কলকাতা: বিধানসভা নির্বাচনের আর তিন মাসও বাকি নেই। ভোট যে দরজায় কড়া নাড়ছে পশ্চিমবঙ্গের রাজনৈতিক আবহেই রয়েছে তার প্রমাণ। প্রায় প্রতিদিনই কোনো না কোনো বিষয়কে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত বাদানুবাদে জড়াচ্ছেন শাসক ও বিরোধী দলের নেতারা। প্রাক- নির্বাচনী এই আবহে মুহুর্মুহু আক্রমণে শাসকদলকে পর্যুদস্ত করতে শুভেন্দু অধিকারীর জুড়ি নেই।
শুভেন্দু অধিকারী মাস কয়েক আগেও বঙ্গ রাজনীতিতে পরিচিত ছিলেন তৃণমূল কংগ্রেসের হেভিওয়েট নেতা হিসেবে। এমনকি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছের লোক হিসেবেও নন্দীগ্রামের এই নেতার পরিচিতি ছিল। কিন্তু একুশের বিধানসভা নির্বাচন যতই এগিয়ে আসতে থাকে, ততই ক্রমশ দলের সঙ্গে দূরত্ব বাড়তে থাকে রাজ্যের প্রাক্তন পরিবহন মন্ত্রীর। এহেন শুভেন্দু অধিকারীর গেরুয়া শিবিরে যোগদানকে কিন্তু খুব একটা আকস্মিক মনে করলে ভুল হবে। বরং স্কুল জীবন থেকেই গেরুয়া রাজনীতির সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগ ছিল তাঁর।
এদিন সংবাদমাধ্যমের কাছে এক সাক্ষাৎকারে শুভেন্দু অধিকারী নিজেই স্বীকার করেন তাঁর পূর্বতন আরএসএস (RSS) যোগ। তিনি বলেন, “সংঘের সঙ্গে কাজ করলেই যে বিজেপিতে যেতে হবে ,এমনটা নয়। আমি অষ্টম, নবম ও দশম শ্রেণিতে থাকাকালীন কাঁথিতে সংঘের শাখায় ট্রেনিং নিতে যেতাম। তাতে শরীর গঠন হয়। মনের বিকাশ হয়। দেশপ্রেম জাগ্রত হয়। জাতীয়তাবাদের উন্মেষ ঘটে।” আরএসএস-এর সঙ্গে সরাসরি বিজেপির যোগ ছিল না বলেও জানিয়েছেন তিনি।
এদিনের সাক্ষাৎকারে সংঘের প্রশংসায় পঞ্চমুখ ছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। তাঁর কথায়, “আরএসএস পৃথিবার সবচেয়ে বড় এনজিও। দেশভক্তিই তার কাছে সব। আমি আমার স্কুলজীবনে গেছি। কিন্তু ওরা কখনও শেখায়নি এই রাজনৈতিক দল করতে হবে। বিজেপির সঙ্গে এর কোনও সরাসরি সম্পর্ক নেই।” কলেজে পড়াকালীন শুভেন্দু অধিকারীর একজন শিক্ষক ছিলেন আরএসএস-এর প্রচারক। তাঁর সঙ্গেও ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ ছিল বলে জানিয়েছেন তিনি।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, আগামী বিধানসভা নির্বাচনে শুভেন্দু অধিকারীর ‘গড়’ নন্দীগ্রাম থেকে শাসকদলের হয়ে লড়াই করবেন স্বয়ং তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই ঘোষণার পর থেকেই রাজ্য রাজনীতিতে নন্দীগ্রাম নিয়ে ফের শুরু হয়েছে চর্চা। মুখ্যমন্ত্রীকে হুমকি দিয়ে পাল্টা চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়েছেন শুভেন্দু বাবুও।