চুঁচুড়া: একুশের বিধানসভা নির্বাচনের আগে রীতিমত উত্তপ্ত বাংলার রাজনৈতিক পরিস্থিতি। প্রায় প্রতিদিনই কোনো না কোনো ঘটনা সামনে এসে এলোমেলো করে দিচ্ছে রাজ্যের ভোট পূর্ববর্তী রাজনৈতিক সমীকরণ। সেই তালিকাতেই এবার যুক্ত হল আরও এক খবর।
ভোট যখন দরজায় প্রায় কড়া নাড়ছে, ঠিক সেই সময় হঠাৎ চাকরি থেকে ইস্তফা দিলেন চন্দননগরের পুলিশ কমিশনার হুমায়ুন কবির। প্রাথমিক ভাবে ব্যক্তিগত কারণে ইস্তফা দেওয়ার কথা জানিয়েছেন তিনি। তবে, পিছনে কি কোনও রাজনৈতিক কারণ? শুরু হয়েছে চর্চা৷ হুমায়ুন কবিরের পদে চন্দননগরের নতুন পুলিশ কমিশনার নিযুক্ত হয়েছেন কলকাতা পুলিশের জয়েন্ট কমিশনার এসটাব্লিশমেন্ট গৌরব শর্মা। এর আগে হাওড়ার পুলিশ কমিশনার ছিলেন তিনি। আগামী ১০ ফেব্রুয়ারি থেকে তিনি দায়িত্ব সামলাবেন।
বস্তুত, মুখ্যমন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ পুলিশ অফিসার হিসেবেই পরিচিত ছিলেন হুমায়ুন কবির। তাঁর বিরুদ্ধে বিরোধী শিবির থেকেও এসেছে একাধিক অভিযোগ। কিন্তু সম্প্রতি আরো এক তাৎপর্যপূর্ণ ঘটনা এই ইস্তফার সঙ্গে যুক্ত বলে মনে করছেন পর্যবেক্ষক মহলের একাংশ। মাস কয়েক আগে হুমায়ুন কবিরের স্ত্রী অনিন্দিতা দাস যোগ দিয়েছিলেন তৃণমূল কংগ্রেসে। পুলিশ কমিশনারের ঘরের লোক হয়ে রাজনৈতিক পতাকা হাতে তুলে নেওয়ায় বেশ শোরগোল পড়েছিল চন্দননগর প্রশাসনে। তার মাস দুয়েক পরেই চাকরি থেকে ইস্তফা দিলেন হুমায়ুন কবির।
হুমায়ুন কবিরের স্ত্রী অনিন্দিতা দাস কবির গত নভেম্বরেই তৃণমূল ভবন থেকে পার্থ চট্টোপাধ্যায়, ফিরহাদ হাকিমের উপস্থিতিতে ঘাসফুলের পতাকা হাতে তুলে নিয়েছিলেন। ‘মমতা ব্যানার্জী জিন্দাবাদ’ স্লোগান তুলতেও দেখা গিয়েছিল তাঁকে। আগামী বিধানসভা নির্বাচনেও তাঁকে শাসকদলের তরফ থেকে প্রার্থী করা হতে পারে বলে জল্পনা তৈরি হয়েছিল। বস্তুত, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পরিচালিত তৃণমূল কংগ্রেস সরকারের বিরুদ্ধে ভোটের আগে বিরোধীদের অন্যতম অভিযোগ পুলিশ প্রশাসনের ঘনিষ্ঠতা। শাসকদলের অঙ্গুলি হেলনেই প্রশাসন কাজ করে, দাবি করেছেন বাম-কংগ্রেস থেকে শুরু করে বিজেপি, সকলেই। সেই আবহে চন্দননগরের পুলিশ কমিশনার হুমায়ুন কবিরের ঘটনা নিঃসন্দেহে তাৎপর্যপূর্ণ।