কারখানা বিক্রি করে বাংলার উন্নয়ন করবে বিজেপি? মোদীকে প্রশ্ন সিপিএমের

কারখানা বিক্রি করে বাংলার উন্নয়ন করবে বিজেপি? মোদীকে প্রশ্ন সিপিএমের

cb83ea976c73b303546a4993707626cd

কলকাতা: বিজেপি সরকার বাংলায় আসল উন্নয়ন করবে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর এই বক্তব্যকে চ্যালেঞ্জ জানিয়েছে সিপিএম। মোদী বাংলায় এসে বলছেন, বিজেপি সরকারের আসলে উন্নয়ন হবে বাংলায়, সাত বছর কেন্দ্র সরকার কেন বাংলায় একটিও প্রকল্প চালু করলো না। সিপিএমের বক্তব্য, মোদী সরকার বাংলায় থাকা রাষ্ট্রায়ত্ত কারখানা ব্রিজ অ্যান্ড রুফ, দুর্গাপুর এএসপি, বেঙ্গল কেমিক্যাল, সাঁতরাগাছি প্রেস বিক্রি করতে চেয়েছে। বাংলাতে একটি কলকাতাকেন্দ্রিক ব্যাঙ্ক পর্যন্ত রাখতে দেয়নি মোদী সরকার। ওর কাজের সঙ্গে কথা মিলছে না।

সিপিএমের পলিটব্যুরো সদস্য সদস্য সেলিম বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী মোদীর বক্তব্য, লকডাউনের সময় তাঁর সরকারের ফিরিস্তির কথা, অথচ লকডাউনের সময় বামপন্থীরাই ছিলেন মানুষের পাশে। বামপন্থীরা যখন দাবি করেছেন, আয়কর না দেওয়া প্রতিটি পরিবারকে মাসে সাড়ে সাত হাজার টাকা অর্থ সাহায্যের কথা, প্রতিটি পরিবারকে মাসে দশ কেজি করে খাদ্যশস্য দেওয়ার কথা মোদী সরকার একটি দাবিও না মেনে মানুষকে থালা বাজানোর আর হাততালি দেওয়ার নিদান দিয়েছেন।

সিপিএমের দাবি, মোদী বাংলার কৃষকদের প্রতি সহানুভূতির কথা বলেছেন অথচ ৭৬ দিন ধরে দিল্লি সীমান্তে পুলিশি বর্বরতা, লাঠি, জলকামানের মুখে দাঁড়িয়েও কৃষকরা বসে আছেন কৃষি আইন বাতিলের দাবিতে। গোটা দেশের কৃষকদের সঙ্গে নির্মম ব্যবহার করছে মোদী সরকার, মোদীর মুখে কৃষি ও কৃষকের কথা শোভা পায় না, দেশের কৃষকদের জন্য কোন দরদ যদি ওঁর থাকতো উনি দিল্লির কৃষকদের সঙ্গে আলোচনায় বসতেন।

কেন বিজেপির কাছে বাম ভোট ব্যঙ্ক জরুরি। কারণ লোক সভা নির্বাচনের পর থেকেই ভোট বিশেষজ্ঞরা বলেছেন বামফ্রন্টের 20 খেকে 21 শতাংশ ভোট পকেটস্থ করেছে বিজেপি।  বাম-কংগ্রেস জোট কিংবা আসন সমঝোতা হবে কিনা তা এখনও স্পষ্ট হয়নি। কিন্তু, বাম-কংগ্রেসের ঐক্যবদ্ধ লড়াই আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূল কিংবা বিজেপির পথে পথে কাঁটা হতে পারে। বাম কংগ্রেসের মিলিত শক্তি হতে পারে ‘কিং-মেকার’। তৃণমূল কংগ্রেস এবং ভারতীয় জনতা পার্টি -এর জন্য আসন্ন পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচনে বাম এবং কংগ্রেসের ভোট ভাগের পরিবর্তন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে পারে। শেষ কিছু নির্বাচনে  জেলাগুলিতে উল্লেখযোগ্যভাবে এই দুই দল দুর্বল হয়ে পড়েছে। শহরেও একই অবস্থা। কিন্তু, পশ্চিমবঙ্গে আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে এই দুই দলের ভূমিকা পর্যবেক্ষণে রেখেছে বিশ্লেষকরা।

কংগ্রেস এবং বামফ্রন্টের আসন সমঝোতা হয়েছিল সিপিআই (এম) এর নেতৃত্বে। ২০১৬ সালের বিধানসভা ভোটের পর সুখকর চিত্র ছিল না। ২৯৪ টি আসনের মধ্যে ২১১ টি আসন নিয়ে তৃণমূল ক্ষমতা বজায় রাখে। কেউ বাধা দিতে পারেনি। যেহেতু কংগ্রেস জোট থেকে বেশি উপকৃত হয়েছে এবং বামদের ৩২টি আসনের পরিপ্রেক্ষিতে তারা ৪৪ টি আসন লাভ করেছে। এই জোটটি টেকেনি। মতবিরোধ প্রকাশ পেতে থাকে।

২০১৯ সালে শেষ লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি ১৮টি আসন জিতেছিল। ৪০.৬৪ শতাংশ ভোট তারা নিশ্চিত করেছে। যা ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের থেকে ২২.৭৬ শতাংশ বেশি। এই ব্যাপক ভোট বৃদ্ধি ইঙ্গিত করে কোনও কারণে বিপুল সংখ্যক মানুষ বিজেপির দিকে ঝুঁকেছে। তা যে ধর্মীয় মেরুকরণ, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। লোকসভা নির্বাচনের পরিপ্রেক্ষিতে যদি বিধানসভায় বিজেপি, তৃণমূল, কংগ্রেস এবং বামদলগুলি ফলাফল বিচার করতে হয় তবে দেখা যাবে বিজেপি প্রায় ১২২টি আসনে এগিয়ে রয়েছে। ৪৩.৬৯ শতাংশ ভোট নিয়ে তৃণমূল কংগ্রেস ২২টি আসনে জিতেছিল। লোকসভার ফলাফল বিচার করলে ১৬৩টি আসলে তৃণমূলের এগিয়ে থাকার কথা। আপাতদৃষ্টিতে লোকসভার নিরিখে বিচার করলে বোঝা যায় তৃণমূল অন্তত ৪১টি আসনে এগিয়ে রয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *