কলকাতা: পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা নির্বাচনের আর আড়াই মাসও বাকি নেই। রাজ্য জুড়ে তাই ভোটের জন্য শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি তুঙ্গে। ইতিমধ্যে রাজ্যের ভোট পূর্ববর্তী নিরাপত্তা খতিয়ে দেখতে কলকাতায় এসেছেন নির্বাচন কমিশনের প্রতিনিধিরা। এদিন সেই সূত্রেই মুখ্য নির্বাচন কমিশনারের সঙ্গে বৈঠক করলেন মুখ্যসচিব সহ অন্যান্যরা।
রাজ্যের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক শেষে এদিন আসন্ন নির্বাচন নিয়ে একগুচ্ছ নির্দেশিকা জারি করেছে কমিশন। মুখ্য নির্বাচন কমিশনার সুনিল আরোরা বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সামনে নতুন নির্দেশিকা এবং ভোট সংক্রান্ত তাঁদের পর্যবেক্ষণ জানিয়েছেন। এদিনের বৈঠকে মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন স্বরাষ্ট্র সচিব হরেকৃষ্ণ ত্রিবেদী, স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণ স্বরূপ নিগম, রাজ্য পুলিশের ডিজি বীরেন্দ্র এবং কলকাতা পুলিশ কমিশনার অনুজ শর্মা।
ঠিক কী কী নির্দেশ দিয়েছে নির্বাচন কমিশন? জানা গেছে, এবার ভোট চলাকালীন নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে কোনোরকম সিভিক, গ্রিন পুলিশ বা বেসরকারি নিরাপত্তা কর্মীকে ব্যবহার করা যাবে না। এছাড়া পুলিশ অবজারভার এবং পোলিং অবজারভার আলাদা ভাবে নিয়োগ করা হবে বলেও জানিয়েছেন মুখ্য নির্বাচন কমিশনার সুনিল আরোরা। এদিন তিনি বলেছেন, ‘‘প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে বুথগুলি যাতে এক তলায় করা যায় সে বিষয়ে আমি ডিএম ও এসপিদের সঙ্গে কথা বলেছি। বাংলায় অবাধ শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের জন্য যা যা করার দরকার তা করতে নির্বাচন কমিশন দায়বদ্ধ।’’
ভোট চলাকালীন যাতে বাহুবল প্রদর্শন করে রাজ্যের কোনো প্রান্তে অশান্তি সৃষ্টি করা না যায়, সে বিষয়েই কড়া নজর রাখতে চলেছে নির্বাচন কমিশন। সুনীল আরোরার কথায়, ‘‘পেশী শক্তি এবং টাকার জোরে যাতে নির্বাচন কোনো বাধার সৃষ্টি করা না যায় তা নিশ্চিত করবে কমিশন।’’ এছাড়া রাজ্য পুলিশও নজরদারি চালাবে বলে জানিয়েছেন তিনি। সূত্রের খবর, অসম, ত্রিপুরা, এবং পশ্চিমবঙ্গের নির্বাচনের ক্ষেত্রে এই একই নিয়ম বলবৎ থাকবে।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচনের প্রাক্কালে দীর্ঘ দিন থেকেই আইনশৃঙ্খলা তথা নিরপেক্ষ নির্বাচন প্রক্রিয়া আয়োজনের বিষয়ে সন্দেহ প্রকাশ করে আসছে বিরোধী দলগুলি। এই মর্মে রাজ্যপালের কাছেও একাধিক অভিযোগ জমা পড়েছে। ফলে এই আবহে নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
শিক্ষক-শিক্ষাকর্মী-শিক্ষানুরাগী ঐক্য মঞ্চের রাজ্য সম্পাদক কিংকর অধিকারী বলেন, ‘‘আজ কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশনার সুনিল আরোরা রাজ্যে আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে ভোট করানোর যে সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছেন তার জন্য আমরা শিক্ষক-শিক্ষাকর্মী শিক্ষানুরাগী ঐক্য মঞ্চের পক্ষ থেকে এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানাচ্ছি। আমাদের দাবি প্রতিটি বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনী সহ ভোট কর্মীদের সুনিশ্চিত নিরাপত্তা ব্যবস্থা করতে হবে। কোনো পক্ষের অনৈতিক চাপ সৃষ্টির কাছে মাথা নত না করে প্রতিটি ভোট কর্মী যেন তাঁর সাংবিধানিক দায়িত্ব মর্যাদার সঙ্গে পালন করতে পারেন তা সুনিশ্চিত করতে হবে।’’