নিউ ইয়র্ক: কোভিড-১৯ চিকিৎসায় ম্যালেরিয়ার ওষুধ হাইড্রক্সিক্লোরোকুইনের ব্যবহার কতটা নিরাপদ, তা নিয়ে সংশয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)৷ করোনা চিরিৎসায় সাময়িকভাবে হাইড্রক্সিক্লোরোকুইনের পরীক্ষামূলক ব্যবহার বন্ধ রাখার নির্দেশিকা জারি করল তারা৷
গত সপ্তাহে ল্যানসেটে প্রকাশিত একটি সমীক্ষা বলছে, কোভিড-১৯ রোগীদের উপর এই ওষুধের প্রয়োগের ফলে তাঁদের মৃত্যুর সম্ভাবনা বাড়তে পারে৷ এর পরেই হাইড্রক্সিক্লোরোকুইনের পরীক্ষামূলক প্রয়োগ বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয় হু৷ সোমবার এ কথা ঘোষণা করেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ডিরেক্টর জেনারেল টেড্রোস অ্যাডনম গেব্রিয়েসাস৷
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প অবশ্য প্রথম থেকেই হাইড্রক্সিক্লোরোকুইনের পক্ষেই সওয়াল করেছেন৷ এমনকী করোনা রুখতে প্রতিদিন হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন খাওয়ার দাওয়াইও দিয়েছেন তিনি৷ কিন্তু করোনা ভাইরাসের মোকাবিলায় হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন কতটা কার্যকর তা নিয়ে দ্বন্দ্ব রয়েছে চিকিৎসক মহলে। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের স্বাস্থ্য উপদেষ্টারাও এই ওষুধের প্রয়োগ ও কার্যকারিতা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন। বিভিন্ন দেশের কয়োকশো হাসপাতালে সম্ভাব্য চিকিৎসা হিসাবে এই ওষুধের প্রয়োগ করা হয়েছে৷ কিন্তু স্বাস্থ্যকর্মীরা বারবার বলেছেন, এতে হিতে বিপরীত হচ্ছে। সমস্ত দিক বিবেচনা করেই ম্যালেরিয়ার ওষুধ হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন নিয়ে বড় সিদ্ধান্ত নিল হু। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, এই ওষুধ ব্যবহারের ফলে রোগীর হৃদযন্ত্রের গতি বেড়ে যায়। যা করোনা রোগীর জন্য বিপজ্জনক।
সোমবার একটি অনলাইন বৈঠকে হু’র ডিরেক্টর জেনারেল টেড্রোস বলেন, ‘‘করোনা রোগীদের সুরক্ষার কথা মাথায় রেখে আপাতত হাইড্রক্সিক্লোরোকুইনের ট্রায়াল স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সংস্থার এগজিকিউটিভ গ্রুপ৷’’ তবে অন্যান্য ওষুধের পরীক্ষামূলক প্রয়োগ চলবে বলে জানান তিনি৷ জানা গিয়েছে, এই ট্রায়ালে অংশ নিয়েছিল মোট দশটি দেশ। শনিবারই এই বিষয়টি খতিয়ে দেখে তারা৷ দেখা গিয়েছে, আমেরিকায় যেসব করোনা রোগীর শরীরে এই ওষুধ প্রয়োগ করা হয়েছিল, তাঁদের মৃত্যুর হার অন্যদের তুলনায় বেশি। এর পরেই দশটি দেশ এই ওষুধের পরীক্ষামূলক প্রয়োগ স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
প্রসঙ্গত, এপ্রিলের শুরুতে মার্কিন প্রেসিডেন্টের পরামর্শ ক্রমে বহু দেশকে এই ওষুধ সরবরাহ করেছিল ভারত। গত সপ্তাহে ব্রাজিলের স্বাস্থ্যমন্ত্রীও হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন ব্যবহারে উপর জোড় দিয়েছিলেন৷