কলকাতা: চোখের জলে মন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিদায় বিধানসভা নির্বাচনের আগের তৃণমূল কংগ্রেসের জন্য ভাল বিজ্ঞাপন নয়। এর আগে মন্ত্রিসভা থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন লক্ষ্মীরতন শুক্লা। তার আগে শুভেন্দু অধিকারী মন্ত্রীসভা ছেড়ে বিজেপিতে যোগদান করেন। কলকাতার প্রাক্তন মেয়র এবং রাজ্যের অন্যতম মন্ত্রী শোভন চট্টোপাধ্যায় অনেক আগেই মন্ত্রিসভা চেয়েছিলেন। রাজনীতিতে দল বদল নতুন নয়। রাজনীতিতে যে কেউ উচ্চাকাঙ্খী হতেই পারেন। কিন্তু চোখের জ্বলে গৃহত্যাগের অর্থ অন্যরকম। অন্য মাত্রা যোগ করে।
এত গেল শুধু মন্ত্রীদের কথা – বৈশালী ডালমিয়া সহ একঝাঁক নেতানেত্রী তৃণমূল থেকে যাওয়ার পথে। তৃণমূল থেকে বহিষ্কৃত বৈশালী। গুরুত্বপূর্ণ বিধানসভা নির্বাচনের আগে শাসক দলকে যা চাপে ফেলেছে। শাসক দলের মধ্যে শান্তির অভাব তা আরও স্পষ্ট হয়েছে সাংসদ শতাব্দী রায় এবং প্রসূন ব্যানার্জির উল্টো সুরে। যদিও তৃণমূলের উচ্চ নেতৃত্ব এই সব বিষয়গুলি গুরুত্ব দিতে নারাজ। কিন্তু, নির্বাচনের আগে ঘর ভাঙ্গন খুবই খারাপ বিজ্ঞাপন – যা শাসক দলের কিছু ক্ষেত্রে সাংগঠনিক দুর্বলতার ছবি তুলে ধরছে তা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানেন।
তৃণমূলের ঘরে ভাঙ্গন ধরানো বিজেপির ‘ নেগেটিভ ক্যাম্পন স্ট্রাটেজি ‘ বলা যেতে পারে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এই বঙ্গে দাঁড়িয়ে বারবার বলে গিয়েছেন – নির্বাচন আসতে আসতে দিদি আপনি একই পড়ে থাকবেন। বিষয়টি যে তৃণমূলকে চাপে রাখার কৌশল তা বোঝা যায়। বিজেপিতে তৃণমূলের অনেক সংখ্যক এম এল এ যাবেন , এমন কথা বিজেপি নেতৃত্ব অনেক আগে থেকেই বলে আসছে। এই ভাবেই নির্বাচনের আগে মানসিক লড়াইয়ে এগিয়ে থাকতে চাইছে গেরুয়া শিবির।
২০১৯ সালে শেষ লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি ১৮টি আসন জিতেছিল। ৪০.৬৪ শতাংশ ভোট তারা নিশ্চিত করেছে। যা ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের থেকে ২২.৭৬ শতাংশ বেশি। এই ব্যাপক ভোট বৃদ্ধি ইঙ্গিত করে কোনও কারণে বিপুল সংখ্যক মানুষ বিজেপির দিকে ঝুঁকেছে। তা যে ধর্মীয় মেরুকরণ, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। লোকসভা নির্বাচনের পরিপ্রেক্ষিতে যদি বিধানসভায় বিজেপি, তৃণমূল, কংগ্রেস এবং বামদলগুলি ফলাফল বিচার করতে হয় তবে দেখা যাবে বিজেপি প্রায় ১২২টি আসনে এগিয়ে রয়েছে। ৪৩.৬৯ শতাংশ ভোট নিয়ে তৃণমূল কংগ্রেস ২২টি আসনে জিতেছিল।