কলকাতা: বিধানসভা নির্বাচনের আগে একের পর এক দলত্যাগের ঘটনায় জেরবার শাসক দলকে আরো কোণঠাসা করতে প্রায় প্রতিদিনই আক্রমণ শানাচ্ছেন বিরোধী নেতৃবৃন্দ। দুর্নীতি, তোলাবাজি প্রভৃতি একাধিক অভিযোগের তীর ছুটে আসছে ঘাসফুল শিবিরের দিকে। সেই অভিযোগের রেশকে আরো খানিক জোরদার করে এবার শাসকদলের নেতাদের বিরুদ্ধে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করলেন মুর্শিদাবাদের গ্রামবাসীরা।
জানা গিয়েছে, মুর্শিদাবাদের এক গ্রামের ১০০ বছরের পুরোনো কালীমন্দির, একমাত্র প্রাথমিক স্কুল এবং খেলার মাঠ জবরদখল করতে চাইছেন শাসক দলের এক নেতা। তাঁর হাত থেকে গ্রামের ঐতিহ্য ও সম্বল রক্ষার জন্যেই আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন গ্রামের প্রায় ৬৩টি পরিবার। তাঁরা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেছেন। তবে মরিয়া চেষ্টা সত্ত্বেও ক্ষমতাবানদের বিরুদ্ধে এই লড়াইয়ে শেষ রক্ষা হবে কিনা তা নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছে তাঁদের মনে।
ঘটনাটি ঘটেছে, মুর্শিদাবাদের নওদা থানার অন্তর্গত সর্বাঙ্গপুর গ্রামে। আবেদনকারী গ্রামবাসীদের পক্ষে আইনজীবী আশীষ কুমারচৌধুরী জানিয়েছেন, ওই গ্রামে ছোটো ছেলেমেয়েদের পড়াশোনার জন্য একমাত্র প্রাথমিক স্কুল হল সর্বাঙ্গপুর নিম্ন বুনিয়াদী স্কুল। এই স্কুল উঠে গেলে ছোট ছোট ছেলেমেয়েদের পায়ে হেঁটেই কয়েক মাইল দূরে যেতে হবে পড়াশোনার জন্য। অভিযোগ, শাসকদলের এক নেতার হাতে রাজ্যের ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরের এক আধিকারিক জমির পাট্টা তুলে দিয়েছেন। স্থানীয় প্রশাসনের চোখের সামনেই এ ঘটনা ঘটেছে বলে দাবি করেছেন গ্রামবাসীরা।
শুধু প্রাথমিক স্কুল নয়, শতবর্ষ প্রাচীন এক কালীমন্দিরের দিকেও নজর পড়েছে ওই নেতার। এই মন্দির এবং তৎসংলগ্ন এক খেলার মাঠের সঙ্গে জড়িয়ে আছে গ্রামের মানুষের সুখ দুঃখের স্মৃতি। কালীমন্দিরে প্রতি অমাবস্যায় কয়েক হাজার মানুষের সমাগম হয়। তাই তার জবরদখল কিছুতেই মেনে নিতে পারছেন না গ্রামবাসী। তাঁদের দাবি, গত মাসেই তাঁরা এ ব্যাপারে মুর্শিদাবাদের জেলাশাসক, পুলিস সুপার, নওদা থানার অফিসার ইন চার্জ এমনকি পঞ্চায়েত প্রধানকেও অভিযোগ জানান। কিন্তু কোনো সুরাহা মেলেনি। বিচার পেতে এবার হাইকোর্টে মামলা করলেন স্থানীয়রা৷