কলকাতা: ভোট পূর্ববর্তী পশ্চিমবঙ্গে শিক্ষক নিয়োগ তথা শিক্ষা সংক্রান্ত নানা বিষয়ে দানা বেঁধেছে বিতর্ক। এই সুযোগে শিক্ষক মহলের অসন্তোষকে উস্কে দিয়ে সরকারের বিরুদ্ধে আক্রমণে সামিল হয়েছে বিরোধী দলগুলিও। প্রাথমিক মাধ্যমিক তথা উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে শিক্ষকদের নিয়োগ, বেতন বৃদ্ধি, লস্ট ইনক্রিমেন্ট চালু প্রভৃতি বিবিধ দাবির পাশাপাশি এবার সামনে এল শিক্ষকদের বদলি সংক্রান্ত অসন্তোষও।
মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষক তথা শিক্ষা কর্মীদের জেনারেল ট্রান্সফার সিস্টেম চালু হয়নি আজও। অভিযোগ, দীর্ঘ দিন ধরেই এই প্রক্রিয়া চালু হওয়ার কথা। কিন্তু অনিবার্য কারণে তা ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। বলা হচ্ছে, স্পেশাল গ্রাউন্ডের ট্রানস্ফারকেই জেনারেল ট্রান্সফারের হিসাবে দেখানো হচ্ছে। এ নিয়ে স্বভাবতই শিক্ষক মহলে ক্ষোভ জমেছে। এদিন শিক্ষক-শিক্ষাকর্মী-শিক্ষানুরাগী ঐক্য মঞ্চের রাজ্য সম্পাদক কিংকর অধিকারী সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে এ বিষয়ে লিখিত আবেদনও জানিয়েছেন বলে জানা গেছে৷
বস্তুত রাজ্যে শিক্ষকদের জেনারেল ট্রান্সফার বন্ধ রয়েছে সেই ২০১৪ সাল থেকে। সেই সঙ্গে গত ৬ বছর ধরে স্পেশাল গ্রাউন্ডে বদলির জন্য আবেদন জমা নেওয়া হচ্ছে কোনোরম নোটিফিকেশন ছাড়াই। সূত্রের খবর, গত ১৫ জানুয়ারি স্পেশাল গ্রাউন্ডের ট্রানস্ফারের তালিকা প্রকাশ করা হলেই ক্ষোভ উগরে দেন শিক্ষক শিক্ষিকারা। তাঁদের অভিযোগ, ১৫ জানুয়ারি স্পেশাল গ্রাউন্ডের ট্রানস্ফারের যে তালিকা প্রকাশিত হয়েছে, তার শিরোনামে রয়েছে জেনারেল ট্রান্সফার। এতে দেখা গেছে মাত্র ১ কিলোমিটার দূরত্বের মধ্যেই বদলি করা হয়েছে শিক্ষক শিক্ষিকাদের। এদিকে বাড়ি থেকে বহু দূরে রয়েছেন যে সমস্ত শিক্ষা কর্মীরা, দীর্ঘদিন ধরে তাঁরা অপেক্ষা করে আছেন বদলির। বাড়ির কাছের বিদ্যালয়ে আসার জন্য কার্যত উদগ্রীব তাঁরা। ধীরে ধীরে তাঁদের ধৈর্য্যের বাঁধ ভাঙছে। যদিও সে ব্যাপারে শিক্ষা দফতর নজর দিচ্ছে না বলেই অভিযোগ করেছেন বদলিপ্রার্থী শিক্ষকরা।
শুধুমাত্র ট্রান্সফার আবেদনে অবজ্ঞাই নয়, শিক্ষা দফতরের বিরুদ্ধে এদিন আরো গুরুতর অভিযোগ এনেছে শিক্ষক সংগঠন। তাঁদের দাবি, অনেক শিক্ষক-শিক্ষিকাই নিয়ম মেনে আবেদন করেননি। কিন্তু কোনোরকম আবেদন না করে থাকলেও তাঁদের ট্রান্সফারের তালিকায় নাম বেরিয়েছে। এর ফলে শিক্ষা দফতরে বিরুদ্ধে বদলি ক্ষেত্রে দুর্নীতির অভিযোগ জোরালো করছেন শিক্ষকদের একাংশ৷ শিক্ষা দফতরের বিরুদ্ধে এদিন বদলি সংক্রান্ত একাধিক অভিযোগে সোচ্চার হয়েছে রাজ্যের শিক্ষকদের সংগঠন। অবিলম্বে স্বচ্ছতার সঙ্গে শিক্ষক শিক্ষিকা ও শিক্ষাকর্মীদের বদলির জন্য আবেদনের ভিত্তিতে জেনারেল ট্রান্সফারের প্রক্রিয়া চালু করতে হবে, চিঠিতে এমনটাই দাবি করেছেন কিংকর অধিকারী। সেই সঙ্গে শিক্ষা দফতরের দুর্নীতি নিয়েও তিনি বিস্ময় প্রকাশ করেছেন।