কলকাতা: বিহারে সদ্য সমাপ্ত বিধানসভা নির্বাচনে আসাদউদ্দিন ওয়াইসি’র সর্বভারতীয় মজলিস-ই-ইত্তেহাদুল মুসালিমীন (এআইআইএমআইএম) বা মিম পাঁচজন বিধায়ককে পেয়েছে। বিহার থেকে, ওয়েসি তার সাফল্য পশ্চিমবঙ্গেও তার দলের প্রত্যাশা বাড়িয়েছে। গত বছর অক্টোবর মাসে কিশনগঞ্জ বিধানসভা উপনির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে মিম। কিন্তু বিহারের সীমাঞ্চল এলাকায় অনেক আগে থেকেই সংগঠন বাড়িয়েছে ওয়াইসির পার্টি। এবার তাদের নজর পশ্চিমবঙ্গের দিকে।
বিহারের মতো ওয়েসি বেশ কিছুদিন ধরে পশ্চিমবঙ্গেও কাজ করছেন। ২০১৯ সালের সাধারণ নির্বাচনের পরে মিম এর ‘বেঙ্গল প্ল্যান’ আঁকা হয়েছিল। বেঙ্গল ইউনিট গত বছর ২৫ টিরও বেশি সমাবেশ করেছে; এর মধ্যে পাঁচটি সমাবেশে এক লক্ষেরও বেশি জনতা এসেছেন বলে মিমের দাবি। আরও দাবি, এখন বাংলার প্রায় সব জেলায় এটির একটি পার্টি ইউনিট রয়েছে। দিনাজপুর, মালদা, হাওড়া, কোচবিহার, বীরভূম, আসানসোল, নদিয়া এবং কলকাতার মতো জেলাগুলির উপরে মূল দৃষ্টি নিবদ্ধ রাখা হয়েছে। ২০১১ সালের আদমশুমারি অনুসারে পশ্চিমবঙ্গের জনসংখ্যার ২৭ শতাংশ মুসলিম রয়েছে। কিন্তু, বিভিন্ন মাধ্যমে দাবি করা হয় এখন তা ৩০ শতাংশের বেশি।
পশ্চিমবঙ্গের তাদের সংখ্যালঘু ভোটব্যাংক’কে সুরক্ষিত রাখতে বদ্ধপরিকর তৃণমূল কংগ্রেস। সেই কারণেই আসাদুদ্দিন ওয়াইসি’র মিম-কে দেখে অস্বস্তিতে তৃণমূল , মনে করছে রাজনৈতিক মহল। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা রাজ্যে আগামীদিনে এন আর সি-কে মেরুকরণের বার্তাবাহক হিসাবে ধরছেন। সেই কারণেই, বিজেপি এবং তৃণমূল (যথাক্রমে এন আর সি-এর সমর্থক এবং বিরোধী) ভোট ভাগাভাগি করে নেবে, সেই আশঙ্কা করা হচ্ছে। সেক্ষেত্রে তৃতীয় শক্তি হিসাবে বামে-কংগ্রেসের ভোট ব্যাংকে থাবা বসতে চাইছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিজেপিকে আটকাতে হলে, তৃণমূল-ই একমাত্র বিকল্প ভোটারদের মনে করিয়ে দিতে চাইছেন মমতা। সেক্ষেত্রে, বাংলার মুসলমান সমাজ, যা দীর্ঘদিন ধরেই বাম এবং কংগ্রেসকে ভোট দিয়ে এসেছিল, তারা তৃণমূলের দিকে ঘুরেছে তা যেমন সত্য, তেমনই, মুসলিম রাজনৈতিক দল এআইএমএইএম এর দিকে ঘুরে যেতে পারে সেই আশঙ্কাও রয়েছে।
সেক্ষেত্রে, আসাদুদ্দিন ওয়াইসির মত নেতা যদি মমতার ভোটব্যাংকে থাবা বসায় তবে তা সব থেকে আনন্দের বিষয় হবে বিজেপির কাছে। সেক্ষেত্রে, একজন মুসলিম নেতা এবং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মধ্যে পছন্দ করার মুহূর্ত আসবে। বাংলার মুসলমান সমাজের মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুধ্যে ক্ষোভ নেই এমন নয়। সেক্ষেত্রে, মুসলিমদের ক্ষোভের আগুনে ঘি ঢেলে উপস্থিত হয়েছেন আসাদুদ্দিন।