বাঙালিকে খুশ করতে বাংলা উচ্চারণে শান নরেন্দ্র মোদীর!

বাঙালিকে খুশ করতে বাংলা উচ্চারণে শান নরেন্দ্র মোদীর!

8bd9d6e39597bd4d2f971046eb297119

হলদিয়া: এবার আর ট্যাঁরাব্যাকা নয়। উচ্চারণ একেবারে স্পষ্ট। রবিবার হলদিয়ার কর্মীসভায় নরেন্দ্র মোদির বাংলা শুনে একবাক্যে তারিফ করছেন সকলেই। নাঃ, উন্নতি হচ্ছে। হতেই হবে। ‘নীলবাড়ি’ দখল করতে হলে এইটুকু খাটুনি তো খাটতেই হবে‌। নাহলে বাঙালি সহ্য করবে কেন?

অতীতে তার বাংলা উচ্চারণ নিয়ে জলঘোলা হয়েছে বিস্তর। বাংলা ভাষায় পশ্চিমী টান, ভুল উচ্চারণ, অস্পষ্টতা নিয়ে হাসাহাসিও হয়েছে। কিন্তু নরেন্দ্র মোদি থেমে থাকেননি। হাজার বিফলতার পরও ফের চেষ্টা করেছেন। আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের আগে যতবার পশ্চিমবঙ্গে এসেছেন কিংবা অনলাইনে এখানকার কোনও অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছেন ততবারই বাঙালি মনকে খুশ করতে বক্তৃতায় বাংলার টান রেখেছেন। কখনও বাংলা ভাষায় দুটো লাইন বলার চেষ্টা করেছেন, কখনও বাংলার বীর মনিষীদের জয়গান করেছেন। তার বক্তব্যে বারবার উঠে এসেছে রবীন্দ্রনাথের গান, স্বামী বিবেকানন্দের বাণী, নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর দেশের জন্য অবদানের কাহিনী-সহ আরও অনেক কিছু। তার বক্তব্যে উঠেছে শ্রী শ্রী রামকৃষ্ণ, চৈতন্যদেবের নামও। ভোটের আগে বাঙালি আবেগে সুরসুরি দেওয়ার মতলব আর কি।

অবশ্য প্রথম দিকে মোদির করা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের উদ্ধৃতি নিয়ে বিতর্ক কম হয়নি। তার ‘ওরে গ্রহবাসী’, ‘চলায় চলায়’-এ বাঙালি ভুল ধরেছে অনেক। কিন্তু তাও দিনের পর দিন তার চেষ্টা তার কাজে ফুটে উঠেছে। হলদিয়ায় নরেন্দ্র মোদি তার বক্তব্যের শুরুই করলেন প্রায় গোটা ছয়েক লাইন বাংলা দিয়ে। তিনি এদিন বললেন, “আমার প্রিয় মা-বোন-ভাই ও বন্ধুরা। মেদিনীপুরের এই পবিত্র মাটিতে আসতে পেরে আমি নিজেকে ধন্য মনে করছি। শহীদ ক্ষুদিরাম ও মাতঙ্গিনীর রক্তে রক্তিম হয়েছে এই মাটি। এই মাটিতে তৈরি হয়েছে তাম্রলিপ্ত সরকার। এই মাটির বীর সন্তান বিদ্যাসাগর মহাশয় বাঙালিকে ‘বর্ণপরিচয়’ দিয়েছেন। ভারত-সহ গোটা দুনিয়াকে দিশা দেখানো বীর মনীষী, সাধকদের ভূমি বাংলাকে নতমস্তকে প্রণাম জানাই।”

স্পষ্ট বাংলা উচ্চারণে তিনি আরও বলেন, “এই বছর ভারত ৭৫তম স্বাধীনতা দিবসে পদার্পণ করল, এরকম সময়ে বাংলার মত পবিত্র ভূমিতে আসা ভাগ্যের ব্যাপার। এটা একটা নতুন অনুপ্রেরণা দেয়।” তবে মোদির এদিনের বাংলার উচ্চারণ ছিল স্পষ্ট, ভুল ছিল অনেক কম। এতে বেশ বোঝা যাচ্ছে, তিনি বাংলা ভাষাটা শেখার চেষ্টা করছেন। বাঙালি আবেগ ধরতে যে তার জুড়ি মেলা ভার, তা তিনি বেশ বুঝিয়ে দিচ্ছেন। তবে শুধু ভাষণ নয়। কাজেও তারা বাঙালি মন ছুঁতে চান। বিজেপির ‘সেকেন্ড ইন কমান্ড’ অমিত শাহের বাংলা সফর জুড়েই থাকে বাঙালি সংস্কৃতির ছোঁয়া। কখনও তিনি যান বিশ্বভারতীতে, কখনও যান উত্তর কলকাতার সিমলায় বিবেকানন্দের বাড়িতে, কখনও শান্তিনিকেতনে বাউল বাড়িতে বসে মাটির গান শুনতে শুনতে ভোজ সারেন। গতবার বাংলা সফরে এসে অনেকটা সময় নিয়ে বীর সন্তান শহীদ ক্ষুদিরামের বাড়ি ঘুরে দেখেছেন। তাছাড়াও ‘রবীন্দ্রনাথ’ ‘বিবেকানন্দ’ ও ‘নেতাজি’ নিয়ে বাঙালির ভাবাবেগে সুরসুরি তো আছেই।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *