এক ফোনেই চলছে ক্লাস! করোনাকালে অভিনব শিক্ষা ‘স্কুল কি ঘণ্টি’ তরুণীর

এক ফোনেই চলছে ক্লাস! করোনাকালে অভিনব শিক্ষা ‘স্কুল কি ঘণ্টি’ তরুণীর

ব্যাঙ্গালুরু: বিশ্বজোড়া করোনা অতিমারীর সর্বাত্মক প্রভাবে শুধু স্বাস্থ্যই নয়, বিপর্যস্ত হয়েছে প্রায় সব ক্ষেত্রই। বিশেষত ভারতের শিক্ষা ব্যবস্থায় করোনার প্রকোপটা চোখে পড়ার মতো ভয়ানক। করোনা মোকাবিলায় গত বছরের মার্চ থেকে দেশ জুড়ে ঘোষিত হয়েছিল সম্পূর্ণ লকডাউন। আর তারপর থেকেই বন্ধ সমস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। অনলাইন মাধ্যমেই চলছে পঠনপাঠন প্রক্রিয়া।

অনলাইন ক্লাসের এই যুগে লেখাপড়াকে ছোটোদের কাছে পৌঁছে দেওয়ার এক অভিনব পন্থার নাম ‘স্কুল কি ঘন্টি’। এই বিশেষ ব্যবস্থায় অবিকল স্কুল চত্বরের সময় নির্দেশক ঘন্টার মতো শব্দে বেজে ওঠে মোবাইল ফোন। আর তারপর ফোন ধরলেই শুরু হয় ‘ক্লাস’। বর্তমানে দেশ জুড়ে প্রায় ৭টি রাজ্যের অন্তত ৭০০ জন পড়ুয়া এই ‘স্কুল কি ঘন্টি’তে পড়াশোনা চালাচ্ছে, এমনটাই জানা গেছে সূত্রের খবরে।

‘স্কুল কি ঘন্টি’ নামক এই অভিনব ব্যবস্থাটি চালু করেছেন বেদিকা লাল নামক এক তরুণী। কীভাবে কাজ চলে এতে? বছর তেইশের ওই তরুণী জানিয়েছেন, “আমরা অডিও ফরম্যাটে পড়াশোনার জন্য বিভিন্ন ছোটো ছোটো মডিউল তৈরি করি। বাচ্চাদের কাছে সেগুলিকে আকর্ষণীয় করে তোলার জন্য তাতে যুক্ত করি নানারকম সাউন্ড এফেক্ট। এইভাবে আগে থেকে রেকর্ড করে রাখা বিষয়টি এরপর একটি ভয়েস ব্রডকাস্টিং ড্যাশবোর্ডে আপলোড করা হয়। সেখানেই থাকে বাচ্চাদের মোবাইল নম্বরও।” একটি নির্দিষ্ট সময়ে নথিভুক্ত মোবাইল নম্বরগুলিতে ফোন যায়। এবং এই ‘ঘন্টি’ শুনতে পেয়ে ফোন তুললেই ক্লাস শুরু হয় বলে জানিয়েছেন বেদিকা লাল।

সোম থেকে শুক্র মূলত ৬ থেকে ১২ বছর বয়সী বাচ্চাদের ক্লাস নেওয়া হয় ‘স্কুল কি ঘন্টি’তে। এই ব্যবস্থার মূল উদ্যোক্তা বেদিকা লাল ব্যাঙ্গালোরের একটি প্রতিষ্ঠান থেকে গ্র্যাজুয়েট হন। কীভাবে অডিও মাধ্যমে শিক্ষাদানের এই পদ্ধতি মাথায় এল? বেদিকা জানান, কয়েকবছর আগে রাজস্থানে সমাজকর্মী অরুনা রায় এবং শঙ্কর সিংয়ের একটি ঘটনা রেকর্ড করছিলেন তিনি। তখনই রেডিও এবং শব্দ রেকর্ডিংয়ের অসীম শক্তি সম্বন্ধে অবগত হন বেদিকা। “চারপাশে যা চলছে তা বদলে দেওয়ার জন্য গলার আওয়াজটা জোরদার করা খুব প্রয়োজন”, জানান বেদিকা লাল। লকডাউন কালে পাটনায় নিজের বাড়ি ফেরেন বেদিকা। এই সময় চারিদিকে স্কুল কলেজ বন্ধ থাকায় ঘরে ঘরে শিক্ষা পৌঁছে দিতে উদ্যোগী হন তিনি। নানা স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করে গড়ে তোলেন ‘স্কুল কি ঘন্টি’।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *