কলকাতা: হাওড়া থেকে তৃণমূল কংগ্রেসের যে বড় অংশ সম্প্রতি দলত্যাগ করে গেরুয়া শিবিরে নাম লিখিয়েছেন, প্রাক্তন বনমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম তাঁদের মধ্যে অন্যতম। এদিন হাওড়ার ডুমুরজোলায় বিজেপির মহাযোগদান সভায় উপস্থিত হয়ে তিনি হাতে তুলে নেন গেরুয়া পতাকা। সেই সঙ্গে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী স্মৃতি ইরানির সামনেই আগামী দিনে সাধারণ মানুষের উদ্দেশ্যে বদলের ডাক দিয়েছেন রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়।
বিজেপিতে যোগ দিয়ে প্রথম থেকেই আত্মবিশ্বাসী শোনায় রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের গলা। প্রকাশ্য সভায় দাঁড়িয়ে ২০২১ সালে সারা বাংলায় পদ্ম ফোটানোর চ্যালেঞ্জ ছোঁড়েন তিনি। শুধু তাই নয়, পুরোনো দলের উদ্দেশ্যেও ফের একাধিক তোপ দাগেন এই প্রাক্তন মন্ত্রী। সভা মঞ্চ থেকে নতুন স্লোগান তোলেন, ‘চলুন পাল্টাই।’
প্রাক্তন দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি হাতে নিয়ে ছলছল চোখে রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় দল ছেড়েছেন মাত্র কয়েকদিন আগে। এদিন গেরুয়া শিবিরের সভা থেকে তাঁর গলায় শোনা গেল সেই পুরোনো দলের বিরুদ্ধেই একরাশ অভিযোগ। তিনি বলেন, “ওই দলে কেউ যোগ দিলে বলা হয় উন্নয়নের জন্য যোগদান। কিন্তু দল ছাড়লেই সে হয়ে যায় গদ্দার।” বাংলার মানুষই এর বিচার করবেন, বলেন তিনি। ঘাসফুল শিবিরের উদ্দেশ্যে তাঁর হুংকার, “আপনারা যত অপশব্দ প্রয়োগ করবেন তত আমাদের জেদ বাড়বে, সাহস বাড়বে।”
তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ আগেই সর্বসমক্ষে জানিয়েছিলেন রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিনের মঞ্চ থেকেও সে অভিযোগই আরো জোরদার করেন তিনি। তাঁর কথায়, “দলীয় নেতাদের কোনো সভা, মিটিং, মিছিল করতে দেওয়া হয় না। এটা কীসের লক্ষণ জানেন? এটাই শেষের শুরু।” তবে রাজনৈতিক প্রতিহিংসায় বিশ্বাসী নন বলেই জানিয়েছেন রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। অমিত শাহ তাঁদের সামনে যে লক্ষ্য তুলে ধরেছেন সেই অনুযায়ী কাজ করে যাওয়াই তাঁর একমাত্র উদ্দেশ্য, জানান তিনি।
এদিন কেন্দ্র ও রাজ্যে সামঞ্জস্য রেখে ‘ডবল ইঞ্জিন সরকার’ তৈরির ডাক দেন রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। পশ্চিমবঙ্গের মানুষের সার্বিক উন্নয়নের জন্য এই সরকার প্রয়োজন, এমনটাই মত তাঁর। মুখ্যমন্ত্রীর গত ১০ বছরের কাজ প্রসঙ্গে তিনি জানান, “বাংলার মানুষ হতাশ। শিল্প শ্মশানে পরিণত হয়েছে।এর জবাব বর্তমান সরকারকে দিতে হবে।” সবমিলিয়ে রবিবাসরীয় দুপুরে বিজেপির মেগা যোগদান সভায় বঙ্গ রাজনীতির পারদ চড়েছে অনেকটাই।