কলকাতা: আর কয়েক সপ্তাহের অপেক্ষা, তারপর এই বিরাট নির্বাচন বাংলায়। আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ইতিমধ্যেই সরগরম গোটা রাজ্য। একে অপরকে এক ইঞ্চি জায়গা ছাড়তে রাজি নয় কেউ। তবে ধর্মের রাজনীতি প্রসঙ্গে বিজেপিকে বারংবার তোপ দাগছে বিরোধীরা। এবার হয়তো সেই অভিযোগ ঘোঁচাতে পদক্ষেপ নিয়েছে বঙ্গ বিজেপি। পক্ষান্তরে আব্বাস সিদ্দিকি এবং আসাউদ্দিন ওয়েইসিকে সমর্থন করছে তারা! অন্তত বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের কথায় তেমনই ইঙ্গিত মিলছে।
এদিন হাওড়ার এক জনসভায় দিলীপ ঘোষ মন্তব্য করেন, বাংলায় মুসলিমরা প্রকৃত অধিকার থেকে বঞ্চিত। তাদের উন্নয়নে রাজ্য সরকার কোনো কাজ করেনি। কিন্তু ভারতীয় নাগরিক হিসেবে প্রত্যেকের সমান অধিকার রয়েছে। এই প্রসঙ্গে দিলীপ বলেন, সকলের মত আব্বাস সিদ্দিকি এবং আসাউদ্দিন ওয়েইসিদেরও অধিকার রয়েছে। সেই কারণেই তারা এখন নিজেদের মতো লড়াই করতে শুরু করেছেন। দিলীপ ঘোষের এই মন্তব্যের ওপর ভিত্তি করে আদতে সংখ্যালঘু দরদী হিসেবে নিজেদের প্রমাণ করতে চাইল বিজেপি, নাকি পুরোটাই প্রত্যক্ষ সমর্থন, সে ব্যাপারে এখন বিস্তর বিতর্ক চলতেই পারে। অবশ্য এই কথা বলে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের বিরুদ্ধে কটাক্ষ করেন দিলীপ ঘোষ। বাংলার মুসলিম মহল রাজনীতির শিকার, এই অভিযোগ ফের একবার তোলেন তিনি।
তবে এই মন্তব্যের পর জাতীয় বিতর্ক সৃষ্টি না হয় সেই কারণে হয়তো আরো একটা ব্যাপার পরিষ্কার করে দেন দিলীপ ঘোষ। তিনি বার্তা দেন, তৃণমূল সরকারের মতো তারা কারুর তোষণ করেন না, কেউ যদি মনে করে তাদের ভোট দেবে তারা দেয়, কেউ যদি ভোট না দেওয়ার কথা ভাবে তারা দেয় না। আসলে, আসাউদ্দিন ওয়ইসির দল মিমকে বিজেপির ‘বি টিম’ বলে কটাক্ষ করে বিরোধীরা। সেই কারণেই বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের এই মন্তব্য পরোক্ষভাবে ইঙ্গিত দেয় যে বিজেপি আদতে মিমকে সমর্থন করছে। এইভাবে বিরোধীরা আরো বিজেপিকে আক্রমণ করতে শুরু করবে তা বলাই বাহুল্য। প্রসঙ্গত, বাংলা বিধানসভা নির্বাচনে লড়াই করবে বলে আগেই জানিয়েছিলেন আব্বাস সিদ্দিকী এবং আসাউদ্দিন ওয়েইসি। এমনকি আব্বাস এও জানিয়েছেন তারা নতুন দল করছেন এবং তিনি সংখ্যালঘু মহাজোটের বার্তা দিয়েছেন। এর পাশাপাশি বাম এবং কংগ্রেস জোটকেও তাদের স্বাগত জানানোর বার্তা দেওয়া হয়েছে। সব মিলিয়ে পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচনের প্রাক্কালে বঙ্গে ভোট রাজনীতি প্রবল উত্তাপ ছড়াচ্ছে।