কলকাতা: করোনা ভাইরাসের মারণ থাবার রেশ কাটিয়ে ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হচ্ছে জনজীবন। ভ্যাকসিনের আশ্বাসে এখন স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছেন দেশের মানুষ। করোনা মোকাবিলায় লকডাউন কালে যে অচলাবস্থা তৈরি হয়েছিল দেশের মাটিতে, তাও কেটে গেছে। এই আবহে এবার একরাশ খুশি নিয়ে দীর্ঘদিন পর স্কুলে গেল দিল্লির পড়ুয়ারা।
দীর্ঘ ১০ মাস পর সোমবার থেকে দেশের রাজধানীতে খুলেছে স্কুল। করোনা স্বাস্থ্য বিধির সতর্কতার সঙ্গে সঙ্গেই দশম ও দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়ারা স্কুলে গেছে। স্কুলে তাদের স্বাগত জানানোর জন্য মাস্ক স্যানিটাইজার ছাড়াও ছিল বেলুন ফুল আর অনেক অনেক হাসিমুখ। এদিন স্কুলে ঢোকার আগে মাস্ক পড়ে পড়ুয়ারা সদর দরজার বাইরে লম্বা লাইন করে দাঁড়িয়েছিল। সবটাই হয়েছিল স্বাস্থ্য দফতর নির্দেশিত সামাজিক দূরত্ব বিধি মেনে। দিল্লিতে এটাই মরশুমের প্রথম অফলাইন ক্লাস।
এতগুলি দিন পড়ে স্কুলে স্কুলে পড়ুয়াদের ভিড় দেখে আপ্লুত হয়ে পড়েন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল। এদিন সোশ্যাল মিডিয়ায় তিনি নিজের অনুভূতি নেটিজেনদের সঙ্গে ভাগ করে নেন। নিজের ট্যুইটার হ্যান্ডেল থেকে তিনি লেখেন, ‘‘এত দিন পর বাচ্চাদের স্কুলে যেতে দেখে আমি আপ্লুত। কঠিন সময়কে পিছনে ফেলে রেখে অবশেষে আজ থেকে স্কুল খোলা হল। আমরা আশা করছি যে খুব শিগগিরই সবকিছু স্বাভাবিক হয়ে যাবে, সমস্ত ছাত্রছাত্রীরাই আবার স্কুলে এসে শিক্ষক শিক্ষিকা আর বন্ধুদের সঙ্গে দেখা করতে পারবে।’’
দিল্লির স্কুলের এক জনৈক দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রী প্রগতি দিওয়ানের কথায়, ‘‘স্কুলে আসাটা বাধ্যতামূলক ছিল না। কিন্তু আমি আসতামই। এটাই আমার স্কুলজীবনের শেষ বছর, আর আমি এখনও পর্যন্ত একদিনও স্কুলেই আসিনি। অপর এক জনৈক ছাত্রীর কথায়, ” স্কুলে এসে মনেই হচ্ছে না যে এতদিন আসি নি। এখানে বোর্ডের পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নেওয়ার জন্য মুখিয়ে আছি।’’ করোনা প্রভাবিত রাজধানী দিল্লিতে স্কুল খুলে গেলেও বাংলায় নয় কেন? সরব শিক্ষকদের একাংশ৷ স্বাস্থ্যবিধি মেনে অবিলম্বে অন্ততপক্ষে দশম এবং দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রছাত্রীদের জন্য পঠন-পাঠনের চালুর দাবিতে বুধবার বিকাশ ভবনে শিক্ষা দফতরের কর্তাদের কছে ডেপুটেশন দেওয়ার কর্মসূচি নিয়েছে শিক্ষক শিক্ষাকর্মী শিক্ষানুরাগী ঐক্য মঞ্চের প্রতিনিধিরা৷ যদিও, যথা সময়ে বাংলায় স্কুল খোলা হবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়৷
প্রসঙ্গত, করোনা অতিমারীর আবহে গত বছরের মার্চ মাসে সারা দেশে শুরু হয়েছিল লকডাউন। আর তারপর থেকেই যথারীতি বন্ধ হয়ে যায় স্কুল কলেজ। আনলক প্রক্রিয়ায় বাকি সব দিক স্বাভাবিক হলেও শিশু কিশোরদের জীবনের ঝুঁকি নিতে চায় নি সরকার। তাই স্কুল খোলায় এই বিলম্ব।