তৃণমূল ছাড়লেন রাজীব! মন্ত্রিত্ব-বিধায়ক পদ ছেড়ে ছিন্ন করলেন সম্পর্ক

তৃণমূল ছাড়লেন রাজীব! মন্ত্রিত্ব-বিধায়ক পদ ছেড়ে ছিন্ন করলেন সম্পর্ক

কলকাতা: আগেই ছেড়ে দিয়েছেন মন্ত্রিত্ব৷ আজ বিধানসভায় গিয়ে ছেড়ে এসেছেন বিধায়ক পদ৷ এবার তৃণমূলের সঙ্গে সমস্ত সম্পর্ক ত্যাগ করে ঘাসফুল থেকে বিদায় নিলেন রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়৷ তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি পাঠিয়ে দল ছাড়ার ঘোষণা করেছেন ডোমজুড়ের সদ্য প্রাক্তন বিধায়ক৷ দলছাড়ার চিঠিতেও ছিল মমতার প্রতি রাজীবের কৃতজ্ঞতা৷ মন্ত্রিত্ব ও বিধায়ক পদের ছাড়ার পর তৃণমূল থেকে সরাসরি পদ্ম শিবিরে নাম লেখাবেন রাজীব? তুঙ্গে জল্পনা৷

আজ সকালে বিধানসভায় হাজির হয়ে বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা দেন রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়৷ অধ্যক্ষ বিমান বন্দোপাধ্যায়ের সামনে পদত্যাগ পত্র লিখে জমা দেন রাজীব৷ ইস্তফা দেওয়ার পর দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে কৃতজ্ঞতা স্বীকার করেছেন রাজীব৷ একই সঙ্গে জানিয়ে দিয়ে দেন, সংসদীয় গণতন্ত্রে কাজ করতে গেলে কোন কোন রাজনৈতিক দলের ছত্রছায়ায় থাকতে হয়৷ আগামী দিনে তিনি তাঁর রাজনৈতিক অবস্থান স্পষ্ট করবেন বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন তিনি৷ তবে তিনি বিজেপিতে যাচ্ছেন কি না, সে বিষয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি ডোমজুড়ের সদ্য প্রাক্তন বিধায়ক৷

বিধানসভায় ইস্তফা দেওয়ার পর সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়৷ সেখানে তিনি জানান, ‘‘পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা দিলাম৷ আমি আমাদের সম্মানীয় অধ্যক্ষ মহোদয়ের হাতে আমার ইস্তফাপত্র আমি জমা দিয়েছি৷ তাঁর কিছু প্রশ্ন ছিল৷ তিনি আমাকে সেই প্রশ্নগুলি করেছিলেন৷ আমি তাঁর উত্তর দিচ্ছিলাম৷ তিনি বলেছেন, সবটাই আইন অনুযায়ী পরীক্ষা করেন৷ তারপর তিনি সিদ্ধান্ত জানাবেন৷ আমি আনুষ্ঠানিকভাবে পদত্যাগপত্র অধ্যক্ষ কাছে দিয়েছি৷’’

রাজীবের ইস্তফা

এরপর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে কৃতজ্ঞতা স্বীকার করেন রাজীব৷ বলেন, ‘‘আমি অধ্যক্ষকে কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন৷ ধন্যবাদ জানিয়েছি৷ দীর্ঘ ১০ বছর ধরে সাহায্য সহযোগিতা করেছেন৷ বিধানসভার বিধায়কদের সমস্ত সহযোগিতা পেয়েছি৷ তাঁর জন্য আমি কৃতজ্ঞ৷ তার সঙ্গে সঙ্গে বিধানসভার যত সহকর্মীরা আছেন, তাদের সহযোগিতা পেয়েছি৷ তাদেরকে আমি ধন্যবাদ জানাই৷ আমি ধন্যবাদ জানাই বাংলার মানুষকে৷ বাংলা মানুষ যেভাবে ভালোবাসা সাহায্য-সহযোগিতা করেছেন, ১০ বছর ধরে ভালোবাসা পেয়েছি, তাদের কৃতজ্ঞতা জানাই৷ আমি আমার কৃতজ্ঞতা জানাই আমার দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে৷ তিনি আমাকে এই সুযোগটা করে দিয়েছিলেন৷ আমাকে বিধায়ক হওয়ার সুযোগ করে দিয়েছিলেন৷ আমি তাঁর কাছে চির কৃতজ্ঞ, চিরঋণী৷ এবং সঙ্গে সঙ্গে বাংলার মানুষের কাছে আমি কৃতজ্ঞ৷’’

রাজনীতির ময়দানে ফেরার বার্তা দিয়ে রাজীবের মন্তব্য, ‘‘আমার ডোমজুড় বিধানসভা কেন্দ্রের সাধারণ মানুষের কাছে আমি কৃতজ্ঞ৷ যাদের ভালোবাসায় আমি বিগত দিনে পেয়েছি, যাদের জন্য বিগত ১০ বছর কাজ করেছি, যারা আমাকে বিধানসভার বিধায়ক করার সুযোগ করে দিয়েছেন, আমি সেই সমস্ত মানুষকে কৃতজ্ঞতা জানাই৷ আমি কথা দিচ্ছি, আগামী দিনে ডোমজুড় বিধানসভা কেন্দ্র থেকে মানুষের পাশে থাকবো৷ আমি আমার কাজ করে যাব৷ আমি রাজনীতি করি মানুষের স্বার্থে৷ মানুষের স্বার্থে আগামী দিনে নিশ্চিত ভাবে মানুষের জন্য উন্নয়নের স্বার্থে আমি আমার কাজ চালিয়ে যাব৷’’

রাজনৈতিক অবস্থান প্রসঙ্গে রাজীবের তাৎপর্যপূর্ণ মন্তব্য, ‘‘আমি মনে করি, সংসদীয় গণতন্ত্রে মানুষের জন্য কাজ করতে গিয়ে একটি কোন রাজনৈতিক দলের ছত্রছায়ায় থাকতে হয়৷ নির্দল হয়ে গণতন্ত্রের স্বার্থে মানুষের জন্য কাজ করা যায় না৷ সুতরাং সেই জায়গা থেকে আমার সিদ্ধান্ত আমি আগামীকাল জানিয়ে দেব৷’’ তবে, তিনি রবিবার অমিত শাহের সভায় বিজেপিতে যোগ দিচ্ছেন কি না, তা স্পষ্ট করেননি রাজীব৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

12 − 5 =