বাব-মা নয়, মৃতের সংরক্ষিত শুক্রাণুর অধিকার স্ত্রীর, রায় হাইকোর্টের

বাব-মা নয়, মৃতের সংরক্ষিত শুক্রাণুর অধিকার স্ত্রীর, রায় হাইকোর্টের

কলকাতা: মৃত ব্যক্তির সংরক্ষিত শুক্রাণুর উপর অধিকার দাবি করতে পারেন একমাত্র তাঁর বিবাহিতা স্ত্রী, অন্য কেউ তার দাবিদার হতে পারেন না৷ এমনটাই রায় দিল কলকাতা হাইকোর্ট। জানা গেছে, সম্প্রতি নিহত এক থ্যালাসেমিয়া রোগীর বাবা তাঁর ছেলের সংরক্ষিত শুক্রাণুর উপর অধিকার দাবি করে আদালতের কাছে আবেদন জানিয়েছিলেন। সেই মামলার শুনানির পরিপ্রেক্ষিতে এই রায় দিয়েছে উচ্চ আদালত।

গত ১৯ জানুয়ারি সংশ্লিষ্ট মামলার শুনানির দিন মৃত ব্যক্তির বাবার আর্জি খারিজ করে দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। এ প্রসঙ্গে বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্য জানান, আবেদনকারীর কোনো সাংবিধানিক অধিকার নেই। শুধুমাত্র পিতা-পুত্রের সম্পর্কের দাবিতেই সংরক্ষিত ছেলের শুক্রাণু চাইতে পারেন না কোনো বাবা। সাম্প্রতিক সময়ের বিচারে আদালতের এই রায় যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে বিশেষজ্ঞ মহল।

ওই ব্যক্তি যাতে তাঁর পুত্রের সংরক্ষিত শুক্রাণু হাতে পান, তার জন্য আবেদনকারীর আইনজীবী তাঁর পুত্রবধূকে নির্দেশ দেওয়ার দাবি করেছিলেন আদালতের কাছে। কিন্তু এদিন আবেদনকারীর সেই আর্জিও খারিজ করেছে কলকাতা হাইকোর্ট। বস্তুত যদি ওই মৃত ব্যক্তির বিধবা স্ত্রী এ বিষয়ে ব্যক্তির পরিবারকে এনওসি বা অনুমতি পত্র দেন, তবে তাঁর বাবা কাঙ্ক্ষিত শুক্রাণু পেতে পারেন। কিন্তু আদালত স্পষ্টই জানিয়েছে, তা সম্ভব নয়।

জানা গেছে, বর্তমানে ওই মৃত ব্যক্তির শুক্রাণু সযত্নে সংরক্ষিত আছে দিল্লির এক হাসপাতালে। ওই ব্যক্তি থ্যালাসেমিয়া রোগে আক্রান্ত ছিলেন। ভবিষ্যতে তাঁর শুক্রাণু যাতে বংশরক্ষায় ব্যবহার করা যায়, সেই উদ্দেশ্যেই তা সংরক্ষণ করে রাখা হয়েছিল বলে দাবি করেছেন মৃতের বাবা। কিন্তু এ বিষয়ে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্যের পর্যবেক্ষণ, ‘‘আবেদনকারী এবং মৃত ব্যক্তির মধ্যেকার পিতা পুত্রের সম্পর্ক কোনোভাবেই বংশরক্ষার জন্য শুক্রাণু দাবি করার অধিকার দেয় না।’’ এছাড়া বিধবা পুত্রবধূকেও আদালত কোনোরকম নির্দেশ দিতে পারে না, কারণ এক্ষেত্রে কোনো অধিকারে হস্তক্ষেপের ঘটনা ঘটেনি৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *