কলকাতা: মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আশ্বাস কি তবে বিফলে যেতে চলেছে? তেমনই ইঙ্গিত দিয়ে ফের মামলা গড়াল হাইকোর্টে৷ ১৬ হাজার ৫০০ শূন্যপদে প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগের বৈধতাকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে উঠল মামলা৷ মামলার শুনানিতে তাৎপর্যপূর্ণ মন্তব্য আদালতের৷
‘রাতারাতি নিয়োগ হলে পদক্ষেপ করবে হাইকোর্ট, প্রাথমিকের ১৬৫০০ শূন্যপদে নিয়োগ নিয়ে হাইকোর্টের তাৎপর্যপূর্ণ মন্তব্য ঘিরে তৈরি হয়েছে চর্চা৷ ‘‘মালদহ, বাঁকুড়া ৬ ঘণ্টায় ইন্টারভিউ প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ করে দেওয়া হয়েছে৷ রবিবার ইন্টারভিউ শেষদিন৷ ওইদিন রাতেই নিয়োগ তালিকা প্রস্তুত করে দেওয়ার আশঙ্কা রয়েছে৷’’ মামলার সওয়াল মামলাকারীদের আইনজীবীর৷ ‘‘রাতারাতি নিয়োগ তালিকা প্রস্তুত হলে, হাইকোর্টও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করবে৷’’ সাফ জানিয়ে দিয়েছেন বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজ৷ টেট সংক্রান্ত সব মামলার শুনানি সোমবার৷ ওই দিন ৩-৪ টি ক্যাটাগোরিতে টেট মামলা শুনবে আদালত৷ স্বাভাবিক ভাবেই টেট নিয়ে নতুন করে তৈরি হয় অনিশ্চয়তা৷
ন্যাশনাল স্কুল অফ টিচার এডুকেশনের গাইডলাইন অনুযায়ী, প্রতিবছর রাজ্যের শূন্য পদে শিক্ষক নিয়োগের জন্য টেট পরীক্ষা নিতে হবে৷ কিন্তু অভিযোগ, রাজ্য সরকার সেই এনসিটিই গাইডলাইন না মেনে ২০১৪ সাল থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত দীর্ঘ ৬ বছর কোনও পরীক্ষা নেয়নি৷ অথচ ২০১৪ সালের টেট পরীক্ষায় যারা যোগ্যতার কারণে চাকরি পাননি, তাদের পুনরায় নিয়োগের জন্য ২৩ ডিসেম্বর বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে বলে অভিযোগ৷ যা সম্পূর্ণ অবৈধ এবং ন্যাশনাল স্কুল অফ টিচার এডুকেশনের গাইডলাইনের পরিপন্থী বলে তোলা হয়েছে অভিযোগ৷ আজ ছিল সেই মামলার শুনানি৷
মামলাকারী বিবেক গাজীর পক্ষের আইনজীবী আশীষ কুমার চৌধুরী বলেন, রাজ্য সরকার এই ১৬,৫০০ পদে নিয়োগ সম্পূর্ণ করে তাহলে ২০২১ সালে আর কোন প্রাইমারি শিক্ষক পদে নিয়োগের জন্য কোন শূন্যপদ থাকছে না৷ তাহলে কি কারণে ৩১ জানুয়ারি যে টেট পরীক্ষা হতে চলেছে রাজ্যজুড়ে তা কোন শূন্যপদের জন্য, সেটা স্পষ্ট নয়৷ আশিষবাবু আর জানান, ২০১৪ সালে প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় সফল হয়েছিলেন, তাদের নিয়োগ সম্পূর্ণ হয় ২০১৫ সালে৷ কিন্তু কিছু টেট পাস করা প্রার্থী ছিল, তাদের প্রফেশনাল কোয়ালিফিকেশন অর্থাৎ ডিএড এবং ডিএলডি না থাকায় তারা অসফল হন। পরবর্তীকালে তারা তাদের ডিএড কোর্স সম্পন্ন করেন। এরমাঝে রাজ্য সরকার ২০১৪ সাল থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত কোন টেট পরীক্ষা নেয়নি৷ ২০১৭ সালের টেট পরীক্ষার বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়৷ কিন্তু, রাজ্য সরকার উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবেই কোনও পরীক্ষা নেয়নি বলে অভিযোগ। ন্যাশনাল স্কুল অফ টিচার এডুকেশনের গাইডলাইন বলা আছে, প্রতিবছর রাজ্য সরকারের রাজ্যের শিক্ষকের শূন্য পদে নিয়োগের জন্য টেট পরিক্ষা বাধ্যতামূলক। এনসিটির গাইডলাইন না মেনে ২০১৪ সাল থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত এই দীর্ঘ ৬ বছর কোন পরীক্ষা দেয়নি রাজ্য সরকার। অথচ ২০১৪ সালের টেট পরীক্ষায় যারা যোগ্যতার কারণে চাকরি পাননি, তাদের পুনরায় নিয়োগের জন্য ২৩ ডিসেম্বর ২০২০ সালে বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়, যা সম্পূর্ণ অবৈধ এবং ন্যাশনাল স্কুল টিচার এডুকেশনের গাইডলাইনের পরিপন্থী ও সংবিধানের ১৪ এবং ১৬ নম্বর ধারার পরিপন্থী বলে দাবি আইনজীবীর৷