কলকাতা: বিগত কয়েক সপ্তাহ ধরে দলবদল আবহে পুরোপুরি ব্যাকফুটে রয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। হাতে গোনা কয়েকজন ঘাসফুলে নাম লেখালেও অধিকাংশ ঘাসফুল ছেড়ে হাতে তুলে নিচ্ছেন পদ্ম। বলাই বাহুল্য, যারা ঘাসফুলে যোগ দিচ্ছেন তাদের তুলনায় পদ্ম ধারী ব্যক্তিত্বদের ওজন অনেকটাই বেশি। সেক্ষেত্রে আর যেন কোনো সুযোগ দিতে চান না তৃণমূল কংগ্রেস সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আগামী ৩০ জানুয়ারি ফের একবার বঙ্গ সফরে আসছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। তার ঠিক আগের দিন অর্থাৎ ২৯ তারিখ দলের সব বিধায়ক এবং সাংসদের বৈঠক ডাকলেন মমতা। ভাঙন রোখার চেষ্টা?
সেদিনের এই জরুরি বৈঠকে কী নিয়ে আলোচনা হবে তা এখনও পর্যন্ত স্পষ্ট ভাবে জানা যায়নি। তবে এই বৈঠকে সমস্ত বিধায়ক এবং সাংসদদের উপস্থিত থাকতে বলেছেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের একাংশের মতে, আপাতত যে পরিস্থিতিতে রয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস দল, সেখানে দলের সদস্যদের মতিগতি বুঝে নিতে চাইছেন তৃণমূল সুপ্রিমো। সেই কারণেই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সফরের আগে নিজের দলের সকলকে একবার প্রত্যক্ষভাবে যাচাই করতে চাইছেন তিনি। বিগত কয়েক দিন ধরেই দলের বেশ কিছু সদস্যকে নিয়ে অশান্তির পরিবেশ রয়েছে তৃণমূল কংগ্রেসে। মন্ত্রিত্ব ছেড়ে দেওয়া লক্ষ্মীরতন শুক্লা রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় হোক, কিংবা বহিস্কৃত বৈশালী ডালমিয়া, পদত্যাগী প্রবীর ঘোষাল, সকলকে নিয়েই চিন্তা রয়ে গিয়েছে যে তারা বিজেপিতে যোগদান করবেন কিনা। এই পরিস্থিতিতে আর কোন রকম সুযোগ হাতছাড়া করতে চাইছেন না তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
হালের জনসভায় তৃণমূল সুপ্রিমো স্পষ্ট করে দিয়েছেন যে, যারা চলে যেতে চান, তারা চলে যেতে পারেন। যারা যাচ্ছে তাদেরকে দল নাকি এমনিতেও টিকিট দিত না। অন্যদিকে রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়, বৈশাখী ডালমিয়া ইস্যুতে দলের তরফে বলা হয়েছে তারা চলে যাওয়াতে কোনো প্রভাব পড়বে না। যদিও তৃণমূল কংগ্রেস ভেতরে ভেতরে যে কিছুটা হলেও চাপে রয়েছে তা অনুমান করা খুব একটা কঠিন নয় বলে রাজনৈতিক মহলের বিশ্লেষণ। এদিকে অমিত শাহর সফরে আরো বেশ কয়েকজন বিজেপিতে যোগ দিতে পারেন বলে ইতিমধ্যেই জল্পনা ছড়িয়েছে। তাদের মধ্যে তৃণমূল কংগ্রেসের কারা থাকবেন বা আদৌ কেউ থাকবেন কিনা সেই নিয়ে ইতিমধ্যেই আলোচনা তুঙ্গে।
ফাইল ছবি