বৃষ্টিতে ভিজেই ‘গার্ড অফ অনার’ গ্রহণ, মোদী সকাশের আগেই জিনপিংকে তুলোধোনা বাইডেনের

বৃষ্টিতে ভিজেই ‘গার্ড অফ অনার’ গ্রহণ, মোদী সকাশের আগেই জিনপিংকে তুলোধোনা বাইডেনের

ওয়াশিংটন:  তিন দিনের আমেরিকা সফরে গিয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী৷ নিউইয়র্ক ঘুরে মার্কিন সফরের দ্বিতীয় পর্বে ওয়াশিংটনে পৌঁছেছেন নমো। সেখানে তাঁকে সাদর অভ্যর্থনা জানানো হয়৷ প্রধানমন্ত্রীর বিমান যখন রানওয়ের মাটি ছুঁয়েছে, তখন ওয়াশিংটনের আকাশে কালো মেঘের ঘনঘটা। শুরু হয়েছে ভারী বৃষ্টি৷ তার মধ্যেই মধ্যে পূর্ণ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় মোদীকে স্বাগত জানানো হয়। প্রধানমন্ত্রী বেস অ্যান্ড্রুস-এ পা রাখার পরই বেজে ওঠে ভারত ও আমেরিকার জাতীয় সঙ্গীত৷ রেনকোট পরে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায় নমোকে। তাঁকে গার্ড অফ অনার দেওয়া হয়। এর পর সেখান থেকে প্রধানমন্ত্রী চলে যান উইলার্ড ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলে। 

মোদী আসছেন, সেই খবর আগেই ছিল৷ সেই মতেই হোটেলের সামনে প্রধানমন্ত্রীকে আমন্ত্রণ জানানোর জন্য উপস্থিত ছিলেন মার্কিন নিবাসি ভারতীয় বংশোদ্ভূতরা৷ সেখানে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানেরও আয়োজন করা হয়। সেই সব পর্ব সেরে হোয়াইট হাউজের উদ্দেশে রওনা দেন মোদী। সখানে তাঁকে আমন্ত্রণ জানান মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও তাঁর স্ত্রী তথা মর্কিন ফাস্ট লেডি ডিল বাইডেন৷ সম্ভবত আজই মার্কিন প্রেসিডেন্টের সঙ্গে বৈঠকে বসবেন নরেন্দ্র মোদীর। উল্লেখ্য, এর আগেও দুই রাষ্ট্রনেতার মধ্যে একাধিকবার সাক্ষাৎ হয়েছে। তবে এই প্রথম পূর্ণাঙ্গ আলোচনার জন্য দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে বসতে চলেছেন তাঁরা।

এদিকে, মোদীর সঙ্গে সাক্ষাতের আগেই চিনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংকে একহাত নেন বাইডেন। জিনপিংকে তুলোধোনা করার পাশাপাশি তিনি বলেন, ‘চিন গুরুতর অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে।’ যার  তীব্র প্রতিবাদ জানায় চিন। বাইডেনের এই আক্রমণের জবাবে চিনা বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র মাও নিং বলেন, ‘‘প্রেসিডেন্ট বাইডেনের এই মন্তব্য একেবারেই অযৌক্তিক৷ এহেন মন্তব্য দায়িত্বজ্ঞানহীনতার পরিচয় দেয়।’

প্রসঙ্গত, মোদীর মার্কিন সফরের আগে বেজিংয়ে গিয়েছিলেন মার্কিন বিদেশ সচিব অ্যান্টনি ব্লিনকেন। সেখানে চিনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে বৈঠক হয় তাঁর৷ লক্ষ্য ছিল  দুই দশের মধ্যে যে কূটনৈতিক উত্তেজনা চলছে তা প্রশমন করা৷ কিন্তু, এরই মাঝে ফের চিনকে নিশানা করে বসলেন স্বয়ং মার্কিন প্রেসিডেন্ট৷ 

তাইওয়ান ইস্যুতে চিন এবং আমেরিকার সম্পর্কে উত্তেজনা বেড়েছে। তবে বেজিং সফরে গিয়ে মার্কিন সেক্রেটারি অফ স্টেট বলেন, ‘‘তাইওয়ানের স্বাধীনতা সমর্থন করে না আমেরিকা।’ তিনি আরও জানান, ওয়াশিংটন এখনও ‘এক চিন’ নীতিতে বিশ্বাসী৷ তাঁর এই মন্তব্য চিন ও আমেরিকার সম্পর্কের ক্ষতে কিছুটে প্রলেপ দিতে পারত। কিন্তু, ক্ষত শুকানোর আগেই বাইডেনের মন্তব্যে ফের জমাট বাঁধল বরফ৷ 

এদিকে, দিনকয়েক আগেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর প্রসঙ্গে প্রেসিডেন্ট বাইডেনকে চিঠি লিখেছিলেন ৭৫ জন ডেমোক্র্যাট কংগ্রেস সদস্য। তাঁদের বক্তব্য ছিল, মোদীর সামনে যেন ধর্মীয় অসহিষ্ণুতা এবং সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতার মতো বিষয়গুলি তুলে ধরা হয়। তবে সে আর্জিতে আমল দেয়নি হোয়াইট হাউজ৷ সাফ জানানো হয়, মোদীকে ভারতের গণতন্ত্র নিয়ে কোনও ‘জ্ঞান’ দিতে ইচ্ছুক নন প্রেসিডেন্ট। এ প্রসঙ্গে মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জেক সালিভান বলেন, ‘‘আমাদের সামনেও একাধিক চ্যালেঞ্জ রয়েছে। এই আবহে আমরা অন্যদের লেকচার দেওয়ার পক্ষপাতী নই।’ এর আগে এনএনসি কোঅর্ডিনেটর জন কার্বিকেও ‘ভারতের গণতন্ত্র’ নিয়ে প্রশ্ন করেছিলেন এক পাক বংশোদ্ভূত মার্কিন সাংবাদিক। সেই সময় জন কার্বি তাঁকে ‘পরামর্শ’ দিয়েছিলেন, তিনি যেন ভারতে গিয়ে নিজের চোখে পরিস্থিত দেখে আসেন৷