কলকাতা: করোনা ভাইরাসের অতিমারী যখন থেকে বিশ্বের দরবারে তার ধ্বংসলীলা শুরু করেছিল, তখন থেকেই একনাগাড়ে কড়া স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলার বিধান দিয়ে এসেছেন চিকিৎসকরা। পথে ঘাটে মাস্ক পড়ে থাকার পাশাপাশি বারবার সাবান দিয়ে হাত ধোয়ার কথাও বলা হয়েছিল। আর তা থেকেই শুরু হয়েছিল হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহারের ধুম। কিন্তু হরদম স্যানিটাইজার ব্যবহার কতটা নিরাপদ? উঠেছে সেই প্রশ্নও।
বস্তুত, হাত জীবানুমুক্ত রাখতেই হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার করা হয়ে থাকে। কিন্তু অতিরিক্ত স্যানিটাইজারের ব্যবহারও ডেকে আনতে পারে বিপদ। স্যানিটাইজারের নানা পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার ফলে ত্বক ও শরীরের নানা ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে। আসুন জেনে নেওয়া যাক স্যানিটাইজারের বহুল ব্যবহারে ঠিক কী কী সমস্যা দেখা দিতে পারে।
১) অতিমারী আবহে ত্বকের উপর অত্যধিক পরিমাণ স্যানিটাইজার ব্যবহার করলে চুলকানির সমস্যা হতে পারে। বিজ্ঞানের ভাষায় এর নাম ডার্মাটাইটিস বা এগজিমা। এর ফলে ত্বক লালচে এবং রুক্ষ হয়ে যায়, এমনকি ফেটেও যেতে পারে।
২) স্যানিটাইজারের মধ্যেকার এথিল অ্যালকোহল সাধারণত অ্যান্টিসেপটিক হিসেবে কাজ করে। কিন্তু কিছু কিছু স্যানিটাইজারে অ্যালকোহলের পরিবর্তে ব্যবহৃত হয় ট্রাইক্লোসন বা ট্রাইক্লোকার্বনের মতো অ্যান্টিবায়োটিক। এই ট্রাইক্লোসন যৌন ক্ষমতাকে প্রভাবিত করে বলেই মত একাধিক বিশেষজ্ঞের।
৩) শুধু মাত্র যৌন ক্ষমতাই নয়, অ্যালকোহল বিহীন হ্যান্ড স্যানিটাইজারে ব্যবহৃত ট্রাইক্লোসন বিভিন্ন হরমোনজনিত সমস্যার জন্যেও দায়ী।
৪) এছাড়া কিছু কিছু স্যানিটাইজারে ক্ষতিকর নানা রাসায়নিক ব্যবহার করা হয়ে থাকে যার ফলে বমি, মাথা ঘোরা, অনিদ্রা, দৃষ্টিহীনতা প্রভৃতি রোগ লক্ষণ দেখা যায়।
৫) এক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য বিভিন্ন স্যানিটাইজারে সুগন্ধি হিসেবে ব্যবহৃত হয় পথালেটস ও প্যারোবেন্সের মতো বিষাক্ত রাসায়নিক।এই রাসায়নিক গুলি। ব্যক্তির হরমোন ও প্রজনন ক্ষমতায় সমস্যা তৈরি করে।
৬) স্যানিটাইজারে অ্যালকোহল ব্যবহারের ফলেও দেখা দিয়েছে নানা সমস্যা। অ্যালকোহলের বিষক্রিয়ার দ্বারা প্রভাবিত হয়েছে কিশোর কিশোরীরা।
সবমিলিয়ে চিকিৎসকের কথা শুনে চোখ বুজে দেদার হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার করে যাওয়ার দিন যে শেষ, তা বলাই বাহুল্য।