কলকাতা: দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর নিজের মনের কথা সকলের সামনে খুলে বললেন বনমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। শনিবার দুপুরে তাঁর নিজের ফেসবুক পেজ থেকে লাইভ করেন ডোমজুড়ের তৃণমূল বিধায়ক৷ লাইভে এদিন তিনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিজের অনুপ্রেরণা কারণ বলে মনে করেন বলেন, তাঁকে সামনে রেখে কাজ করতে গিয়ে বাধা আসছে তাঁর চলার পথে৷ এই নিয়ে নিজের ক্ষোভ জাহির করেন বনমন্ত্রী৷
এদিনের ফেসবুক লাইভে তিনি নিজের ক্ষোভের মাঝেও তার সমর্থকদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘‘এখনও ধৈর্যচ্যুতি ঘটেনি। ধৈর্যের পরীক্ষা দিচ্ছি। আপনাদের জন্য ধৈর্য ধরে রেখেছি৷’’ এছাড়াও এদিন তিনি ২০২১ সাল গুরুত্বপূর্ণ বলে জানিয়ে সমর্থকদের উপর ভরসা রাখার অনুরোধ করেন৷ এর মাধ্যমে কি বোঝাতে চাইলেন বনমন্ত্রী? ফেসবুক লাইভ থেকে কিছুটা অভিমানী সুরে রাজীব বলেন, তাঁর মনের এই ক্ষোভের কথা তিনি কিছু নেতাকে জানালেও তারা সেই কথা অন্যদিকে ঘুরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছেন৷ এরপর তিনি বলেন, ‘‘এটাই আমাকে দুঃখ দেয়৷’’ এছাড়াও দলীয় কার্যকলাপের মধ্যে স্বাধীনতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে ডোমজুড়ের বিধায়ক বলেন, ‘‘আমি কী করতে চাইছি, কী বলতে চাইছে, কোনও কিছু বলতে পারব না আমি? গণতন্ত্রে মানুষই শেষ কথা। স্বাধীনভাবে চলতে চাই। আমার দুঃখ, যখন সত্যিকারের ভাল কাজ করার চেষ্টা করছি, কতিপয় কিছু নেতা এটার অপব্যাখ্যা করেন, এটাই কষ্ট লাগে৷’’
এদিন লাইভ থেকে রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, দলের মধ্যে কর্মীদের সম্মান থাকাটা খুব জরুরি। এই প্রসঙ্গে তিনিও তার নিচুতলার কর্মীদের উদাহরণ টেনে বলেন, ‘‘আমার কর্মীদের হতাশা আমি বুঝি৷ কর্মীরা শুধু একটু সম্মান চান৷ কেউ বলতে পারবে, কোনও কর্মী আমার থেকে দুর্বব্যহার পেয়েছে? কর্মীদের জন্যই সবকিছু৷’’ এই মন্তব্যে যে তিনি নিজের উপর হওয়া অসম্মানের কথা বলতে চাইলেন সে বিষয়ে সন্দেহ নেই৷ এদিকে রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রসঙ্গে তৃণমূল নেতা ফিরহাদ হাকিমকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘‘রাজীব আমার ছোটভাই৷ ও ভালোভাবে কাজ করুক এটা চাই৷ ওরাই দলের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম৷’’ এক্ষেত্রে রাজীবকে ঘরে ফেরাতে আগ্রহী তৃণমূল, সেটা স্পষ্ট করেন তিনি৷
উল্লেখ্য, দিনের পর দিন তৃণমূলের অন্দরমহলে ক্ষোভ ও অভিমানের রেশ বৃদ্ধি পাচ্ছে৷ এদিকে শতাব্দীকে ঘরে ফেরাতে পারলেও ফুঁসছেন প্রসূন৷ তারপরেই রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের লাইভ, সব মিলে ভোটের আগেই ডামাডোল তৃণমূলের অন্দরে৷