কলকাতা: ২৩ জানুয়ারি আসে যায়। বাঙালি একটি ছুটি পায় মাত্র। এবারের ২৩ জানুয়ারি এত ঘটনাবহুল ছিল কেন ? বিধানসভা নির্বাচনের আগে নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসু পশ্চিমবঙ্গে একটি বড় রাজনৈতিক ইস্যুতে পরিণত হয়েছে। এটাই স্বাভাবিক ছিল। কারণ নির্বাচনের আগে নেতাজির মত এক সুউচ্চ বাঙালিকে সামনে রেখে বাঙালি আবেগকে ছুঁতে চাইবে বিজেপি – তা স্বাভাবিক। দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ একটি সম্পাদকীয়তে লিখেছেন, নেতাজি বাঙালি, ভারতীয় এবং আন্তর্জাতিক। কংগ্রেস এবং কমিউনিস্টরা তাকে প্রাপ্য সম্মান দেয়নি।
এখন প্রশ্ন হল গুজরাটে বিজেপি যেভাবে সর্দার বল্লভ ভাই প্যাটেলের ইমেজ ও আবেগকে কাজে লাগিয়েছিল, একইভাবে বাংলাতেও নেতাজির আবেগকে কাজে লাগাতে পারবে কি। প্যাটেল গুজরাটের এবং নেতাজি বাংলার। কিন্তু মিল তো আছেই। নেতাজি গান্ধী-নেহরুর সঙ্গে সহমত হননি। গান্ধীজির প্রার্থীকে হারিয়ে কংগ্রেসের প্রেসিডেন্টও হয়েছিলেন।
নেহেরু এবং নেতাজি সমাজতন্ত্রে বিশ্বাসী ছিলেন। কিন্তু বাংলায় নেহরু-নেতাজিকে বন্ধু হিসাবে কখনও দেখা হয়নি। মনে করা হয় গান্ধী-নেহরু তাকে যোগ্য সম্মান দেননি। তাঁর অন্তর্ধানের যথাযথ তদন্ত করেনি স্বাধীন ভারতের কংগ্রেস সরকার। কোথাও না কোথাও নেতাজির অন্তর্ধানের পিছনে গান্ধী-নেহরুকে জুড়ে দেওয়া হয়। বাংলায় অনুভূতি হ’ল নেহেরু-গান্ধী পক্ষপাতদুষ্টতার কারণে নেতাজির মৃত্যুর বিষয়ে যথাযথ তদন্ত হয়নি। এই আবেগতিকে ভোটযন্ত্রে গতিবেগ পরিণত করতে চায় বিজেপি।
শোনা যাচ্ছে, নেতাজিকে নিয়ে কেন্দ্রের মোদি সরকার নাকি অনেক কিছু চিন্তা ভাবনা করছে। আলোচনা চলছে যে ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালের নাম পরিবর্তন করা উচিত নেতাজির নাম দিয়ে। যদিও এতে অনেকেরই আপত্তি রয়েছে, কারণ এই নামটি রানী ভিক্টোরিয়ার সাথে যুক্ত রয়েছে। সরদার প্যাটেলের মতো নেতাজির বিশাল মূর্তি তৈরির প্রস্তাবও রয়েছে। যা পশ্চিমবঙ্গের একটি দেখার জায়গা হতে পারে।
প্রধানমন্ত্রী মোদী নেতাজির বাড়িতে গিয়েছেন। ওই বাড়ি থেকেই ব্রিটিশ পুলিশের চোখে ধুলো দিয়ে মহানিস্ক্রমনের পথে গিয়েছিলেন নেতাজি। নেতাজির বিছানায় মাথা ঠেকিয়ে প্রণাম করেছেন মোদি। তবে তিনি বাংলার মানুষকে দেখাতে চান যে তিনি সংবেদনশীল এবং নেতাজির সাথে মানসিকভাবে সংযুক্ত আছেন।