কলকাতা: বিধানসভা নির্বাচনের আগে ত্রিপুরায় ভারতীয় জনতা পার্টি প্রচার করেছিল যে তারা সেই রাজ্যকে হীরের রাজ্য বানাবে। কিন্তু এই মুহূর্তে দাঁড়িয়ে প্রত্যেকে নিশ্চিতভাবে জানেন যে বিজেপি শাসিত ত্রিপুরার অবস্থা ঠিক কেমন। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে, পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা নির্বাচনের আগে এখন বিজেপির থেকে প্রচার করা হচ্ছে যে তারা বাংলাকে সোনার বাংলা বানাবে। পশ্চিমবঙ্গের সাধারণ মানুষ যেন কোনোভাবেই বিভ্রান্ত না হয়ে পড়েন তার আগে সকলকে সতর্ক করার চেষ্টা করলেন ত্রিপুরার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার। ত্রিপুরার অভিজ্ঞতা শোনালেন তিনি।
এক জনপ্রিয় সংবাদমাধ্যমে একান্ত সাক্ষাৎকার দিয়ে ত্রিপুরার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা সিপিএম পলিটব্যুরোর সদস্য মানিক সরকার বললেন, নির্বাচনের আগে থেকে বিজেপি ত্রিপুরায় গণতন্ত্র লুটের সবরকম প্রচেষ্টা করেছে। এক্ষেত্রে তিনি ভোট গণনার দিনে হওয়া কারচুপি এবং বিরোধী রাজনৈতিক দল থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষের ওপর হামলার প্রসঙ্গ তোলেন। মানিক সরকার জানান কিভাবে যারা প্রতিবাদ করেছেন তাদের দমিয়ে রাখা হয়েছে। হামলার কারণে অভিযুক্তদের থানায় ডেকে এনে তাদের দিয়েই অভিযোগকারীদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে পুলিশ এবং তাদের জেলে ঢোকানো হয়েছে। একই সঙ্গে রাজনৈতিক দলের সদস্য থেকে শুরু করে একেবারে নিতান্ত সাধারণ মানুষের ওপর হামলা চালিয়েছে বিজেপি। পাশাপাশি সাংবাদিকদেরও ছাড় দেওয়া হয়নি। এমনকি মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেব প্রত্যক্ষভাবে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন সাংবাদিকদের এবং পরবর্তী ক্ষেত্রে তাদের সরাসরি আক্রমণ করা হয়েছে। এমনকি যে সমস্ত আইনজীবী অভিযোগকারীদের হয়ে আদালতে মামলা লড়তে যাচ্ছেন তাদেরকেও আক্রমণ করা হচ্ছে।
নির্বাচন হবার আগে বিজেপি যে যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল তা কতটা পূরণ হয়েছে সে ব্যাপারেও কথা বলতে গিয়ে ভারতীয় জনতা পার্টির শিবিরকে একহাত নিয়েছেন মানিক সরকার। তিনি বলছেন, নির্বাচনের আগে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল যে ডবল ইঞ্জিন সরকার হবে। এতদিন বিরোধীদের অভিযোগ ছিল যে দিল্লি তাদের টাকা দেয় না কিন্তু বিজেপি সরকার গঠন হলে সেই সমস্যা থাকবে না। ঘরে ঘরে চাকরি হবে। কিন্তু এখন পানের দোকান, তেলেভাজার দোকান খোলার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। মানিক জানান, যে বিজেপি নেতা দাবি করেছিলেন যে প্রতিশ্রুতি পালন না হলে তাকে যেন ঢুকতে দেওয়া না হয় এলাকায়, সেই বিজেপি নেতাকে এখন এলাকাতে এমনিতেই দেখা যাচ্ছে না। এক কথায়, পশ্চিমবঙ্গের মানুষকে ত্রিপুরা থেকে শিক্ষা নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন সেই রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার।