নিউ ইয়র্ক: গুগলের সিইও সুন্দর পিচাই সম্প্রতি ইউটিউবে ‘ডিয়ার ক্লাস ২০২০’ নামক একটি ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন৷ সেখানে ছাত্রদের উদ্দেশে বেশ কিছু পরামর্শ দেন তিনি। পাশাপাশি নিজের জীবনের কিছু স্মরণীয় ঘটনার কথাও ভাগ করে নেন ছাত্রদের সঙ্গে৷
এই ভার্চুয়াল ইভেন্টে সদ্য স্নাতক হওয়া ছাত্র-ছাত্রীদের পিচাই বলেন, ‘‘প্রযুক্তির কিছু বিষয় তোমাদের বিরক্তির কারণ হতে পারে৷ অধৈর্য করে তুলতে পারে৷ কিন্তু ধৈর্য হারালে চলবে না। প্রযুক্তির বিপ্লব ঘটবে৷ এমন কিছু তৈরি হবে, যা আমার প্রজন্ম স্বপ্নেও ভাবেনি৷ ধৈর্যই নতুন উদ্ভাবনের পথ খুলে দেবে৷’’ পিচাই বলেন, ‘‘আমি যখন দশম শ্রেণিতে পড়ি, তখন প্রথম ফোন হাতে পাই৷ আমাদের সময় টেলিভিশনে ছিল মাত্র একটি চ্যানেল৷ কিন্তু আজ তোমাদের সামনে ভার্চুয়াল প্ল্যাটফর্মে দাঁড়িয়ে কথা বলছি৷’’
তিনি আরও বলেন, ‘‘পরিবেশ বা শিক্ষা নিয়ে আমাদের প্রজন্মের চিন্তাভাবনা তোমাদের হতাশ করতে পারে। তবু বলব, ধৈর্য ধরো। বিশ্বের দরকারে পরিবর্তন করতেই হবে।’’ আজকের গুগল সিইও সুন্দর পিচাই কিন্তু উঠে এসেছেন সাধারণ মধ্যবিত্ত পরিবার থেকে৷ এদিন সুন্দর শুনিয়েছেন তাঁর কলেজ জীবনের স্ট্রাগলের কথা৷ পড়াশোনার জন্য নিজের আমেরিকা যাওয়ার কথা। সেই সময়ে তাঁর অনুভূতি এবং পারিবারিক পরিস্থিতির কথা৷ পিচাই জানান, ২৭ বছর আগে স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পেয়ে প্রথম বার আমেরিকায় পাড়ি দেন তিনি৷ সেই প্রথম বিমান সফর তাঁর।
পিচাই বলেন, ‘‘আমেরিকায় যাওয়ার জন্য বিমানের টিকিট কাটতে বাবা প্রায় তাঁর গোটা বছরের বেতন খরচ করেছিলেন৷ আমি যাতে স্ট্যান্ডফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করতে পারি৷ কিন্তু আমেরিকার খরচ ছিল খুব বেশি। বাড়িতে ফোন করতে গেলে এক মিনিটে দু’ডলারের বেশি খরচা হত। এখানে সামান্য একটা পিঠ ব্যাগের দাম ছিল আমার বাবার এক মাসের বেতনের সমান৷’’
তিনি বলেন, ‘‘যখন আমার বিমান ক্যালিফোর্নিয়ার মাটি ছুঁল, তখন আমি কিছুই জানিনা, কী ঘটতে চলেছে আমার জীবনে৷ ভাগ্য ছাড়া এই সফরে আমার একমাত্র সঙ্গী ছিল প্রযুক্তির প্রতি প্রচণ্ড ভালোবাসা আর মুক্ত মন৷’’ ছাত্রদের প্রতি তাঁর একটাই পরামর্শ, ধৈর্য না হারিয়ে নিজেদের ভালবাসার জিনিসকে আঁকড়ে ধরতে হবে৷ তাতেই মিলবে সফলতা৷ স্নাতক ডিগ্রি প্রদানের এই ভার্চুয়াল ইভেন্টে সুন্দর পিচাই ছাড়াও ছাত্র-ছাত্রীদের উদ্দেশ্যে বক্তব্য রাখেন প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা, প্রাক্তন মার্কিন ফার্স্টলেডি মিশেল ওবামা, সঙ্গীতশিল্পী লেডি গাগা, নোবেলজয়ী মালালা ইউসফজাই৷