তৃণমূলের নজরে ‘হিন্দিভাষী’ ভোট! পাত্তা দিতে নারাজ গেরুয়া শিবির

তৃণমূলের নজরে ‘হিন্দিভাষী’ ভোট! পাত্তা দিতে নারাজ গেরুয়া শিবির

কলকাতা: বাংলায় বিধানসভা নির্বাচনের ঢাকে কাঠি পড়েছে মাসখানেক আগেই। আর তার জেরে নিজেদের মতো করে বাংলার বিভিন্ন শ্রেণির ভোটারদের ভোটে কোপ বসাতে চাইছে শাসক দল তৃণমূল, কড়া প্রতিপক্ষ বিজেপি, মহাজোট বাম-কংগ্রেস সহ একাধিক রাজ্য ও ভিনরাজ্যের আঞ্চলিক দল। একদিকে যেমন বিজেপি হিন্দুদের ভোটে নিজেদের অস্তিত্ব কায়েমে ব্যস্ত, অন্যদিকে তৃণমূল এখন মরিয়া হয়েছে হিন্দিভাষী মানুষদের ভোট পেতে। তার জেরেই বৃহস্পতিবার তৃণমূল ভবনে হিন্দিভাষী মানুষদের নিয়ে একটি বৈঠক করেছেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

বৃহস্পতিবারের হিন্দিভাষী বৈঠকে তৃণমূল ভবনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিজেপি আক্রমণাত্মক ভঙ্গিতে ‘হিন্দি শিখিয়ে দেওয়ার’ কথা বলেন। এই প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “ওরা কি হিন্দি জানে! ওদের কান ধরে হিন্দি শিখিয়ে দেবো৷” এছাড়াও সেদিনের সভায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যের হিন্দিভাষী মানুষদের মন জয় করার জন্য রাজ্যে হিন্দি বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে তোলার কথাও ঘোষণা করেন।

তবে এসবের মাঝখানে নিজেদের অবস্থান ধরে রাখতে বিজেপির দাবি, আগামী বিধানসভা নির্বাচনে রাজ্যে বিজেপি ২০০-র বেশি আসন পেয়ে ক্ষমতায় আসবে। এই প্রসঙ্গে গেরুয়া শিবিরের নেতারা রাজ্য ও ভিনরাজ্যের আঞ্চলিক দলগুলির প্রার্থী দেওয়ার বিষয়ে ভাবতে নারাজ গেরুয়া শিবির। যদিও বিজেপির আত্মবিশ্বাসে আঘাত দিয়ে তৃণমূলের ভোট কুশলী প্রশান্ত কিশোর আগেই ঘোষণা করেছেন, রাজ্যে বিজেপির আসনসংখ্যা ৯৯-এর বেশি হবে না।

তৃণমূল বিজেপির পাশাপাশি আগামী নির্বাচনে বাংলার মাটিতে রয়েছে বাম-কংগ্রেস মহাজোট। যদিও মহাজোটের ক্ষমতা নিয়ে ভাবতে নারাজ ঘাসফুল ও পদ্মফুল দুই শিবির। তবে এই নির্বাচনের লড়াইয়ের ময়দানে নামছে প্রতিবেশী রাজ্য ঝাড়খণ্ডের শাসক দল ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চা। ইতিমধ্যে বাংলার মাটিতে নিজেদের একটা জায়গা তৈরি করে নিতে রাজ্যে এসে বৈঠক করে গেছেন ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সরেন। এই প্রসঙ্গে ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, ঝাড়গ্রাম সহ কয়েকটি জেলায় এসে অভিযোগ করেছেন, রাজ্যে তৃণমূল ও বিজেপি বোঝাপড়া করেছে নিজেদের মধ্যে। তবে এই প্রসঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বেজায় চটেছেন। ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে বৃহস্পতিবার তৃণমূল ভবনে নেত্রী বলেন, “যখন ওদের কেউ ছিল না তখন পূর্ণ সমর্থন দিয়েছিলাম। আর এখন আসছে বাংলায় ভোট চাইতে। এই স্বপ্ন তোমার কোনদিনই পূরণ হবে না৷”

জেএমএম’এর পাশাপাশি রাজ্যের নির্বাচনে এবার প্রার্থী দিতে চলেছে জেডি(ইউ), আরজেডি, সমাজবাদী পার্টি, শিবসেনা, এনসিপি সহ বেশ কিছু ভিনরাজ্যের বেশ কিছু দল। এছাড়াও এই নির্বাচনে মুসলিম দল মিম ও আব্বাসের ফ্রন্ট দিচ্ছে প্রার্থী। এই অবস্থায় কোনদিকে ঘুরবে বাংলার ভাগ্যের চাকা? কোন ছোট দল কোন দলের হয়ে কোন দলের কত ভোট কাটবে? এখন সেটাই আলোচ্য বিষয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

3 × 3 =