কলকাতা: যত ইচ্ছে ঘুগনি খান। দাম মাত্র ১০ টাকা। আর যদি ১০ প্লেটের বেশি খেতে পারেন, তাহলে উলটে দোকানীই আপনাকে টাকা দেবে। শুনতে অবাক লাগলেও খাস কলকাতা শহরে এমন বন্দোবস্ত রয়েছে। নিত্য হচ্ছে ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি। দোকানী রোজ হাঁড়ি ভর্তি ঘুগনি নিয়ে আসেন আর খাওয়ান ক্ষুধার্তদের।
কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতাল চত্বর। তার সামনেই খোলে এই অন্নপূর্ণার ভান্ডার। দোকানীর নাম মহাদেব মণ্ডল। রোজ কয়েক কিলোমিটার সাইকেল চালিয়ে তিনি আসেন এইখানে। ব্যবসা করা তাঁর পেশা। কিন্তু নেশা মানুষকে খাওয়ানো। তাই তো ১০ টাকার বিনিময়ে যতটা চাও ততটা খাদ্যের জোগান দেন তিনি। রোজ প্রায় ২ ঘণ্টা সাইকেল চালিয়ে আসেন এই এসএসকেএম চত্বরে। এখানে এসে পসরা সাজান। তারপর শুরু হয় তাঁর ঘুগনি বিক্রি। প্রতি প্লেটের দাম ১০ টাকা। কিন্তু প্রথমবারের ওই এক প্লেটেরই দাম নেন মহাদেববাবু। তারপর পুরোটাই বিনামূল্যে দেন গ্রাহকদের।
মহাদেববাবু জানান, তিনি নিজেই গ্রাহকদের পেটপুরে খাওয়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। হাসপাতালে এমন অনেকেই আসেন যাঁরা চিকিৎসার টাকা জোগাড় করতেই হিমশিম খান। তাঁদের কাছে নিজেদের খাওয়ার টাকা থাকে না। তাদেরই ভাইয়ে তৃপ্তি পেতে ভালবাসেন মহাদেববাবু। তাই একবারের বেশি টাকা নেন না তিনি। নিজের দোকানের নাম তিনি দিয়েছেন দেবী অন্নপূর্ণার নামে। যাঁর ভাঁড়ার কখনও শূন্য হয় না। মহাদেববাবুর ‘অন্নপূর্ণা’র ভাঁড়ার থেকেও তাই যতটা চায় ততটা খাওয়া পাওয়া যায়। যতক্ষণ তাঁর কাছে খাবার থাকে, গ্রাহকদের দেন তিনি। এভাবেই কাটে তাঁর প্রতিটা দিন। এসএসকেএম হাসপাতালে যাঁরা আসে, তাঁদের কাছে মহাদেববাবু পরিচিত। আর যাঁরা জানেন না তাঁরা মহাদেব মণ্ডলকে দেখে অবাক হন। কিন্তু তাতে কিছু আসে যায় না মহাদেববাবুর। তিনি নিজের মতো করে কাজ করে যান।