কলকাতা: ভ্যাকসিনের খোঁজ মিললেও দেশে করোনা আতঙ্ক এখনও পুরোপুরি কমেনি। এখনও বহু রাজ্যে করোনার আতঙ্ক রয়েছে৷ তার মধ্যেই এবার নতুন এক আতঙ্ক। ভারতে দাবানলের মতো ছড়িয়ে পড়ছে বার্ড ফ্লু বা অ্যাভিয়েঞ্জা ইনফ্লুয়েঞ্জা। ইতিমধ্যেই দিল্লি, উত্তরপ্রদেশ, কেরল-সহ মোট ১০ রাজ্যে সংক্রমণের খোঁজ পাওয়া গিয়েছে। পাওয়া গিয়েছে মৃত হাঁস ও মুরগী।
সংক্রমণ বেলাগাম হয়ে যাওয়ার আগেই পশ্চিমবঙ্গে সতর্কতা জারি করেছে স্বাস্থ্য দফতর। তবে বিশেষজ্ঞদের মতে, বার্ড ফ্লু নিয়ে অযথ ভয় পাওয়ার কিছু নেই। কয়েকটি প্রাথমিক সাবধানতা অবলম্বন করে চললেই প্রতিরোধ করা যাবে এই ফ্লু’কে। কিন্তু কতটা ক্ষতিকর এই ফ্লু? অ্যাভিয়েঞ্জা ইনফ্লুয়েঞ্জা একটি ভাইরাসঘটিত সংক্রামক রোগ, যা মূলত হাঁস, মুরগী-সহ অন্যান্য পাখিদের মধ্যে দেখা যায়।
বিশেষজ্ঞদের কথায়, সাধারণত সংক্রমিত পরিযায়ী পাখি ও হাঁস জাতীয় জলাশয়ের পাখির মল থেকে এই ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ে। চলতি বছরে ভারতে বার্ড ফ্লু পরিযায়ী পাখিদের হাত ধরে পশ্চিম উপকূল দিয়েই ঢুকেছে বলে ধারণা অধিকাংশ বিজ্ঞানীদের। কতটা ভয়ঙ্কর এই ভাইরাস? বার্ড ফ্লু-এর প্রকোপ তার প্রজাতির উপর নির্ভর করে। কোনও প্রজাতির সংক্রমণে কেবল ডিম পাড়ায় অসুবিধা ও অন্য কোনও রোগে আক্রান্ত হতে পারে। আবার কোনও প্রজাতির সংক্রমণে পাখির মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, এবারে ভারতে এইচ৫এন১ প্রজাতির ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ছে, যা পাখিদের জন্য বেশ ক্ষতিকর।
তবে বিশেষজ্ঞরা এক কথায় সুখবর দিয়েছেন, মানুষের মধ্যে এই ফ্লু-এর সংক্রমণের আশঙ্কা খুবই ক্ষীণ। আর এই ফ্লু-এর ভয়ে হাঁস ও মুরগীর ডিম-মাংস খাওয়া বন্ধ করারও কোনও প্রয়োজন নেই। তবে কয়েকটি ছোট ছোট সাবধানতা মেনে চললে ভালো হয়। বাজার থেকে ডিম ও মাংস নিয়ে এসে রান্নার আগে আগে আলাদাভাবে ভালো করে ধুয়ে নিতে হবে। সেই সময়ে আশপাশে অন্য কোনও খাবার রাখা যাবে না। ধুয়ে নেওয়ার পর হাত-মুখ ভালো করে সাবান দিয়ে ধুয়ে নিতে হবে। তারপরে ভালো করে সেদ্ধ করে নিলেই হবে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েছে, রান্নার তাপে ভাইরাস মরে যায়। তাই রান্না করা খাবার খেয়ে আক্রান্ত হওয়ার কোনও সম্ভাবনা থাকে না।
তবে অতিরিক্ত সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে খামারে পাখিদের নিয়ে কাজ করার সময়। যারা খামারে পাখিদের সঙ্গে সরাসরি সংস্পর্শে আসেন তাদের সংক্রমিত হওয়ার আশঙ্কা থাকে। তাই কাজের সময় হাতে গ্লাভস, মুখে মাস্ক ও ফেস শিল্ড, পা ঢাকা জুতো ব্যবহার করতে হবে। সুবিধা হলে পিপিই কিট ব্যবহার করা যেতে পারে। কাজের সময়ে কিছু খাওয়া বা ধূমপান একদম নয়। কাজের পরে জীবাণুনাশক দিয়ে কাজের সরঞ্জাম ও হাত-পা ধুয়ে নিতে হবে।