ওয়াশিংটন: উপহারের ঝুলি নিয়ে মার্কিন মুলুকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী৷ হোয়াইট হাউসে পৌঁছে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও মার্কিন ফাস্ট লেডি জিল বাইডেনকে উপহারে ভরিয়ে দিলেন নমো। রাষ্ট্রনেতাদের এহেন সাক্ষাতে একে অপরের হাতে উপহার তুলে দেওয়াটাই দস্তুর৷ এই রেওয়াজ বহু পুরনো। এর মাধ্যমে আরও মজবুত হয় দ্বিপাক্ষিক কূটনৈতিক সম্পর্ক৷ এদিনও তার ব্যতিক্রম হল না৷ তবে সবচেয়ে বেশি নজর কাড়ল জিল বাইডেনকে দেওয়া প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বিশেষ উপহার।
মার্কিন ফার্স্ট লেডিকে সাড়ে ৭.৫ ক্যারেটের একটি সবুজ রঙের হিরে বা গ্রিন ডায়মন্ড উপহার দিয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী। সেই হিরের দ্যুতিতে মুগ্ধ মার্কিন ফার্স্ট লেডি। এই উপহার সম্পর্কে কৌতূহল জেগেছে সকলের মনে। এটি নামে সবুজ হিরে হলেও এর বর্ণ একেবারেই সবুজ নয়। সাধারণ হীরের মতো উজ্জ্বল সাদা। এই হিরে একেবারেই প্রাকৃতিক নয়। এই হিরে ল্যাবরেটরিতে তৈরি৷ যাকে বলে ল্যাব গ্রোন। কিন্তু দেখতে অবিকল প্রাকৃতিক হিরের মতই। সৌর শক্তি ও বায়ু শক্তিকে কাজে লাগিয়ে রসায়নাগারে তৈরি হয়েছে এই হিরে। বিশেষভাবে উৎপন্ন ও পরিবেশ-বান্ধব হওয়ার জন্যই এটির নাম দেওয়া হয়েছে সবুজ হিরে। কৃত্রিমভাবে ল্যাবরেটরিতে উৎপন্ন হলেও আকার বা ঔজ্জ্বল্য কোনও দিক থেকেই এটি প্রাকৃতিক হিরের চেয়ে কম নয়। এর দামও আকাশছোঁয়া।
সাধারণত, GI সার্টিফিকেট প্রাপ্ত ৭ ক্যারেট হিরের সর্বনিম্ন দাম প্রায় ৮০ হাজার মার্কিন ডলার৷ ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় সাড়ে ৬৫ লক্ষ টাকা। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী মার্কিন ফার্স্ট লেডিকে যে হিরেটি দিয়েছেন, তার ওজন ৭ ক্যারেটের বেশি। ফলে এটির সর্বোচ্চ দাম ১২ লক্ষ মার্কিন ডলার৷ ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ৯ কোটি ৮৩ লক্ষ ৬১ হাজার টাকা৷
এর পাশাপাশি জো বাইডেনের জন্য চন্দনকাঠের বিশেষ বাক্স উপহার হিসাবে নিয়ে গিয়েছিলেন নমো৷ কর্ণাটকের মহীশূর থেকে আনা হয় এই কাঠ৷ বাক্সের উপর রয়েছে রাজস্থানী শিল্পীদের হাতে তৈরি লতাপাতার কারুকার্য৷ ওই বাক্সে রয়েছে একটি রুপোর গণেশের মূর্তি এবং একটি প্রদীপ৷ যা তৈরি করেছেন কলকাতার শিল্পীরা৷ বাক্সে রয়েছে ‘দশ দানম’ অর্থাৎ দশটি দানপাত্র৷ সেখানে রয়েছে রুপোর ডাব৷ যেটি তৈরি করেছে পশ্চিমবঙ্গের শিল্পীরা৷ মহীশূরের চন্দনকাঠের টুকরো, তামিলনাড়ুর সাদা তিল, রাজস্থানের ২৪ ক্যারাটের হলমার্কড সোনার কয়েন৷ এছাড়াও রয়েছে পঞ্জাবের ঘি, উত্তরাখণ্ডের লম্বা চাল, মহারাষ্ট্রের গুড়, গুজরাতের নুন৷ রয়েছে ঝাড়খণ্ডের শিল্পীদের হাতে বোনা সিল্ক কাপড় ও ৯৯.৫ শতাংশ শুদ্ধ, রাজস্থানের হলমার্কড রুপোর কয়েন৷
এছাড়াও মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে তাঁর পছন্দের কবির অনুবাদ করা উপনিষদ দেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। ১৯৩৭ সালে ছাপানো ‘দ্য টেন প্রিন্সিপালস অফ উপনিষদ’-এর প্রথম সংস্করণটি বাইডেনকে উপহার হিসাবে দেন নমো৷ বইটি লন্ডনের ফেবার অ্যান্ড ফেবার ছাপিয়েছিল গ্লাসগো বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেস থেকে।
এছাড়াও বাইডেনকে ‘কৃষ্ণ যজুর্বেদের বৈখানাস গৃহ্য সূত্রম’ উপহার দেন মোদী। এই গ্রন্থটি একটি চন্দন কাঠের বাক্সে ভরে বাইডেনকে দেওয়া হয়৷ সেই চন্দন কাঠটি আনানো হয় মহীশূর থেকে৷ বাক্সটি তৈরি করেন জয়পুরের এক দক্ষ কারিগর।
” style=”border: 0px; overflow: hidden”” title=”YouTube video player” width=”560″>