদে রয়েছে। কিন্তু কিছুদিন বাদে যখন জনগণ ওই চটঘেরা জায়গায় যাবে, আর বোতাম টিপবে, তখনই সবকিছু পরিষ্কার হয়ে যাবে। যারা যারা তাঁকে ব্যক্তি আক্রমণ করছেন, তাদের সবার অবস্থা লক্ষ্মণ শেঠ, অনিল বসু এবং বিনয় কোঙারদের মত হবে বলে দাবি করেন শুভেন্দু। তবে ব্যক্তি আক্রমণে না গেলেও পরোক্ষে অনেক কথাই স্পষ্ট করে দিয়েছেন তিনি। যারা তাকে ব্যক্তি আক্রমণ করছেন, তাদের উদ্দেশ্যে স্পষ্ট বার্তা দিয়ে শুভেন্দু বলেন, তিনি শুধু ভাষণ দেন না, রেশনের কথাও বলেন। এক্ষেত্রে তিনি মনে করিয়ে দেন, দেশের এখনো ৫০ শতাংশ মানুষ দারিদ্র্য সীমার নিচে। বহু মানুষ রয়েছেন তাদের দিনপ্রতি রোজগার ২০ টাকার কম। তাই শুভেন্দুর কথায়, শুধু ভাষণ দিয়ে গেলে চলবে না, রেশনের কথাও ভাবতে হবে। 

উল্লেখযোগ্যভাবে এদিন জলপাইগুড়ি থেকে জনসভায় বক্তৃতা দিয়ে পরোক্ষে কড়া বার্তা দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কারুর নাম না নিলেও তিনি আদতে কাদের উদ্দেশ্যে বার্তা দিয়েছেন তা পরিষ্কার। এদিন জলপাইগুড়ির জনসভা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ১০ বছর ধরে দলের খেয়ে, সরকারি থেকে সরকারের খেয়ে এখন নির্বাচনের আগে এর সঙ্গে ওর সঙ্গে বোঝা বাঁধা হচ্ছে। এটা তিনি কোনও মতেই সহ্য করবেন না। এই প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী জানিয়ে দেন, ৩৬৫ দিন যারা মানুষের পাশে ছিলেন তাদেরই এই নির্বাচনে পরীক্ষা দিতে হবে। আর ২০২১ সালে তৃণমূল কর্মীদের এমন পরীক্ষা দিতে হবে যাতে তারপর থেকে বিজেপি আর কখনো নির্বাচনী পরীক্ষায় বসতে না পারে। এ প্রসঙ্গে তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সিপিএম এবং কংগ্রেসকেও কটাক্ষ করেছেন। স্পষ্ট জানিয়েছেন, বাংলায় বিজেপির এমন হাল করতে হবে যাতে এই দুই দল তাদের দালালি না করতে পারে। মমতা দলের নেতা, কর্মী এবং বন্ধুদের উদ্দেশ্যে স্পষ্ট জানিয়ে দেন, কোনও ভুল-ত্রুটি হয়ে থাকলে সরাসরি যেন জনগণের কাছে ক্ষমা চেয়ে নেওয়া হয়। কারণ তৃণমূল কংগ্রেসের কাছে জনগণ সব, তারাই তাদের অভিভাবক। তাই অভিভাবকের কাছে ক্ষমা চেয়ে নেওয়াতে কোনো লজ্জা নেই।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

18 + 4 =