কলকাতা: শান্তিনিকেতনের লাল মাটির পথে ধরে সাইকেল চালিয়ে যাচ্ছেন অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন৷ এই ছবি সেখানকার মানুষের কাছে কম বেশি চেনা৷ এই বাইসাইকেলটি ছিল অমর্ত্য সেনের নোবেল জয়ের অন্যতম অংশীদার৷ পশ্চিমবঙ্গের গ্রামে গ্রামে এই সাইকেল চেপেই তিনি ফিল্ড ওয়ার্ক করতেন৷ অমর্ত্য সেন নিজেও মনে করেন, এই সাইকেল না থাকলে নোবেল পেতেন না তিনি। সাইকেলটি এখনও সযত্নে রাখা আছে সুইডেনের মিউজিয়ামে৷
১৯৯৮ সালে নোবেল পুরস্কার পান অমর্ত্য সেন৷ তাঁর গবেষণার সঙ্গী ছিল একটি সাইকেল৷ এই কথা মেনেছে নোবেল পুরস্কার কমিটিও। গত ৩ জুন ছিল বিশ্ব সাইকেল দিবস। সেই দিন উদযাপন করতে গ্যালারিতে রাখা সেই সাইকেলের ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে নোবেল কমিটি। সেই পোস্টে নোবেল কমিটি লেখে, ‘বাইসাইকেল অর্থবিজ্ঞানের চাবিকাঠি নয়। কিন্তু অমর্ত্য সেনের অর্থনীতির গবেষণায় বড় ভূমিকা পালন করেছিল এই বাইসাইকেল।’
ফেসবুক পেজে অমর্ত্য সেনের নোবেল জয়ের গল্পও শুনিয়েছেন মোবেল মিউজিয়ামের কিউরেটর টোবিয়াস ডেগসেল। তিনি জানান, এই নোবেল জয়ীর গবেষণার অন্যতম বিষয় ছিল সমাজের একেবারে নিচুতলার মানুষ এবং কী ভাবে তাঁদের পরিস্থিতি উন্নতি ঘটানো যায় তার উপর৷ এই মানুষগুলোর কাছে ছেলে এবং মেয়ে সন্তানের ফারাক কতটা, তা বোঝার জন্য একটি সমীক্ষা করেছিলেন অমর্ত্য সেন। এই কাজের জন্য এক সহকারী নিয়োগ করেছিলেন তিনি। তাঁর কাজ ছিল, সাইকেলে চেপে পশ্চিমবঙ্গের গ্রামে গ্রামে ঘুরে বাচ্চাদের ওজন সংগ্রহ করা। কিন্তু বাচ্চারা কিছুতেই ওজন করতে চাইত না। বারবার কামড়ে দিত তাঁর সহকারীকে৷ এর পর নিজের ছাত্রছাত্রীদের কাছে অনুরোধ করলেন এই কাজের জন্য৷
তাঁরা কেউ রাজি হলেন না। তখন তিনি নিজেই বেরিয়ে পড়লেন সাইকেলে চেপে গ্রামে গ্রামে ঘুরে ওজন মাপতে। সেই তথ্য ব্যবহার করেই পরে হিউম্যান ডেভলপমেন্ট ইনডেক্স তৈরি করেন অমর্ত্য সেন। দারিদ্রতা নিয়ে এই গবেষণাই তাঁকে এনে দিয়েছিল নোবেল পুরস্কার। এই গল্প পোস্ট হওয়ার সঙ্গেই সঙ্গেই ভাইরাল হয়ে যায়।